বিনোদন ডেস্কঃ
চট্টগ্রামের পাহাড়, নদী, সমুদ্র ও প্রকৃতির আবহে জন্ম ও বেড়ে ওঠা শেখ শওকত ইকবাল চৌধুরীর শৈশব থেকেই ছিল এক ভিন্ন রকম সাংস্কৃতিক আবেশ। পারিবারিক অনুপ্রেরণা ও পরিবেশ তাকে গড়ে তোলে এক সংস্কৃতিমনা সৃজনশীল ব্যক্তিত্বে।
দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে শওকত ইকবাল নিরলসভাবে তথ্য ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণ করে যাচ্ছেন। তার ক্যামেরা বন্দি করেছে দেশের বরেণ্য সংস্কৃতিজন, সাংবাদিক, শিল্পী-সাহিত্যিক থেকে শুরু করে রাজনীতিবিদ, সমাজকর্মী, উন্নয়ন কর্মসূচি ও পর্যটন সম্ভাবনার নানা অনুষঙ্গ।
তার নির্মিত প্রতিটি কাজেই ফুটে ওঠে নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গি ও গবেষণাভিত্তিক মনন। উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে আছে—
সাংবাদিক, লেখক ও দৈনিক আজাদী পত্রিকার কিংবদন্তি সম্পাদক মোহাম্মদ খালেদ-কে নিয়ে নির্মিত “অধ্যাপক মোঃ খালেদ—কথামালা” ও “বিবেকের বাতিঘর”। সাংবাদিক-সাহিত্যিক সিদ্দিক আহমেদ-কে নিয়ে তথ্যচিত্র, চট্টগ্রামের বরেণ্য দশজন সাংবাদিকের জীবনীভিত্তিক ধারাবাহিক প্রামাণ্যচিত্র “নেপথ্যে নিশিদিন”। সমাজসেবক ও নবজাতক বিশেষজ্ঞ ডা. শহীদুল্লাহ্ চৌধুরী-কে নিয়ে “নবজাতকের ত্রাতা”।
সংস্কৃতি ও ইতিহাসের প্রতি দায়বদ্ধতায় চট্টগ্রামের সুপরিচিত নাট্য ও সংস্কৃতিজন শওকত ইকবাল নিজেকে যুক্ত করেছেন কালের সাক্ষী নানা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বের জীবনকথায়। লোকসঙ্গীতের কিংবদন্তি শেফালী ঘোষ-এর জীবনী নিয়ে নির্মাণ করেছেন “শেফালী”। বিপ্লবী শহীদ প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার-কে নিয়ে তথ্যবহুল প্রামাণ্যচিত্র “বীরকন্যা প্রীতিলতা”।
ভাষা সৈনিক মাহবুব আলম-কে নিয়ে নির্মাণ করেছেন “শ্রদ্ধাঞ্জলি”।
সংস্কৃতি ও ইতিহাসের পাশাপাশি তিনি নির্মাণ করেছেন পরিবেশ ও প্রকৃতি, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, পর্যটন সম্ভাবনা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা বিষয়ক প্রায় ২০ থেকে ৩০টি তথ্যচিত্র। তার ক্যামেরায় ধরা পড়েছে প্রকৃতির সৌন্দর্য থেকে শুরু করে মানবিক সংগ্রাম, উন্নয়ন ও সমাজসেবার চিত্র।
বর্তমানে শেখ শওকত ইকবাল বাংলাদেশের বরেণ্য নাট্যজনদের নিয়ে সাক্ষাৎকারভিত্তিক প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। তার লক্ষ্য—নতুন প্রজন্মের সামনে নাট্যচর্চার ইতিহাস ও উত্তরাধিকারকে জীবন্ত করে তোলা।
তথ্য ও প্রামাণ্যচিত্র নির্মাণে শেখ শওকত ইকবাল চৌধুরী কেবল এক নির্মাতা নন, বরং তিনি সময়ের স্রষ্টা ও ইতিহাসের আলেখ্য রচয়িতা। তার প্রতিটি কাজ একেকটি দলিল হয়ে বাঁচিয়ে রাখছে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও সমাজের মূল্যবান দলিলপত্র।
তার আগামী দিনের কর্মযজ্ঞ হোক আরও সমৃদ্ধ, আরও পরিপূর্ণ—এ কামনা সকল সংস্কৃতিপ্রেমীর।