মাঈনুদ্দীন মালেকি
আরব আমিরাত থেকে
ঈদে মিলাদুন্নবী কি?
ঈদে মিলাদুন্নবী সা: হল ইসলামী উৎসব, যা ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মবার্ষিকী পালন উপলক্ষে উদযাপিত হয়। "মিলাদুন্নবী" শব্দটি আরবি "মাওলিদ" থেকে এসেছে, যার অর্থ জন্ম। সাধারণত আরবি হিজরি ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে এটি উদযাপন করা হয়।
ঈদে মিলাদুন্নবীর দিন মুসলিমরা নবীর জীবনের শিক্ষা, আদর্শ ও দিকনির্দেশনা স্মরণ করে থাকেন। বিভিন্ন দেশে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল, দরিদ্রদের মধ্যে খাবার বিতরণ, এবং কুরআন পাঠের আয়োজন করা হয়।
ঈদে মিলাদুন্নবী, যা ইসলাম ধর্মের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকী হিসেবে পালিত হয়, মুসলিমদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। এটি হিজরি ক্যালেন্ডারের ১২ রবিউল আউয়াল তারিখে পালন করা হয়, যা ইসলামের তৃতীয় মাস। এই দিনটি বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে বিশেষভাবে উদযাপিত হয়।
ঈদে মিলাদুন্নবীর ঐতিহাসিক পটভূমি:
ঈদে মিলাদুন্নবীর মূল ইতিহাস নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জন্মের সাথে সম্পর্কিত। তিনি ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মের মাধ্যমে বিশ্বে ইসলামের আলো ছড়িয়ে পড়ে, এবং তিনি আল্লাহর সর্বশেষ রাসুল হিসেবে মানবজাতির জন্য পবিত্র কুরআনের নির্দেশনা ও শিক্ষা নিয়ে এসেছিলেন। ১২ রবিউল আউয়াল দিনেই তিনি ইন্তেকালও করেন।
ঈদে মিলাদুন্নবী সা: বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে উদযাপিত হয়। উদযাপন প্রক্রিয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ঐতিহ্যগত ও ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান দ্বারা নির্ধারিত:
মিলাদ মাহফিল: অনেক মুসলিম দেশে ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে বিশেষ মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়, যেখানে কুরআন তিলাওয়াত, নবী (সা.)-এর জীবন কাহিনী ও তাঁর শিক্ষার আলোচনা করা হয়।
প্রার্থনা ও দরুদ পাঠ: এই দিনটিতে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রকাশের জন্য দরুদ পাঠ করা হয় এবং তাঁর সুন্নত অনুসরণের উপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
গরীব ও অসহায়দের সাহায্য: ঈদে মিলাদুন্নবী উপলক্ষে অনেক মানুষ গরীব ও অসহায়দের মধ্যে খাবার, পোশাক এবং প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেন।
আলোচনা সভা: নবী (সা.)-এর জীবনের বিভিন্ন দিক, বিশেষ করে তাঁর চারিত্রিক গুণাবলী, দয়া, ন্যায়পরায়ণতা ও শান্তির বার্তা নিয়ে আলোচনা করা হয়। নবীর শিক্ষা অনুসরণ করে কীভাবে মুসলিমরা তাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন গঠন করতে পারে, সে বিষয়ে আলোকপাত করা হয়।
সজ্জা ও আলোকসজ্জা: কিছু দেশে মসজিদ, বাড়ি এবং রাস্তা আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়, যাতে ঈদে মিলাদুন্নবীর আনন্দঘন পরিবেশ প্রকাশ পায়। বিভিন্ন স্থানেও বিশেষ শোভাযাত্রা বের করা হয়।
ধর্মীয় ও সামাজিক তাৎপর্য:
নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনের উপর ভিত্তি করে মুসলিমরা তাঁর শিক্ষা ও আদর্শকে অনুসরণ করতে উৎসাহিত হয়। তাঁর প্রবর্তিত ইসলামিক নীতি ও মূল্যবোধসমূহ আজও মুসলিমদের জীবন পরিচালনার মূল ভিত্তি। তাই ঈদে মিলাদুন্নবী কেবল একটি উদযাপন নয়, বরং নবীর শিক্ষা অনুসরণ করে নিজেদের জীবনকে আলোকিত করার একটি সুযোগ।