মোঃ মনিরুল ইসলাম রিয়াদ
স্টাফ রিপোর্টার
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি জাহিদুল করিম কচি বলেছেন, জুলাই আন্দোলনের অন্যতম নেতা ও ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান বিন হাদির ওপর ন্যাক্কারজনক হামলার পেছনে যারা জড়িত, তাদের দ্রুত চিহ্নিত করে নাম প্রকাশ করতে হবে। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, ছাত্রলীগের শীর্ষ পদে থাকা একজন ‘খুনি’ কীভাবে জামিন পেয়েছে এবং সেই জামিন দেওয়ার সঙ্গে কারা দায়ী, তা জাতির সামনে স্পষ্ট করা জরুরি।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে আইইবি আয়োজিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জাহিদুল করিম কচি।
তিনি অভিযোগ করেন, ভারত থেকে বসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব হত্যাকাণ্ডের নির্দেশ দিচ্ছেন এবং ওসমান হাদির ওপর হামলাও সেই ধারাবাহিকতার অংশ। খুনিদের আশ্রয়দাতা হিসেবে ভারতের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে) এর সভাপতি মো. শাহনেওয়াজ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি অন্ধকার সময় পার করছে। ওসমান হাদির ওপর হামলা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়; এটি দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে চলমান ষড়যন্ত্রের অংশ। তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, এর আগেও গোলাপগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে জুলাই যোদ্ধাদের ওপর হামলা হয়েছে, এমনকি সচিবালয়েও তারা আক্রান্ত হয়েছেন। কিন্তু এসব ঘটনায় সরকার কার্যকর বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি।
শ্যুটার হিসেবে সন্দেহভাজন ব্যক্তির বিষয়ে প্রশ্ন তুলে মো. শাহনেওয়াজ বলেন, তিনি ছাত্রলীগের একজন শীর্ষ ক্যাডার। কিছুদিন আগে অস্ত্র ও গুলিসহ গ্রেপ্তার হওয়ার পর কীভাবে তিনি জামিনে বেরিয়ে এসে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তা সরকারের কাছে স্পষ্ট করা প্রয়োজন। সরকার যদি জুলাই আন্দোলনের নেতাদের নিরাপত্তা বিষয়ে আগে থেকেই সক্রিয় হতো, তাহলে আজ ওসমান হাদির মতো একজন নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পড়তেন না।
এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব) এর সাবেক সভাপতি প্রকৌশলী সেলিম মো. জানে আলমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে সঞ্চালনা করেন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (আইইবি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক খান মোহাম্মদ আমিনুর রহমান।
এতে আরও বক্তব্য দেন প্রকৌশলী রাশেদ আলম, প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম, সাংবাদিক আলমগীর নূর, সাংবাদিক মুহাম্মদ আজাদ, প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম, প্রকৌশলী রাশেদুল ইসলাম, প্রকৌশলী রফিকুন্নবী, প্রকৌশলী নাজমুল আলম, প্রকৌশলী আবুল বাশার, প্রকৌশলী কামরুজ্জামান প্রমুখ।
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুরে রাজধানীর বিজয়নগরের কালভার্ট এলাকায় অস্ত্রধারীরা ওসমান বিন হাদিকে গুলি করে। পরে তাকে বেলা পৌনে ৩টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বেলা ১টা ৫৫ মিনিটে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।