আনোয়ার হোছাইন
নাইক্ষ্যংছড়ি (বান্দরবান) প্রতিনিধিঃ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমারের ভেতরে পুঁতে রাখা ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে এক বাংলাদেশি নারী গুরুতর আহত হয়েছেন।
সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল আনুমানিক ১০টা ৪৫ মিনিটে নাইক্ষ্যংছড়ির নিকুছড়ি সীমান্তের বিপরীত দিকে মিয়ানমারের ভেতরে আনুমানিক ৪০০ মিটার অগ্রসর হলে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আহত নারীর নাম লাকি সিং (২৪)। তিনি বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের গাছবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম সুমং, যিনি স্থানীয়ভাবে ‘গাছবুনিয়ার কারবারি’ নামে পরিচিত।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, লাকি সিং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রম করে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি (AA) নিয়ন্ত্রিত ‘Aung Zan’ ক্যাম্পের দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় বাঁশ কুরল কাটতে যান। এ সময় আগে থেকে পুঁতে রাখা একটি ল্যান্ডমাইনের বিস্ফোরণে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে সীমান্ত সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দারা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং এমএসএফ হাসপাতালে নিয়ে যান।
এ বিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়নের (১১ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস কে এম কফিল উদ্দিন কায়েস বলেন, “আমরা ইতোমধ্যে ঘটনাটি সম্পর্কে অবগত হয়েছি। আহত নারী মিয়ানমারের ভেতরে অনুপ্রবেশ করেছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। সীমান্ত এলাকায় আরাকান আর্মির অবস্থান এবং পুঁতে রাখা মাইন বরাবরের মতোই উদ্বেগজনক। আমরা ঘটনার বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছি এবং স্থানীয় জনগণকে সীমান্তবর্তী ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় না যাওয়ার জন্য সতর্ক করছি।”
এদিকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা বলছেন, সীমান্ত এলাকার পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অনেকে জীবিকার তাগিদে প্রায়শই মিয়ানমারের ভেতরে চলে যান। এ কারণে তাদের জীবন মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়ে।
উক্ত ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাসরুরুল হক বলেন, “আহতের পরিবার ও স্থানীয়দের কাছ থেকে প্রাথমিক তথ্য পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যে চলমান গৃহযুদ্ধের কারণে সীমান্ত এলাকায় অনিশ্চয়তা ও নিরাপত্তা ঝুঁকি অনেক বেড়েছে। সীমান্তবর্তী সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবিকা এখন অনেকটাই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।