বিশ্বজুড়ে শিশুদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ এবং তাদের অধিকার রক্ষায় ৬ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব শিশু দিবস। এটি একটি বিশেষ দিন, যখন শিশুর অধিকার, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য বিশ্বব্যাপী প্রচেষ্টা বৃদ্ধি পায়।
বিশ্ব শিশু দিবসের সূচনা হয়েছিল ১৯৫৪ সালে জাতিসংঘের আহ্বানে। যদিও ২০ নভেম্বর শিশু অধিকার সনদের স্মরণে বিশ্ব শিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়, বাংলাদেশসহ অনেক দেশ ৬ অক্টোবর এই দিবসটি পালন করে থাকে। এ দিন শিশুদের অংশগ্রহণে নানা আয়োজন হয়—র্যালি, আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও সচেতনতামূলক কার্যক্রম।
শিশুরা আমাদের ভবিষ্যৎ। কিন্তু আজও বিশ্বের অনেক শিশু শিক্ষা থেকে বঞ্চিত, অপুষ্টিতে ভুগছে, কিংবা শিশুশ্রম ও বাল্যবিবাহের শিকার। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এসব সমস্যা আরও জোরালো। শিশুদের প্রতি সহিংসতা ও অবহেলা রোধে আমাদের সকলের দায়িত্ব রয়েছে।জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে শিশুদের জন্য বেশ কিছু মৌলিক অধিকার নির্ধারণ করা হয়েছে, যেমন—শিক্ষার অধিকার: স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টির অধিকার,নিরাপত্তা ও সুরক্ষার অধিকার,মত প্রকাশের স্বাধীনতার অধিকার,শিল্প, খেলা ও বিনোদনের অধিকার। এগুলো বাস্তবায়ন ছাড়া শিশুদের পূর্ণ বিকাশ সম্ভব নয়। কিন্তু এতসব অধিকার থাকা সত্বেও আজ শিশুরা তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।“প্রতি বছর অনেক ঝাকজমকপূর্ণ ভাবে এই দিবস পালন করা হলেও বাস্তবতায় দেখা যায় এর ফল শূণ্যে। শুধু মাত্র দিবস পালনের উদ্দেশ্য সভা সেমিনার করলেই শিশুর অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে না। শিশুদের অধিকার বাস্তবায়ন করতে হলে প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও রাষ্ট্রের আন্তরিক বাস্তবমূখী উদ্যোগ। প্রতিবছর বিভিন্ন প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়। এই বছরের প্রতিপাদ্য "শিশুর কথা বলব আজ, শিশুর জন্য করব কাজ"। এর মাধ্যমে শিশুদের প্রতি বৈষম্য ও অন্যায় বন্ধ করে তাদের জন্য একটি নিরাপদ, শান্তিপূর্ণ সমাজ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। আমরা শুধুমাত্র মুখেই শিশুদের অধিকারের কথা বললেই হবে না ; শিশু নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে হবে,শিশুদের শিক্ষায় প্রবেশাধিকার বাড়াতে হবে,স্বাস্থ্যসেবা ও পুষ্টি নিশ্চিত করতে হবে,শিশুদের মতামত শ্রবণ ও সম্মান করতে হবে
শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই উন্নত ও শান্তিপূর্ণ সমাজের ভিত্তি। তাই শুধুমাত্র শিশু অধিকার আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রকৃতপক্ষে তাদের অধিকার নিশ্চিত করণে সকলে কাজ করি। তবেই ভবিষ্যৎ প্রজন্ম একটি নিরাপদ দেশ পাবে।