বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বলেছেন, বর্তমান বৈশ্বিক বাস্তবতায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতিধারা স্থিতিশীল রাখতে সকলকে জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী ও সচেতন হবার বিকল্প নেই। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে জ্বালানির মিতব্যয়ী ব্যবহারের মাধ্যমে সকল স্তরের জনগণকে ভূমিকা রাখতে হবে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ব্যবহারে সুনাগরিক হিসেবে সকলকে মিতব্যয়ী হবার আহবান জানান সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ কর্তৃক জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-২০২২ উপলক্ষে অয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীর বিক্রম প্রধান অতিথি ও বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জনাব নসরুল হামিদ এমপি বিশেষ অতিথি হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন।
‘জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস ২০২২’ উপলক্ষে ‘বহুমুখী জ্বালানি, সমৃদ্ধ আগামী’ -প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আয়োজিত অনুষ্ঠানমালার সফলতা কামনা করে সভাপতি ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বলেন, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক ১৯৭৫ সালে ৫টি গ্যাসক্ষেত্র ব্রিটিশ তেল কোম্পানি শেল অয়েলের নিকট হতে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় কিনে নেয়ার দূরদর্শী সিদ্ধান্তের ফলে দেশজ জ্বালানি নির্ভর অর্থনীতির সূচনা হয়। রাষ্ট্রীয় মালিকানায় নেয়ার পর থেকে তুলনামূলক সাশ্রয়ী জ্বালানির উৎপাদক হিসেবে এ গ্যাসক্ষেত্রগুলো অদ্যবধি দেশের অর্থনৈতিক বিকাশে এবং জ্বালানি নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রেখে চলেছে। জাতির পিতার অবদানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ প্রতি বছর ৯ আগস্ট জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস উদযাপন করা হয়।
তিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার গত এক যুগে অব্যাহতভাবে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, উচ্চ প্রবৃদ্ধি এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সকল ক্ষেত্রে নবদিগন্তের সূচনা করে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধন করতে সমর্থ হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হয়েছে। এক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান জ্বালানির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ অন্যতম প্রধান নিয়ামক হিসেবে কাজ করছে। যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দেশজ গ্যাস উৎপাদন ২০০৯ সালের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র অনুসন্ধান কাজ এবং বাপেক্সকে শক্তিশালীকরণের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। জ্বালানি তেলের মজুদ ক্ষমতা বৃদ্ধি, তেল পরিবহনের জন্য পাইপলাইন স্থাপন, ক্রুড অয়েল পরিশোধন ক্ষমতা বৃদ্ধি- এসবই জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের প্রচেষ্টার অন্তর্ভুক্ত।
ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি বলেন, প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ বৃদ্ধির জন্য স্থলভাগের পাশাপাশি দেশের বিশাল সমুদ্রসীমায় অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার এবং উৎপাদন, সঞ্চালন, বিতরণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার প্রচেষ্টা চলমান। প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এক্ষেত্রে, জনসাধারণকে উৎসাহিত করা জরুরি। অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে জ্বালানি সংক্রান্ত মৌলিক গবেষণা এবং বায়োবিক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ মাহবুব হোসেনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মোঃ হাবিবুর রহমান সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীনস্হ সংস্থাসমূহের প্রধানগণ অংশগ্রহণ করেন।
Leave a Reply