চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে আলোচিত মুখ চকরিয়ার রায়হান।
দুই হাত নেই। তবে আছে অদম্য ইচ্ছাশক্তি, অগাধ সাহস আর স্বপ্ন ছোঁয়ার দুর্দান্ত প্রত্যয়। সেই শক্তিকে সঙ্গী করেই চকরিয়ার রায়হান জয় করেছেন জীবনযুদ্ধের এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। মুখ দিয়ে লিখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মর্যাদাপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রথম শ্রেণিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করে নজির স্থাপন করেছেন এই তরুণ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে রায়হান যখন গাউন ও টুপি পরে অন্যদের সঙ্গে সমাবর্তন মঞ্চে দাঁড়ান, তখন তা শুধুই এক শিক্ষাগত অর্জনের মুহূর্ত নয়; বরং তা ছিল এক সাহসী জীবনের সংগ্রাম, প্রেরণা ও সাফল্যের মাইলফলক।
রায়হানের ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প শুরু হয় শৈশবেই। শারীরিক প্রতিবন্ধকতা তাকে কখনো দমিয়ে রাখতে পারেনি। হাত না থাকলেও থেমে যাননি তিনি। মুখ দিয়ে লেখা শুরু করেন, আর সেখান থেকেই জন্ম নেয় এক অনন্য অধ্যায়ের। স্কুল-কলেজ পার করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত যাত্রা ছিল কঠিন, কিন্তু অসম্ভব ছিল না রায়হানের জন্য। তিনি প্রমাণ করে দিয়েছেন, শারীরিক সীমাবদ্ধতা নয়, মানুষের মনোবলই সবচেয়ে বড় শক্তি।
বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে মুখ দিয়ে লেখার মাধ্যমে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করার ঘটনাটি অনেকের কাছেই বিস্ময়ের, আবার কারো কাছে গভীর অনুপ্রেরণার। শিক্ষক, সহপাঠী, এমনকি সমাবর্তনে উপস্থিত হাজারো অতিথির চোখে রায়হান ছিলেন এক জীবন্ত কিংবদন্তি।
এই অর্জনের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রায়হানের প্রশংসায় ভাসছে দেশজুড়ে। অনেকেই তাকে “প্রেরণার প্রতীক” হিসেবে অভিহিত করছেন।
রায়হানের এই সাফল্য শুধুই ব্যক্তিগত নয়, এটি সমাজের প্রতি একটি বার্তা—প্রতিবন্ধকতা যত বড়ই হোক না কেন, ইচ্ছা থাকলে পথ খুঁজে নেওয়া সম্ভব।
রায়হানের জন্য রইল অবিরাম শুভকামনা। তার জীবন হোক আরও সাফল্যগাথা, আরও উজ্জ্বল প্রেরণার দীপ্ত প্রতিচ্ছবি।
Leave a Reply