
মোঃ কায়সার চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।
দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছে চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা পরিষদ।
রোববার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর বড়পোল মোড় থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে জামালখান, আন্দরকিল্লা ও নিউমার্কেট এলাকায় সমাবেশে মিলিত হয়।
মিছিলে শতাধিক শ্রমিক, বন্দর কর্মচারী ও বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন। মিছিলকারীরা হাতে মশাল নিয়ে শ্লোগান দেন— “চট্টগ্রাম বন্দর রক্ষা করো”, “বিদেশি ইজারা বাতিল করো”, “বন্দর চেয়ারম্যান হটাও, দেশ বাঁচাও”।
বক্তারা বলেন, দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম বন্দর। বাংলাদেশ আজ যে বাণিজ্যে স্বনির্ভরতার পথে, তার মূল চালিকাশক্তি এই বন্দর। অথচ দেশের স্বার্থবিরোধী চক্রান্তের অংশ হিসেবে বন্দর টার্মিনালগুলো বিদেশি অপারেটরের হাতে তুলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। তারা বলেন, “কার স্বার্থে এনসিটি, লালদিয়া, বে–টার্মিনালসহ চারটি টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে তুলে দিতে চান? এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”
বন্দর রক্ষা পরিষদের আহ্বায়ক জাফর আলম বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের সার্বভৌম সম্পদ। এখানে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ চলবে না। চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান নিজেকে বিদেশি স্বার্থের প্রতিনিধি হিসেবে প্রমাণ করেছেন। অবিলম্বে তাঁকে অপসারণ করতে হবে।”
অন্য বক্তারা বলেন, বিদেশি ইজারার নামে জাতির সম্পদ হস্তান্তরের চেষ্টা ব্যর্থ করতে শ্রমিকরা ঐক্যবদ্ধ থাকবে। তারা অযৌক্তিক ট্যারিফ বৃদ্ধি বাতিল ও বন্দরের চলমান কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান।
এর আগে শনিবার (১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব চত্বরে শ্রমিক–কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল ও লালদিয়ার চর বিদেশিদের ইজারা দেওয়ার উদ্যোগ বন্ধের দাবিতে গণ–অনশন কর্মসূচি পালন করে। অনশনকারীরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বন্দরকে বিদেশিদের হাতে তুলে দিলে সারাদেশে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে এনসিটি, বে–টার্মিনাল ও লালদিয়া টার্মিনাল উন্নয়ন প্রকল্পে বিদেশি বিনিয়োগ ও পরিচালনার বিষয়ে সরকার উচ্চপর্যায়ে আলোচনা করছে। তবে বন্দর সংশ্লিষ্ট শ্রমিক সংগঠনগুলো এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছে।
Leave a Reply