তোষাদ রায়হান-
চট্টগ্রাম- বাংলাদেশের বাণিজ্যিক রাজধানী।শিল্প,সংস্কৃতি, সাহিত্য,ব্যাবসার দিক থেকে বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা চট্টগ্রাম। কিন্তু এই চট্টগ্রামের জনসাধারণ এর উপর একটা অভিযোগ এই এলাকায় যৌতুক কে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং কেউ কেউ আভিজ্যাতের প্রতিক হিসাবে দেখে যৌতুক দেওয়া নেওয়া কে।দিন যত আধুনিক হচ্ছে যৌতুকের ধরণ ও যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিক হচ্ছে।এই জেলায় সামাজিক রীতিনীতির নাম দিয়ে বিভিন্ন সময়,বিভিন্ন ভাবে যৌতুক দেওয়া নেওয়া চলছেই।ধনীদের সাথে তাল মিলিয়ে সামাজিক রীতিনীতি মানতে গিয়ে পারিবারিক বির্পযয় নেমে আসছে মধ্যবিত্ত পরিবার গুলোতে।যেমন আমের দিনে আম,জামের দিনে জাম,ঈদের সময় জামা,কুরবানে গরু,কাঠাঁল আনারস,পিঠা ইত্যাদি দেওয়া নেওয়া ঐতিহ্যে রুপ নিয়েছে বাংলাদেশের বিখ্যাত এই চট্টগ্রাম জেলায়।আবার কোন পরিবার সামর্থ্যের কারণে বা সচেতনতার কারণে যৌতুক সামগ্রী না দিলে- বরের প্রতিবেশীরা চায়ের আড্ডাতে এইসব নিয়ে ঝড় তোলে নিয়মিত-অমুকের শুশুরবাড়ির লোকে এই জিনিস দিয়েছে,ওই জিনিস দিয়েছে,তমুকের শুশুর বাড়ি কিছু দেয়নাই,এই আলোচনা চলে নিয়মিত।গ্রামে তো এই নিয়ে প্রতিযোগিতা চলেই।এইসব এর কারণে যৌতুক দিতে না পারা পরিবার গুলোতে চলে আসে বিপর্যয়, তাদের কন্যার উপর মানসিক শারিরীক চা প্রয়োগ করতে থাকে শুশুর পক্ষের লোকজন। চাপ সইতে না পেরে কেউ কেউ আত্নহত্যার পথ বেছে নেয়,আবার কেউ কেউ প্রতিবাদ করলে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়,এতেও অনেকের মৃত্যু হয়।গত কয়েক মাস আগে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার অন্তর্গত হাঁইদগাও গ্রামের মেয়ে,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এর ছাত্রী শাহনাজ কামরুন নাহার মহুয়া মৃত্যু হয়।তাদের পরিবারের অভিযোগ যৌতুকের কারণে শারিরীক নির্যাতন করায় মহুয়ার মৃত্যু হয়।এই মৃত্যু দেশে বিদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে,পত্র পত্রিকায়,টিভি চ্যানেলে এ খবর ব্যাপক ভাবে প্রচার হলেও অভিযুক্ত আসামী দের গ্রেপ্তার করতে পারেনি প্রশাসন। মহুয়ার পরিবার এতে প্রশাসনের উপর আস্তা হারিয়েছেন।প্রশাসনের ভূমিকা দুর্বল হওয়ার কারণে এবং আইনের ফাঁকফোকর দুর্বল হওয়ায় অভিযুক্ত আসামী গুলো রাস্তায় হাঁটছে নিয়মিত।বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র,পেশাজীবি কয়েক লোকের সাথে এই বিষয়ে আলোচনা করলে তারা জানায়- অতিরিক্ত লোক দেখানো কাবিন যৌতুক বন্ধ না হওয়ার অন্যতম কারণ।চট্টগ্রামে বিয়েতে ১৫লক্ষ ২০ লক্ষ টাকা মোহরানা ধার্য্য করা হয়।অপর দিকে বর পক্ষ এক হাজার দুই হাজার বরযাত্রী খাবারের আয়োজনের দাবি জানাই। কোন পক্ষই কেউ কাউকে ছাড় না দেওয়ার কারণে যৌতুক শুরু থেকে আগ্রাসী রুপ ধারণ করে।যৌতুকের এই অভিশাপ থেকে মুক্ত হতে চায় চট্টগ্রামের জনসাধারণ।
ধর্মীয় রীতিনীতির চর্চা,আইনের প্রয়োগ,মিডিয়ায় যৌতুকের কুফল প্রচার, অতিরিক্ত কাবিনের কুফল, স্কুল কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে এই যৌতুক প্রথা রোধ করা আবশ্যক হয়ে দাঁড়িয়েছে।