নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
চট্টগ্রামের পটিয়ায় নিজ ঘরে স্ত্রী ও পুত্র খুন করার পর এক ব্যক্তির তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। মৃতের গোসলের সময় জানা যায় তাকে খুন করা হয়েছে।
পটিয়া উপজেলার হাইদগাঁও রাজঘাটা ব্রিজের পাশে বৈদ্যপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীরকে খুনের অভিযোগে নিহতের বোন ছেনোয়ারা আক্তার সোমবার পটিয়া আদালতে একটি মামলা দায়ের করেছেন।
আদালতের বিচারক তররাহুম আহমেদ এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন।
পুলিশের প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন বলে জানিয়েছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন ও শাহীনা আবেদ।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন- নিহতের স্ত্রী শাহিদা আকতার (৩৭) ও পুত্র খোরশেদ আলম (২৪)।
মামলার আবেদনে অভিযোগ করা হয়, নিহত আলমগীর পক্ষাঘাত রোগে আক্রান্ত এবং পারিবারিক অশান্তিতে ছিলেন। গত ৫ ডিসেম্বর সকালে নিহতের স্ত্রী ও পুত্র অসুস্থ অবস্থায় তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিনি পাড়ার মোহাম্মদ মোনাফের চায়ের দোকানে বসেছিলেন। রাতে স্থানীয় লোকজন তাকে জোর করে ঘরে দিয়ে আসেন। তাকে ঘরে নিয়ে যাওয়ার সময় নিহত আলমগীর তাকে খুন করা হতে পারে বলে আশঙ্কার কথা জানান এবং ঘরে যেতে অস্বীকৃতি জানান।
এরপরও রাতে তিনি কোথায় থাকবেন তা ভেবে লোকজন তাকে ঘরে রেখে আসেন। পরদিন ৬ ডিসেম্বর সকালে প্রচার করা হয় আলমগীর হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন। এরপরই পরিবারের পক্ষ থেকে ওই দিন বাদ আসর নামাজের পর তাকে দাফনের কথা জানানো হলেও আত্মীয়স্বজন আসার আগেই তড়িঘড়ি করে তাকে জোহরের নামাজের সময় দাফন করা হয়।
কিন্তু মৃতের গোছল দেওয়ার সময় লোকজন তার গলায় ফাঁস ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন দেখতে পায়। এ সময় তারা তা ভিডিও করে রাখেন। পরে আলমগীরের মৃত্যু নিয়ে রহস্যের বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বিষয়টি জানতে পেরে নিহতের বোন ছেনোয়ারা বেগম ও এলাকার লোকজন এ বিষয়ে স্ত্রী ও পুত্রের কাছে জানতে চাইলে মৃত ব্যক্তিকে নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য বলা হয়। পরে এ বিষয়ে পটিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করা হলেও পুলিশ তা গ্রহণ করেনি। পরে সোমবার আদালতে মামলার আবেদন করা হয়।
বাদীপক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট জসীম উদ্দিন ও শাহীনা আবেদ। শুনানি শেষে এ বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতকে জানাতে পটিয়া থানা ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন। ওসির প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত পরবর্তী আদেশ দেবেন।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি নেজাম উদ্দীন জানান, আদালতের আদেশের কপি তিনি এখনো হাতে পাননি। আদেশের কপি হাতে পেলে এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Leave a Reply