 
							
							 
                    
বিশেষ সংবাদদাতাঃ
আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরবাড়ির আড়ালে গড়ে উঠেছিল পাচারকারীদের গোপন গুদাম — র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন-৭ বলছে, “শুল্কফাঁকির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স”ফেনী জেলার ফেনী সদর থানার ধর্মপুর আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকায় র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন‑৭ (র্যাব-৭), চট্টগ্রাম পরিচালিত এক সাঁড়াশি অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় শাড়ি, জিন্স–প্যান্ট এবং অনুমোদনবিহীন ওষুধ উদ্ধার করেছে। অভিযানে জব্দকৃত পণ্যের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩২ লাখ টাকা বলে র্যাব–৭ সূত্র জানিয়েছে।
অভিযানের বিস্তারিত হলো — গত ২৮ অক্টোবর ২০২৫, বিকেল প্রায় ১২টা ৪০ মিনিটে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৭ একটি দল ধর্মপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের জনৈক মোঃ অহিদুল মুন্সির বসতবাড়ির পেছনের ফাঁকা জায়গায় অভিযান চালায়। সেখানে পরিত্যক্ত অবস্থায় রাখা পাওয়া যায় ৫টি সাদা রঙের প্লাস্টিক বস্তা ও ১২টি খাকি রঙের কার্টন। তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করা হয় –ভারতীয় শাড়ি ৩০২ পিস,ভারতীয় জিন্স প্যান্ট ২৪৮ পিস,,ভারতীয় ‘Clop-G’ কীউকমর ওষুধের ২,১৮৪ পিস
র্যাব জানিয়েছে, এসব পণ্য শুল্কফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে আমদানিকৃত, যা সরকারের রাজস্বকে হুমকিতে ফেলেছে এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য উল্লেখযোগ্য ঝুঁকি তৈরি করেছে। উদ্ধারকৃত সব আলামত পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থার জন্য ফেনী সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দারা বলছেন, প্রকল্পের ঘরগুলো নিয়মিত আসা-যাওয়া অচেনা ব্যক্তিদের কারণে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল। এখন র্যাব‐৭ এর অভিযানের পর বিষয়টি পরিষ্কার হয়েছে। তারা প্রশাসনের প্রতি দাবি জানিয়েছেন— এই ধরনের আশ্রয়ণ প্রকল্প কোনোভাবেই ব্যবসায় কিংবা পাচারচক্রের আস্তানায় পরিণত হোক না।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পূর্বে সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে অবৈধ ভারতীয় পণ্য দেশের অভ্যন্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হতো। এই চক্রের কারণে বৈধ ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, সরকারের রাজস্ব আদায় বিঘ্নিত হচ্ছে। র্যাব-৭ এ ধরনের চক্রের বিরুদ্ধে “জিরো টলারেন্স” নীতিতে কাজ করছে।
র্যাব-৭ হলো Rapid Action Battalion (র্যাব) এর চট্টগ্রাম বিভাগীয় ইউনিট, যার অভীকার এলাকা অন্তর্ভুক্ত — চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর-দক্ষিণ, ফেনী জেলা, খাগড়াছড়ি জেলা ও রাঙ্গামাটি জেলা।
র্যাব আইনভিত্তিকভাবে গঠিত, যার মূল কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে – গোয়েন্দা সংগ্রহ, অরাজকতা দমন, সশস্ত্র ও সন্ত্রাসী গোষ্ঠী গ্রেফতার, অবৈধ অস্ত্র–গোলাবারুদ উদ্ধার।
র্যাব-৭ নিজস্ব স্লোগান: “বাংলাদেশ আমার অহংকার” — এবং তারা জানান, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, চোরাকারবারি, মাদকদ্রব্য পাচারকারীদের বিরুদ্ধেও জিরো টলারেন্স নীতি অনুসরণ করছে।
এই অভিযানের মধ্যে রয়েছে একাধিক গভীর ইঙ্গিত — একটি সরকারি মানবিক প্রকল্পের আশ্রয়গ্রহণকারী ঘরবাড়িতে কীভাবে অবৈধ বাণিজ্যের গোপন গুদাম গড়ে উঠতে পারে তা এখানে দৃশ্যমান। প্রশাসনের ঘন নজরদারি ও নিয়মিত তদারকি ছাড়া এ ধরনের ঘটনা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেতে পারে। র্যাব-৭ এর কঠোর পদক্ষেপ অবশ্য স্বাগত; তবে, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা এবং মানবিক প্রকল্পের প্রকৃত উদ্দেশ্য রক্ষায় অধিক স্বচ্ছতা ও অংশগ্রহণমূলক তদারকিও প্রয়োজন।
Leave a Reply