ঈদগাও প্রতিনিধিঃ
কক্সবাজার সৈকতে জোয়ারের পানি স্বাভাবিকের চেয়ে ৪ ফুট বেশি। সতর্ক অবস্থানে ট্যুরিস্ট পুলিশ, লাইফগার্ড ও বিচকর্মীরা।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট গভীর নিম্নচাপের প্রভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। এর প্রভাবে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে আছড়ে পড়ছে বিশাল বিশাল ঢেউ, যা স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ থেকে ৪ ফুট পর্যন্ত উঁচু। বৈরী আবহাওয়ার কারণে পর্যটকদের সাগরে গোসলে নামতে নিষেধ করা হয়েছে।
শুক্রবার (২৫ জুলাই) দিনভর সৈকতের লাবণী, সুগন্ধা ও শৈবাল পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, জলোচ্ছ্বাসে সৈকতের প্রতিরক্ষা জিওব্যাগগুলোও টিকতে পারছে না। প্রবল ঢেউয়ের তোড়ে তা ভেঙে গিয়ে সরাসরি আঘাত হানছে ঝাউবনের গায়ে।
সাগরের এমন উত্তাল রূপে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন পর্যটকরা। তারা সাগরে না নেমে দূর থেকে এর রূপ উপভোগ করছেন, ছবি তুলছেন ও ভিডিও করছেন। নিরাপত্তার স্বার্থে সৈকতজুড়ে থাকা শত শত কিটকট ও জেটস্কি সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বালুচর থেকে।
সি সেইফ লাইফগার্ডের সিনিয়র কর্মী মুহাম্মদ ওসমান জানান, “জোয়ারের সময় পানির উচ্চতা ৪ থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত উঠছে। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় সাগরে নামতে পর্যটকদের নিষেধ করা হচ্ছে। ট্যুরিস্ট পুলিশ, লাইফগার্ড ও বিচকর্মীরা মাইকিং করে পর্যটকদের সতর্ক করছেন।”
কিটকট সেবাদানকারী নুর কাশেম বলেন, “এমন বৈরী আবহাওয়ায় সমুদ্রে নামা অত্যন্ত বিপজ্জনক। কিটকট চালানো দূরের কথা, সৈকতের ধারে দাঁড়াতেও ভয় পাচ্ছি। আমরা ব্যবসা বন্ধ করে নিরাপদে বসে আছি।”
এদিকে, আবহাওয়া অধিদপ্তরের কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান জানান, উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সৃষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বর্তমানে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উপকূল ও চরাঞ্চলে ১ থেকে ৩ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস এবং ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে, যা পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের ঝুঁকি তৈরি করছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম জানান, “বৈরী আবহাওয়ার কারণে কক্সবাজারসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সৈকতের আশপাশের এলাকায় মাইকিং করে সাগরে নামতে নিষেধ করা হচ্ছে।”