এম,আনিসুর রহমান
একদিন পরেই পবিত্র আশুরা। এদিনে ঘরে ঘরে ভালো খাবার খাওয়ার রেওয়াজ আছে। এ কারণে ওইদিনের আগে মুরগির চাহিদা বাড়ে। আর সেটিকেই সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন খামারি আর ব্যবসায়ীরা। এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাজারে সবচেয়ে চাহিদা থাকা ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতিকেজি বেড়েছে ২০-২৫ টাকা।
নগরীর বহদ্দারহাট ও কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজার ঘুরে এ চিত্র পাওয়া গেছে। সেখানে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে যেখানে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি করা হয়েছে ১৩৫-১৪০ টাকা, সেখানে এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা। আগামী কয়েকদিন মুরগির দাম আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়লেও অবশ্য অন্যান্য জাতের মুরগির দাম প্রায় অপরিবর্তিত আছে। দেশি ৬০০, সোনালী ও লেয়ার মুরগি ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর হাঁস বিক্রি হচ্ছে কেজি ৬০০ টাকা দামে।
জানতে চাইলে কর্ণফুলী কমপ্লেক্স বাজারের ইফাজ-ইফরান পোল্ট্রি ফার্মের মালিক মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, খামার থেকে আমাদের বেশি দামে মুরগি কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজিতে ২০-২৫ টাকা বেড়ে গেছে।
মুরগির দাম বাড়ার কারণ জানতে চাইলে একই বাজারের বাচ্চু পোল্ট্রির মালিক বাচ্চু মিয়া বলেন, সামনে পবিত্র আশুরা। এ কারণে চাহিদা বাড়ায় ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে। আগামী কয়েকদিনে আরও বাড়তে পারে। তবে ডিমের দাম আগের মতোই আছে; প্রতি ডজন ১২০ টাকা। তবে কোন কারণ ছাড়াই মুরগির দাম বাড়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্রেতারা। গতকাল দুপুরে বহদ্দারহাট বাজারে মুরগি কিনতে এসেছিলেন হালিমা বেগম। মুরগি কিনতে গিয়ে দাম শুনে থমকে দাঁড়ান এ গৃহবধূ। হালিমা বলতে থাকেন, পৃথিবীর সবখানে বিক্রি বাড়লে দাম কমে, আর আমাদের দেশে উল্টো। আমাদের ব্যবসায়ীরা রোজায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়ান, ঈদে বাড়ান কাপড়ের দাম, কোরবানে বাড়ান গরুর দাম। এখন আশুরার কারণে মুরগির দামও বাড়িয়ে দিয়েছেন। এতকিছু পরিবর্তন হয় ব্যবসায়ীদের মন বোধহয় একই রয়ে যাবে। মুরগির দামের পাশাপাশি বাজারে আদা ও টমেটোর দাম কিছুটা বেড়েছে। গত সপ্তাহ থেকে আদা ২০ টাকা বেড়ে ১৬০-১৮০ টাকা এবং টমেটো ৫০ টাকা বেড়ে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেঁয়াজ ৫৫-৬০, রসুন ১৪০-১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েকটি সবজির দাম কিছুটা কমেছে, বাকিগুলোর দাম অপরিবর্তিত আছে। আলু ২৫, কাঁকরোল ৮০, বরবটি ৫০-৬০, ঢেড়স ৫০-৬০, মরিচ ৬০-৭০, বেগুন ৬০-৭০, পটল ৪০-৫০, মরিচ ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মাছের দামও অপরিবর্তিত আছে। চিংড়ি প্রকারভেদে ৭০০-১২০০ টাকা, জীবন্ত রুই-কাতল ৪০০-৪৮০, তেলাপিয়া ২০০-২২০, ইলিশ আকারভেদে ১৬৫০-২৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে, এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি চালের দাম। চালের বাজার দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনার দাবি জানিয়েছেন ভোক্তাদের স্বার্থ রক্ষাকারী সংগঠন ক্যাবের কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এসএম নাজের হোসাইন। তিনি বলেন, চালের কোন সংকট নেই। পর্যাপ্ত মজুত আছে। এরপরও দাম বাড়ছে। এটা সিন্ডিকেটের কারসাজি। সরকার কার্যকর তদারকি কার্যক্রম না চালালে দাম কমবে না।