মোহাম্মদ আলবিন, চট্টগ্রাম
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দ্রুত গতি পেয়েছে বিএনপির প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া। দলটি চলতি অক্টোবর মাসের মধ্যেই প্রায় আড়াইশ (২৫০) আসনে একক প্রার্থী চূড়ান্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রতিটি আসনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম হাইকমান্ড থেকে জানিয়ে দেওয়া হবে-অর্থাৎ তাদের সবুজ সংকেত দেওয়া হবে এই সময়ের মধ্যেই।
দলীয় সূত্র জানায়, এবার প্রার্থী চূড়ান্ত করার ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য ও সমন্বয় বজায় রাখা–কে। তফসিল ঘোষণার পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থীদের নাম প্রকাশ করা হবে।
বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মতে, আগেভাগে প্রার্থী নির্ধারণ করা গেলে তৃণমূলের বিরোধ ও বিভাজন অনেকটাই কমে আসবে। এজন্যই একক প্রার্থীকে আগে থেকে মাঠে নামার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে।
তবে জানা গেছে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)–র শীর্ষ কয়েক নেতার নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি নিজস্ব প্রার্থী ঘোষণা করবে না। একইভাবে জোটভুক্ত অন্যান্য দলের শীর্ষ নেতাদের ক্ষেত্রেও একই নীতি অনুসরণ করা হবে।
মনোনয়নপ্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে সোমবার গুলশান কার্যালয়ে মাগুরা, চট্টগ্রাম ও সুনামগঞ্জের কয়েকটি আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলের হাইকমান্ড। এসব আসনের বেশিরভাগেই অভ্যন্তরীণ বিরোধ থাকায় সেগুলো মেটানোর উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘চমক বলতে ইয়াং জেনারেশন এবার আগের চেয়ে আরেকটু বেশি অগ্রাধিকার পাবে। কারণ, তারা অনেক বেশি অ্যাকটিভ। নারীরাও যথেষ্ট অগ্রাধিকার পাবে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এলাকায় সর্বোচ্চ গ্রহণযোগ্য এবং জনপ্রিয় প্রার্থীরাই বিএনপির মনোনয়ন পাবেন। একই আসনে অনেক প্রার্থী থাকতে পারেন। সেগুলো বিচার-বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি জনগণের কাছে কার অবস্থান ভালো। এলাকায় কে বেশি জনপ্রিয়, সেই খোঁজখবর নিচ্ছি। এজন্য তৃণমূল থেকে শুরু করে অনেকের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। সিনিয়র নেতারা যার যার দায়িত্ব পালন করছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে গুলশান কার্যালয়ে ডাকা অন্তত দশজন সম্ভাব্য প্রার্থী জানিয়েছেন, প্রায় প্রতিটি আসনে ৪ থেকে ৫ জন করে মনোনয়নপ্রত্যাশী আছেন। এর মধ্যে থেকে যাচাই-বাছাই করে ২ থেকে ৩ জন মনোনয়নপ্রত্যাশীকে ডাকা হয়। সভায় বিএনপির মহাসচিব দলীয় একক প্রার্থীকে বিজয়ী করে আনার জন্য মনোনয়নপ্রত্যাশীদের নির্দেশনা দেন।
অন্যদিকে প্রার্থী মনোনয়নে তরুণদের আগ্রাধিকার দেবে বিএনপি। প্রায় প্রতিটি আসনেই এবার তরুণ প্রার্থীরা মাঠে রয়েছেন। অনেক আসনে আছেন একাধিক।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএনপির দায়িত্বশীল এক নেতা বলেন, জেন-জি ও তারুণ্যের এবার ভোট বেশি। সে বিবেচনায় এবার তরুণ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কিছু কিছু আসনে স্থানীয়ভাবে অনেক জনপ্রিয় নেতা রয়েছেন। তরুণ নেতাদের প্রার্থী করা হলে ধানের শীষের বিজয় সুনিশ্চিত হবে। তবে প্রার্থী নির্ধারণে যদি ভুল সিদ্ধান্ত হয়, সেক্ষেত্রে ওইসব আসনে প্রার্থীর বিজয় নাও হতে পারে।