মোহাম্মদ জাবেদ, মন্ট্রিয়ল, কানাডা
টরন্টোর তরুণ মাহিন শাহরিয়ার (২৮) ২০১৯ সাল থেকে কানাডায় বসবাস করছিলেন এবং শরনার্থী আবেদনকারী ছিলেন। তিনি উবার চালিয়ে তাঁর মা ও ছোট বোনকে সহায়তা করতেন। তাঁর মা একজন স্বীকৃত শরনার্থী, আর বোন কানাডায় ফুল-টাইম শিক্ষার্থী।
২০২৫ সালের ১২ মে মাহিন বলেন, মানসিকভাবে ভেঙে পড়া অবস্থায় এক “বন্ধু” তাঁকে মন্ট্রিয়লের কাছাকাছি কয়েকদিন থাকার প্রস্তাব দেন।
সেই বন্ধুর ফোন নির্দেশে মাহিন এমন একটি এলাকায় পৌঁছান যা কানাডা-মার্কিন সীমান্তের একেবারে কাছে।
জিপিএস নির্দেশনা অনুসরণ করতে করতে তিনি হঠাৎ বুঝতে পারেন—তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছেন।
তিনি জানান, তাঁর ইচ্ছা ছিল না সীমান্ত পার হওয়ার, বরং ভুলবশত ঘটনাটি ঘটে।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের পর তিনি নিজে সীমান্তরক্ষীদের কাছে গিয়ে নিজের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করলে তাঁকে আটক করা হয়।
বর্তমানে তিনি Buffalo, New York-এর U.S. Immigration and Customs Enforcement (ICE) হেফাজতে রয়েছেন।
Canada Border Services Agency (CBSA) বলেছে, মাহিন “স্বেচ্ছায়” কানাডা ত্যাগ করেছেন, তাই তাকে ফিরিয়ে নেওয়ার বাধ্যবাধকতা নেই।
তাঁর আগের শরনার্থী আবেদনটিও প্রত্যাখ্যাত হয়েছিল এবং আদালতে করা আবেদন খারিজ হয়।
আইনজীবীর বক্তব্য:
মাহিনের আইনজীবী ওয়াশিম আহমেদ বলেছেন, Safe Third Country Agreement অনুযায়ী কানাডার উচিত তাকে ফিরিয়ে নেওয়া, কারণ তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ১৪ দিনের মধ্যেই আটক হয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ICE স্বীকার করেছে—মাহিনকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠালে তিনি নির্যাতনের ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
এই ঘটনায় মাহিনের মা ও বোন ভীষণ মানসিক চাপে রয়েছেন। তাঁর মা কয়েকবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, আর বোন পড়াশোনা ও সংসারের চাপ একসাথে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
মাহিন এখনো যুক্তরাষ্ট্রের ICE হেফাজতে আছেন।
তাঁর আইনজীবী কানাডায় pre-removal risk assessment আবেদন করেছেন, যাতে পুনর্বিবেচনার সুযোগ পাওয়া যায়।
এখনো স্পষ্ট নয়, যুক্তরাষ্ট্র তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাবে, নাকি কানাডা তাঁকে পুনরায় গ্রহণ করবে।
এই ঘটনাটি কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সীমান্তে আশ্রয়প্রার্থী আইন, মানবাধিকার ও মানসিক স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত জটিল বাস্তবতা তুলে ধরেছে।
Leave a Reply