মোঃ শহিদুল ইসলাম
বিশেষ সংবাদদাতা, চট্টগ্রামঃ
অভিযোগে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপে সন্তুষ্ট সেবাপ্রত্যাশীরা, পুলিশের সেবামুখী চিত্রে নতুন আস্থা,চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) সদর দপ্তরের দামপাড়াস্থ সম্মেলন কক্ষে সোমবার বিকেল ৩টা থেকে ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয় পূর্বঘোষিত ‘ওপেন হাউজ ডে’। সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে সরাসরি সংলাপে মুখোমুখি হন সিএমপি পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ, বিপিএম।
এ সময় বিভিন্ন অভিযোগ, সমস্যা ও পরামর্শ মনোযোগ সহকারে শোনেন কমিশনার এবং অধিকাংশ অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। উপস্থিত সেবাপ্রত্যাশীরা কমিশনারের এই দ্রুত পদক্ষেপ ও মানবিক আচরণে আবেগাপ্লুত হয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন, “পুলিশ জনগণের সেবক—এটা কথার নয়, বাস্তব প্রমাণ দিতে আমরা কাজ করছি। যে কোনো অন্যায়, হয়রানি বা অনিয়ম আমরা বরদাস্ত করব না। জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনাই আমাদের প্রধান লক্ষ্য।”
কমিশনারের এই আন্তরিক মনোভাব, দৃঢ় বক্তব্য ও মানবিক পদক্ষেপ অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবার মাঝে নতুন উদ্দীপনা ছড়িয়ে দেয়। অনেকে জানান, ওপেন হাউজ ডে কার্যক্রমের মাধ্যমে পুলিশ ও জনগণের সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেয়েছে। নাগরিকরা এখন সরাসরি তাদের সমস্যা তুলে ধরতে পারছেন, যা অতীতে কল্পনাতীত ছিল।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন্স) ও অতিরিক্ত দায়িত্বে (অর্থ ও প্রশাসন) মোঃ হুমায়ুন কবির, উপ-পুলিশ কমিশনার (সদর) মুহাম্মদ ফয়সাল আহম্মেদ (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত), উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি-উত্তর) মোঃ হাবিবুর রহমান প্রাং (অতিরিক্ত ডিআইজি পদে পদোন্নতিপ্রাপ্ত)সহ সিএমপি’র অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
সেবাপ্রত্যাশীদের অনেকেই বলেন, “আমরা ভেবেছিলাম অভিযোগ দিতে এসেও হয়তো কেউ শুনবে না, কিন্তু কমিশনার নিজে সামনে বসে মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন—তাৎক্ষণিক নির্দেশও দিয়েছেন। এটা সত্যিই প্রশংসনীয়।”
সভায় অংশ নেওয়া একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক বলেন,“এমন উদ্যোগ নিয়মিত হলে নাগরিক সমস্যাগুলো সহজে সমাধান হবে, আর জনগণ পুলিশের প্রতি আরও আস্থা ফিরে পাবে।”অনুষ্ঠানের শেষ দিকে পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন,“চট্টগ্রাম মহানগরকে নিরাপদ, সুশৃঙ্খল ও অপরাধমুক্ত রাখতে আমাদের প্রয়াস অব্যাহত থাকবে। পুলিশ ও জনগণ একসঙ্গে কাজ করলেই ন্যায়, শান্তি ও আস্থার নগর গড়ে উঠবে।”
সিএমপি’র এই ‘ওপেন হাউজ ডে’ এখন আর আনুষ্ঠানিকতা নয়—এটি হয়ে উঠেছে জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণে পুলিশের জবাবদিহিমূলক এক মঞ্চ, যেখানে অভিযোগের সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে সমাধান। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের এই উদ্যোগ দেশের অন্যান্য মহানগর পুলিশের জন্যও হতে পারে অনুসরণীয় দৃষ্টান্ত।