আব্দুল সাত্তার টিটু, চট্টগ্রামঃ
পার্বত্য রাঙামাটির বাঘাইছড়ি এলাকায় গণধর্ষণ মামলার এজাহারনামীয় ২নং পলাতক আসামীকে আটক করেছে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম। এজাহার নামীয় ০৫ জন আসামীর মধ্যে ০২ জন বৌদ্ধ, ০১ জন হিন্দু ও ০২ জন মুসলিম সম্প্রদায়ের লোক ছিল। ০৫ জন আসামীই একে অপরের ঘনিষ্ঠ বন্ধু।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানাধীন রাজাপুর লেইন আন্দরকিল্লা এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়।
আটককৃত আসামী যিশু চৌধুরী(২৭), সে বাঘাইছড়ি থানার করেঙ্গাতলী বাজার এলাকার সমীর চৌধুরীর ছেলে।
র্যাব-৭, চট্টগ্রাম সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মোঃ নুরুল আবছার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন,পূর্ব পরিচয় ও পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আসামী বিপ্লব বড়ুয়া ভিকটিমের সাথে জরুরী আলাপ আছে বলে বাড়ির বাহিরে ডেকে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিম আর ঘরে ফিরে না আসায় ভিকটিমের মা আশে-পাশে খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন ১৬ জুলাই ২০২২ খ্রিঃ তারিখ ভোর বেলায় ভিকটিম বাড়িতে এসে জানায় আসামী বিপ্লব বড়ুয়া তাকে বাড়ির বাহিরে ডেকে নেওয়ার পর আসামী যিশু চৌধুরী সহ কতিপয় দুস্কৃতিকারী তার মুখ চেপে ধরে জোর পূর্বক বাঘাইছড়ি থানাধীন বাড়ুয়ার পাড়ায় একটি বসত ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে সকল আসামীগন সারারাত ব্যাপি ভিকটিমকে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর পূর্বক গণধর্ষণ করে।
উল্লেখিত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি থানায় ০৫ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন যার মামলা নং-০১ তারিখঃ-০৫ আগস্ট ২০২২ খ্রিঃ ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধনী/ ২০০৩)এর ৯(৩)/৩০ রুজু হয়।
পরবর্তীতে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় বাঘাইছড়ি থানার চাঞ্চল্যকর ২১ বছরের মেয়েকে গণধর্ষণ মামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে পাহাড়ী চাকমাদের সাথে ঐখানকার সংখ্যালঘু বড়ুয়া, হিন্দু ও মুসলিমদের দ্বন্ধ চরম আকার ধারণ করে এবং এক পর্যায়ে গোলাগুলির পর্যায়ে যায়। উক্ত ঘটনায় ইউপিডিএফ গ্রুপ ৫ অভিযুক্তকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করার চেষ্টাও করেছিল। সেনাবাহিনী এই সংঘাত এড়ানোর জন্য দুই পক্ষকে নিয়ে আলোচনাও করেছে। কিন্তু আসামীরা গ্রেফতার না হওয়ায় সমাধান হচ্ছিল না। বর্ণিত আসামীরা এলাকা ছেড়ে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করেছিল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী বর্ণিত মামলার এজাহারনামীয় ২নং পলাতক আসামী এবং তারা পরস্পর যোগসাজসে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে গণধর্ষণ করেছে বলে স্বীকার করে।
উল্লেখ্য, উক্ত গণধর্ষণ মামলার অন্যতম প্রধান আসামীকে গ্রেফতারের ফলে পাহাড়ী চাকমা এবং সংখ্যালঘুদের জনমনে র্যাবের ভাবমূর্তি উজ্জল হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর সংক্রান্তে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের নিমিত্তে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।