1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১০:০৪ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
রাজস্থলী উপজেলা বাঙ্গালহালিয়া ইসলামপুর সিএনজি-অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ, নিহত ১ আহত ১ একটি চারা, একটি স্বপ্ন—বোয়ালখালীতে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে চারা বাকলিয়া স্টেডিয়াম হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ক্রীড়াঙ্গনঃ মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন প্রতারক আব্দুল বাতেনের কবল থেকে নিঃস্ব ওয়াহিদ ইলেকট্রিশিয়ান ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনকে রক্ষায় প্রশাসক নিয়োগের দাবিতে মানববন্ধন বাঘাইছড়িতে অসুস্থ নুরুল ইসলামের পাশে মুসলিম ব্লক ছাত্র কল্যাণ ফোরাম সাতকানিয়ায় প্রধান শিক্ষককে খুঁটিতে বেঁধে মারধর সীতাকুণ্ডে ট্রাক উল্টে বিদ্যুৎ খুঁটিতে আঘাত ক্ষতিপূরন দিলে ছাড় দেবেন হাইওয়ে পুলিশ বাঘাইছড়িতে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত লাগসই প্রযুক্তির প্রয়োগ ও সম্প্রসারণ বিষয়ক সেমিনার অনুষ্ঠিত বোয়ালখালীতে ইয়াবাসহ মাদক বিক্রেতা গ্রেপ্তার সীতাকুন্ডে ডিসি পার্কের পুকুরে মাছ অবমুক্তকরণ, পার্কে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও ফ্লাওয়ার জোনের উদ্বোধন।

খোট্টা ভাষার জনপদ -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

  • সময় শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫
  • ১৫৬ পঠিত

সম্পাদকীয়ঃ

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার ১৫ নম্বর ঘাট। নদী পারাপারের জন্য এখানে দিন-রাত ভিড় লেগেই থাকে। নগরের সবচেয়ে কাছের দুই উপজেলা আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর বাসিন্দারা এই ঘাট ব্যবহার করেন। ঠিক বাংলা বা স্থানীয় চট্টগ্রামের ভাষা নয়। তাঁদের নিজস্ব ভাষা। সংলাপগুলো এমন, ‘এহোন কিসকা নাম্বার?’, ‘আজ পাসিন্দার কম’, ‘আমরাবি ইনকাম কম উয়াঁই’, ‘সাইনকো পাসিন্দার বারেগা।’
এটা তাঁদের মাতৃভাষা, খোট্টা। অনুবাদ হলো এই কথোপকথনের। ‘এখন কার সিরিয়াল’, ‘আমার ইনকাম কম হয়েছে’, ‘সন্ধ্যায় যাত্রী বাড়বে’।
১৫ নম্বর ঘাটের অনেক মাঝির বাড়িই আনোয়ারা উপজেলার উত্তর বন্দর গ্রামে। ওই গ্রামের ১০ হাজার বাসিন্দা খোট্টা ভাষায় কথা বলেন। ৪০০ বছর ধরে ভাষাটি টিকে আছে। মূলত হিন্দি, উর্দু আর স্থানীয় ভাষার সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে খোট্টা ভাষা। চট্টগ্রাম ছাড়াও ভারতের কলকাতায় এই ভাষার লোকজন রয়েছেন বলে জানা যায়।
আনোয়ারা সদর থেকে আট কিলোমিটার দূরে উত্তর বন্দর গ্রাম বা খোট্টাপাড়ার অবস্থান। গ্রামের পশ্চিমে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা (সিইউএফএল) আর বঙ্গোপসাগর, উত্তরে মেরিন একাডেমি ও কর্ণফুলী নদী এবং পূর্বে দেয়াঙ পাহাড়। ঘনবসতিপূর্ণ ওই গ্রামে তাঁদের আগমন, ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে এলাকায় নানান তর্কবিতর্ক থাকলেও লোকজন এসব নিয়ে মাথা ঘামান না। তবে ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের কারণে তাঁদের পরিচয় ‘খোট্টাভাষী’ কিংবা ‘খোট্টা সম্প্রদায়’ হিসেবে।
তাঁদের আদি বাসস্থান ছিল ভারতের বারানসিতে। মোগল শাসনামলে এখানে মগ আর পর্তুগিজ দস্যুদের দমন করতে তাঁদের পাঠানো হয়েছিল। ১৮৫৭ সালে মোগলদের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের পতনের পর ভারতবর্ষ শাসনের জন্য ১৮৬০ সালে ইংরেজরা পেনাল কোড জারি করে। এর ফলে পেশা হারান খোট্টারা। অনেকেই তখন চট্টগ্রামে বসবাস শুরু করেন। এভাবে বন্দর গ্রামে তাঁদের নিবাস গড়ে ওঠে। সে সময় থেকে এখনো তাঁরা নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি ধরে রেখেছেন।
খোট্টা ভাষার উল্লেখ পাওয়া যায় গবেষক জামাল উদ্দিনের ‘দেয়াঙ পরগণার ইতিহাস’ বইয়ে। এর বাইরে মুহাম্মদ তসলিম উদ্দীনের ‘খোট্টা উপভাষা ধ্বনিতত্ত্ব’ ও ‘বাংলাদেশের খোট্টা উপভাষা’ নামে দুটি বই রয়েছে। এই দুজনের মতে, খোট্টা ভাষা কোনো স্বতন্ত্র ভাষা নয়। এটি হিন্দি, ফারসি, উর্দু আর বাংলার সংমিশ্রণে তৈরি একটি উপভাষা। তবে একটি জনগোষ্ঠীর পরিচয় বহন করে বলে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে।
ইতিহাস–গবেষক জামাল উদ্দিন বলেন, খোট্টারা মূলত উত্তর ভারত থেকে এসেছিলেন। তাঁদের ভাষা হিন্দি। আবার মোগলদের রাষ্ট্রীয় ভাষা ছিল ফারসি। এখানে বসবাস করতে গিয়ে তাঁদের ভাষায় মিশ্রণ ঘটে। ফারসি, হিন্দি, উর্দু, বাংলা এবং চট্টগ্রামের ভাষা মিলে একটি উপভাষা তৈরি হয়। এর সঙ্গে উত্তর ভারতের ভাষার তেমন একটা মিল নেই। পরে সেটিই খোট্টা ভাষা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আর ওই ভাষাভাষী খোট্টা সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত।
খোট্টা ভাষার জন্য তারা আলাদা পরিচিতি লাভ করেছে, তারা বলেন ‘এ ভাষা আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি। এ ভাষা নিয়ে আমরা গর্বিত। আমরা আমাদের এ ভাষা ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি।’ উত্তর বন্দর গ্রামে রাস্তার পাশে ঝুপড়ি দোকানে সনাতন ধর্মী চা বিক্রেতা। তিনি বলেন, ‘হিন্দু-মুসলমান আলাদা পরিচয় বহন করলেও আমরা খোট্টাভাষী। আর এ নিয়েই বাঁচতে চাই।’ এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘আমরা বাইরে চাটগাঁইয়া ভাষা ব্যবহার করলেও গ্রামে এসে খোট্টা ভাষায় কথা বলি। আর এ ভাষায় কথা বলতে ভালো লাগে।’

 

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট