সমাজ মূল্যবোধ অবক্ষয়ে তরুণ প্রজন্ম ! আজ তোমরা কোন পথে?
– নেছার আহমেদ খান
মহান আল্লাহ তায়ালা অত্যন্ত ভালোবেসে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহর এই প্রিয় মানবজাতি যাতে আল্লাহর প্রিয় থাকতে পারে এবং সর্বদা মানবশত্রু শয়তানের মোকাবেলা করে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। সেজন্য আল্লাহু সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা পাঠিয়েছেন অসংখ্য নবী রাসুল, অলি হক্কানী আলেম উলামা ও নায়েবে রাসুল। যাদের সান্নিধ্যে এসে আল্লাহর দয়া নিয়ে লক্ষ লক্ষ আল্লাহর বান্দা অন্ধকার ও পথভ্রষ্টতা হতে মুক্তি পেয়েছে। আল্লাহ ও রাসূলের পথে নিজেকে আলোকিত করার জন্য সুযোগ লাভ করেছে। বর্তমানে সারা বিশ্বের দিকে থাকালে অতি সহজে অনুমেয় হয় যে,মানুষ প্রচন্ড স্রোতের তুমূল ব্যাগে অন্ধকার ভবিষ্যতে ও বিপর্যস্ত বিভিন্ন জীবনের দিকে নিয়োজিত হচ্ছে। এই তরুণ প্রজন্ম যাচ্ছে কোথায়? যাবে কোথায়? এইটুকু ভেবে দেখার মানসিকতাটুকু হারিয়ে ফেলেছে! যার প্রমাণ ইতিমধ্যে সবার সামনে বিদ্যমান! তারা শেয়ার বাজার, ইউনিপে টু, ইউপেএশিয়া, এক টাকার কয়েন ৫০ টাকা দিয়ে ক্রয়, মোবাইলে জুয়া সহ আরো বিভিন্ন এমএলএম ব্যবসা, এমনকি অনেকে রাজনৈতিক দলের ছায়ায় থেকে উদ্ভট প্রকৃতির আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হওয়ার ব্যবসায় জড়িত হয়ে এদেশের অসংখ্য মানুষ পথে বসেছে, দরিদ্র হয়েছে, পরিবারের সবার কাছে ঘৃণিত হয়েছে, আত্মহত্যা করেছে, স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে, দুঃশ্চিন্তায় জটিল কঠিন রোগ হয়েছে, বাড়ি বিক্রয় করেছে, রাস্তায় রাস্তায় ঘুরপাক খাচ্ছে, সর্বস্ব হারিয়ে বিভিন্ন অপরাধ জগতে পা বাড়িয়েছে, অনেক মহিলা তালাকপ্রাপ্ত হয়েছে। এছাড়া আরো অজানা কতই না দুঃখজনক হানাহানি, মারামারি, গাড়ি ভাঙচুর, প্রকাশ্য দিন দুপুরে মানুষের সামনে পাথর মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করা, মৃত্যু ব্যক্তির লাশের শরীরে উপর উঠে নৃত্য করা, মব জাস্টিস, সড়ক অবরোধ, দেশের সম্পদ নষ্টের ঘটনা সৃষ্টি হয়েছে। সব দুঃখ দুর্দশা শিকার হয়েছে একমাত্র যুব-সম্প্রদায়। একটি অজানা নেশায় নেশাগ্রস্ত হয়ে হিতাহিত জ্ঞান এবং আলোর পথ হারিয়ে তারা এই বিপদ সংকলিত গহীন অরণ্যে ছুটে চলেছে। অন্যদিকে ইন্টারনেট দুনিয়ায় আধুনিক বিশ্বের বিজ্ঞানের চরম উন্নতির সুফলে অত্যাধুনিক মিডিয়া, ফেসবুক, ল্যাপটপ ও মুঠোফোনের ছড়াছড়ির কুফলে এই দেশের যুবসমাজ মানগতভাবে এগিয়ে গেলেও চরিত্রগতভাবে ধ্বংসের অতলগর্ভে নিমজ্জিত হয়েছে, হচ্ছে ও হবে! স্কুল, কলেজ, ভার্সিটির ছাত্র ও সাধারণ শিক্ষিত-অশিক্ষিত যুবক যুবতীরা ল্যাপটপ, ফেসবুক ও মোবাইলের আশ্রয় জীবন গড়ার নামের জীবন ধ্বংসের কাজে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। প্রায় সকল ধরনের যুবক-যুবতীরা সোস্যাল মিডিয়ার আশ্রয় নিয়ে অবৈধ প্রেম বিনিময়, যৌন উত্তেজক ছবি দেখা ইত্যাদির মাধ্যমে জীবনের শুরুতে যৌবন শেষ করে ফেলেছে। ছাত্র-ছাত্রী ও অন্যান্য যুবক যুবতীর হাতে হাত দিয়ে একাকী অবস্থায়, নিজ কক্ষে রাতের অন্ধকারে, নিশিরাতে, প্রাইভেট রুমে, রাস্তার ধারে, নিঝুম এলাকায় বসে, দাঁড়িয়ে, এবং শুয়ে ইচ্ছে মত ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে একে অপরের সাথে। এতে তরুণ সমাজ আর্থিক মানসিক ও শারীরিকভাবে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, বিপথগামী হচ্ছে। যেনা- ব্যাবিচার, অবৈধ যৌনাচার-অসৎ উপায়ে যৌনাচারে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে। ফলে জীবনের শুরুতে যৌবন হারা এই তরুণ সমাজ যখন ধ্বংসের অজানা পথে সচেতন হয়ে উঠে বা দাম্পত্য জীবনে পা দেয়, তখন হারানো যৌবন উদ্ধারের জন্য পোস্টার, দেয়ালিকা লিফলেট ইত্যাদিতে পাওয়া বিভিন্ন হারবাল কর্তৃক এক ঘন্টার যৌবন ফিরিয়ে নিতে যাই। আর তাতে হাজার হাজার যুবক প্রতারিত হয়ে সর্বস্ব হারিয়ে কাউকে না বলে ধূকে ধূকে মরচে অন্যদিকে যৌবন হারা যুবকগন স্ত্রীকে তৃপ্তি দিতে না পেরে মহিলাদেরকে ইচ্ছামত চলতে দিতে বাধ্য হয়। আবার একই কারণে সন্তান না হলে ডাক্তারি চিকিৎসার নামে আল্লাহর দেওয়া স্বাভাবিক অবস্থাকে ধ্বংস করে দেয়। সন্তান হওয়ার কুদরতি ব্যবস্থাপনাকে চিরতরে নষ্ট করে দেয় আল্লাহকে সন্তান বের করতে না দিয়ে পেট কেটে ডাক্তার দিয়ে সন্তান বের করে অসংখ্য মাকে পঙ্গু করা হচ্ছে। এভাবে কালক্রমে একজন যুবক নিজের সোনালী জীবনটির আলো ধারাবাহিকভাবে নিভিয়ে ফেলে। যুবসমাজকে এই অন্ধকার ও জীবন বিধ্বংসী পরিবেশ হতে রক্ষা করার জন্য আমাদেরকে অত্যন্ত সফলতার সাথে কাজ করতে হবে। আমাদের সমাজের সচেতন নাগরিকদের লক্ষ্য ও প্রত্যাশা হচ্ছে এই বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করে যুবসমাজকে আলোর পথে আনয়ন করা।
তরুণ প্রজন্ম বাঁচলে, আমাদের সোনার বাংলাদেশ আগামী ভবিষ্যৎ জীবন উজ্জ্বল হবে।
লেখকঃ প্রাবন্ধিক ও সমাজকর্মী
Leave a Reply