আলমগীর আলম, পটিয়া।
পটিয়া পৌরসভার কৃতি সন্তান একজন আলোকিত সমাজ হিথের্ষী মানুষ ছিলেন প্রয়াত মীর আবুল হোসেন মাস্টার।
পটিয়া তথা চট্টগ্রামের একজন দায়িত্বশীল পরউপকারী শিক্ষক হিসাবেও বেশ পরিচিত ছিলেন তিনি।
মানুষ গড়ার এই প্রচার বিমুক ব্যাক্তিটি চট্টগ্রাম জেলার বিপ্লবী জনপদ পটিয়া উপজেলার পটিয়া পৌরসদরের কাগজীপাড়া গ্রামে ১৯৪২ সালের ০ ৫ ই জানুয়ারী জন্মগ্রহণ করেন।
তাঁর পিতার নাম হাজী মীর কালা মিয়া ও মাতার নাম সুফিয়া খাতুন।
বাল্যকাল থেকেই লেখাপড়ার প্রতি ছিল তাঁর গভীর মনোনিবেশ ও অসাধারন আগ্রহ।
নিজের শিক্ষা জীবন শেষ করেই শিক্ষা বিস্তারে
পিছিয়ে পড়া গ্রামের মানুষদের সু শিক্ষায় মানুষ হিসেবে তৈরী করতে নানান উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি। তিনি মনে করেছিলেন শিক্ষার আলো সমাজে ছড়িয়ে দিতে পারলেই সমাজের এবং দেশের মানুষের সকল সমস্যার মুক্তি মিলবে।
তিনি তাঁর সেই মহান ব্রতকে পরিপূর্ণতা দিতেই কর্মজীবনে বেছে নিয়েছিলেন মহান শিক্ষকতা পেশা।
এ পেশাকে তিনি জীবিকা হিসেবে নয় বরং মানব সমাজের মুক্তির দিশারি হিসেবে নিয়েছিলেন।
তাঁরই হাত ধরে পটিয়া জনপদের হাজার হাজার শিক্ষার্থী আজ শিক্ষার আলোই আলোকিত হয়ে সমাজ তথা দেশের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন।
তাঁর প্রজ্ঞা,মেধা, কর্মদক্ষতা ও নীতি নৈতিকতায় বিমুগ্ধ হয়ে তৎকালীন শিক্ষক সমাজ তাঁকে তাদের নেতার আসনে বসিয়েছিলেন এবং একাধারে ২০ বছর পটিয়া উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
কর্ম জীবনে মীর আবুল হোসেন মাস্টার পটিয়া মোহছেনা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, শশাংকমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আল্লাই ওখারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, লড়িহরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উনাইনপুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বেশ সুনামের সহিত শিক্ষকতা করেন।
পাশাপাশি তিনি তৎকালীন পাস করা হোমিও চিকিৎসক, একজন ভাল দক্ষ ফুটবলার ও ছিলেন।
ফুটবলের উন্নয়নেও অনেক অবাদন রেখেছেন তিনি। গ্রামের হতদরিদ্র মানুষকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা সেবাও প্রদান করেন কিন্তু সেটাকেও তিনি পেশা হিসাবে গ্রহণ করেননি।
মরহুম মীর আবুল হোসেন মাষ্টারদের মত নীতি আর্দশবান মানবিক মানুষ বর্তমান সমাজে খুঁজে পাওয়া বিরল।
তাই তার স্মৃতি ধরে রাখতে এবং নতুন প্রজন্মকে আলোকিত মানুষ হিসেবে তৈরী করতে বর্তমানে তার পরিবারের সন্তানেরা সমাজে নানান কর্মকান্ড পরিচালনা ও খেলাধুলার আয়োজনের মাধ্যমে কাজ করে যাচ্ছেন।
এ আলোকিত মানুষটি
১৯৯২ সালের ১৬ই সেপ্টম্বর মৃত্যু বরন করেন রেখে যান স্ত্রী, সন্তানসহ অসংখ্য আপনজন।
বাস্তবিক জীবন পরিচালনায় যারা সামাজের জন্য দেশের মানুষের জন্য অবদান রেখে সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করেন তারা চির অমর।
"কীর্তিমানের মৃত্যু নেই"।
মীর আবুল হোসেন মাষ্টার আজ আমাদের মাঝে বেঁচে নেই।
কিন্তু সমাজে দেশের শিক্ষা ও নানা ক্ষেত্রে তাঁর অসামান্য অবদানের মাধ্যমে রেখে যাওয়া অনেক শিক্ষার্থী এবং কর্মকান্ডের সে সব স্মৃতি আমাদের মাঝে আজও বেঁচে আছে।
তাঁর স্মৃতির সম্মানে ২০২০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় "মীর আবুল হোসেন ফাউন্ডেশন" এই ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে প্রতি বছর অসহায় দু:স্থদের মাঝে আর্থিক সাহায্য প্রদান, ইফতার সামগ্রী বিতরণ, গরীব মেধাবীদের মাঝে শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ,মীর আবুল হোসেন মাষ্টার আইসিটি স্কলারশিপ বৃত্তি, অসহায় শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ এবং শিশু- কিশোরদের মাদক সন্ত্রাস থেকে রক্ষা করে ক্রীড়ার প্রতি আগ্রহী করতে বিভিন্ন খেলাধুলার আয়োজন করে যাচ্ছেন তারই সু যোগ্য সন্তান মীর আবুল হোসেন মাষ্টার ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা মীর সাইফুর রহমান ও প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী আলহাজ্ব মীর এরশাদুর রহমান।