শহিদুল ইসলাম, সিলেট।
আগামী প্রজন্মকে আধুনিক, জ্ঞাননির্ভর ও সুসংগঠিত সমাজে পরিণত করে একটি উন্নত ও দায়িত্বশীল জাতি গঠনের লক্ষ্যে যুগোপযোগী দিকনির্দেশনা ও বাস্তবসম্মত সুপারিশমালা উপস্থাপন করেছেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ, লেখক, প্রকাশক এবং নিউ হোপ গ্লোবালের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এমবিই। তাঁর এই সুপরিকল্পিত সুপারিশকে কেন্দ্র করে ‘আগামীর উন্নত জাতি গঠনে দিকনির্দেশনামূলক সুপারিশ’ শীর্ষক এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা সভা শনিবার বিকেলে সিলেট প্রেসক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি সিলেটের শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পেশার মানুষের উপস্থিতিতে একটি প্রজ্ঞাময় ও ভবিষ্যতমুখী আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়।
সভায় প্রধান বক্তার বক্তব্য উপস্থাপন করেন নিউ হোপ গ্লোবালের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এমবিই। সভাপতিত্ব করেন বিএমএ সাবেক সহ সভাপতি ডা. শামীমুর রহমান।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবির, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. শিব্বির আহমদ শিবলী, সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এসসিসিআই) সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি নাসিম হোসাইন, সিলেট বিভাগ সরকারি কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ আহমদ, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক আশরাফ উদ্দিন, এসসিসিআই এর সাবেক পরিচালক এজাজ আহমদ চৌধুরী এবং বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ অ্যাডভোকেট হাবিবুর রহমান হাবিব।আলোচনা সভার শুরুতে পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ জমির হোসেন।
ড. মোহাম্মদ ফয়েজ উদ্দিন এমবিই বলেন, “বিশ্ব পরিবর্তনশীল। প্রযুক্তি, অর্থনীতি, শিক্ষা ও নৈতিকতার নতুন বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আমাদের আগামী প্রজন্মকে যুগোপযোগী দক্ষতা, চরিত্র ও দৃষ্টিভঙ্গিতে তৈরি করতে হবে।” তিনি জাতি গঠনের জন্য যে সুপারিশমালা উপস্থাপন করেন, তার মধ্যে রয়েছে
• শিশু ও তরুণদের জন্য নৈতিক শিক্ষা ও নেতৃত্ব বিকাশ কর্মসূচি,
• আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক শিক্ষাব্যবস্থা,
• দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির জন্য আন্তর্জাতিক মানের টেকনিক্যাল ট্রেনিং,
• ডিজিটাল জ্ঞান ও উদ্ভাবনী চিন্তা উন্নয়ন,
• সামাজিক শৃঙ্খলা, জবাবদিহিতা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা বৃদ্ধি,
• এবং পরিবার–সমাজ–রাষ্ট্রের সমন্বিত উন্নয়ন কাঠামো।
তিনি আরও বলেন, “যে জাতি নিজের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে প্রস্তুত করতে পারে না, তারা বিশ্ব প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে। আজ আমাদের প্রয়োজন দিকনির্দেশনামূলক সুপারিশগুলোকে বাস্তবায়নযোগ্য রাষ্ট্রীয় নীতিতে রূপান্তর করা।”
বিশেষ অতিথি ড. ফয়েজ উদ্দিন বলেন, সুপারিশগুলো বর্তমান সময়ের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় এবং বাস্তবমুখী। তাঁর প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়িত হলে—
• রাষ্ট্রীয় কাঠামো আরও শক্তিশালী ও জবাবদিহিমূলক হবে,
• শিক্ষাব্যবস্থা আধুনিকতা ও মানবিকতার সমন্বয়ে এগিয়ে যাবে,
• দুর্নীতি, দায়মুক্তি ও সামাজিক অবক্ষয় কমে আসবে,
• তরুণ সমাজ সুশিক্ষা, মূল্যবোধ ও দক্ষতার মাধ্যমে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।
সভায় বক্তারা উল্লেখ করেন, দেশের উন্নয়ন শুধু অবকাঠামো নির্মাণে সীমাবদ্ধ নয়; বরং একটি উদার, চিন্তাশীল, নৈতিক ও কর্মদক্ষ জাতি গঠনই উন্নয়নের মূল ভিত্তি। ড. ফয়েজ উদ্দিনের চিন্তাভাবনা ও কর্মপরিকল্পনা এই দৃষ্টিভঙ্গিকে শক্তিশালী করে।
উপস্থিতি ও সার্বিক পরিবেশ, সভায় বিভিন্ন শ্রেণী–পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন। তরুণ পেশাজীবী, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ নানা পর্যায়ের মানুষ ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য উপযোগী জাতি গঠনের উপায় নিয়ে আগ্রহসহকারে মতামত শোনেন। উপস্থিত ব্যক্তিরা আলোচনাকে একটি সময়োপযোগী ও জাতীয় গুরুত্বের উদ্যোগ হিসেবে অভিহিত করেন।
সভা শেষে বক্তারা দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও প্রগতির স্বার্থে এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।