মোঃ শহিদুল ইসলাম
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম নগরীর বন্দরটিলাস্থ ইপিআই জোনাল অফিসে পরশু রাতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। শর্ট সার্কিট থেকে সৃষ্ট এই অগ্নিকাণ্ডে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র, আসবাবপত্র ও অফিস সামগ্রী পুড়ে ছাই হয়ে যায়। দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনা ও অবহেলার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
রোববার দুপুরে মেয়র ক্ষতিগ্রস্ত ইপিআই অফিস ছাড়াও বন্দরটিলার মাতৃসদন হাসপাতাল, ওয়ার্ড কাউন্সিলর কার্যালয় এবং চসিক রাজস্ব অফিস পরিদর্শন করেন। অফিস কক্ষের ছেঁড়া তার, পুরনো বৈদ্যুতিক সংযোগ এবং নিরাপত্তাহীন ব্যবস্থা দেখে তিনি বিস্ময় ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, “বিদ্যুৎ ব্যবস্থার নিরাপত্তায় চরম গাফিলতি রয়েছে। অব্যবস্থাপনার দায় কেউ এড়াতে পারবে না। নাগরিক সেবার অফিস যদি নিরাপদ না থাকে, তবে সাধারণ মানুষ কীভাবে নিরাপত্তা পাবে?” তিনি আরও সতর্ক করে বলেন, “আগামীতে এমন অবহেলা ধরা পড়লে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এসময় উপস্থিত ছিলেন-চসিকের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, চীফ পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা লে. কর্নেল ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী, প্রকৌশলী বিভাগ, নির্বাহী কর্মকর্তা, সচিব মো. আশরাফুল ইসলাম, একান্ত সচিব এডভোকেট মো. মারুফ পাটোয়ারী, জোনাল মেডিকেল অফিসার ডা. আ. মজিদ শিকদার, মাতৃসদন হাসপাতালের ইনচার্জ ডা. জিএম মামুন উদ্দিন, সহকারী ইনচার্জ ডা. ইসরাত জাহান সুমাইয়া, সাবেক কাউন্সিলর সরফরাজ কাদেরসহ ওয়ার্ড সচিব ও স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ—জাবেদ আনসারী, মুজিবুর রহমান, মো. শরীফ, মিজানুর রহমান পারুল, মো. হোসেন টিটু, রাশেদুজ্জামান রাসেল, মো. রাশেদুল আলম (রাসেদ), আকিব জাভেদ, মো. শাহজাহান প্রমুখ।
মেয়র ঘটনাস্থলেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির হিসাব তৈরি, অবকাঠামো সংস্কার, বৈদ্যুতিক সংযোগের ঝুঁকি অপসারণ এবং জরুরি বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। তিনি স্পষ্ট ভাষায় জানান—“চট্টগ্রামবাসীর জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো ধরনের খেলোয়াড়ি সহ্য করা হবে না। এখন থেকে সব সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত বৈদ্যুতিক পরিদর্শন বাধ্যতামূলক করতে হবে।”
স্থানীয় সচেতন মহল অভিযোগ করেছে, চসিকের বিভিন্ন অফিস ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বছরের পর বছর রক্ষণাবেক্ষণহীন তারের জট, ভাঙা প্লাগ, অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্রের অনুপস্থিতি এবং অবহেলার কারণে অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি বাড়ছে। অথচ প্রশাসন সময়মতো ব্যবস্থা নেয় না। বন্দরটিলার অগ্নিকাণ্ড যেন সেই দীর্ঘদিনের গাফিলতির নগ্ন প্রমাণ।
Leave a Reply