ডেস্ক রিপোর্ট:
৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ রুয়ান্ডা ভলকানোস ন্যাশনাল পার্কের পাদদেশে কিনিগি, মুসাঞ্জে জেলায় অনুষ্ঠিত হলো কুইটা ইজিনা বার্ষিক গরিলা নামকরণ উৎসবের ২০তম আসর। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সরকারি কর্মকর্তা, কূটনৈতিক কোরের সদস্য, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যক্তিত্ব, ব্যবসায়িক নেতা, সংরক্ষণ বিশেষজ্ঞ এবং হাজার হাজার স্থানীয় বাসিন্দা। অতিথিদের মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিলেন রুয়ান্ডার ফার্স্ট লেডি মাননীয়া জেনেট কাগামে; রুয়ান্ডার প্রধানমন্ত্রী মাননীয় ড. জাস্টিন এনসেঙ্গিইউমভা; এবং রুয়ান্ডা ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জঁ-গি আফ্রিকা।
এবারের উৎসবে মোট ৪০টি শিশু গরিলাকে নাম দেওয়া হয়, যার মধ্যে ছিলেন বিশ্বনেতা, শিল্পী, ফুটবল তারকা, সংরক্ষণ কর্মী এবং রুয়ান্ডার নিজস্ব রেঞ্জার, ট্র্যাকার ও ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞরা। এদের মধ্যে ২০২৩ সালে জন্ম নেওয়া ২২টি গরিলা ছিল, যাদের নামকরণ স্থগিত ছিল; পাশাপাশি ২০২৪ ও ২০২৫ সালে জন্ম নেওয়া ১৮টি গরিলাও নাম পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী ড. জাস্টিন এনসেঙ্গিইউমভা রুয়ান্ডার সংরক্ষণ ও কমিউনিটি উন্নয়নের অঙ্গীকারের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “রুয়ান্ডা গর্বিত যে আমরা শেষ জীবিত পর্বত গরিলাদের অভিভাবক। তারা শুধু বৈশ্বিক সম্পদই নয়, আমাদের দেশের গর্ব এবং অর্থনৈতিক সম্ভাবনার উৎস। তবে সাফল্যের সাথে নতুন চ্যালেঞ্জও আসে। গরিলা পরিবারের বৃদ্ধি হওয়ায় তাদের আবাস¯’ল বাড়ানো প্রয়োজন। রুয়ান্ডা সাহসী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে – ভলকানোস ন্যাশনাল পার্ক প্রায় ২৫% সম্প্রসারণ করা হবে, যাতে আগামী প্রজন্মের গরিলারা নিরাপদ আশ্রয় পায়। একইসাথে এটি পার্শ্ববর্তী সম্প্রদায়গুলোর জীবনমান উন্নত করবে এবং প্রমাণ করবে যে সংরক্ষণ ও উন্নয়ন হাতে হাত রেখে এগোতে পারে। আমরা বিশ্বকে আহ্বান জানাই এই মহৎ প্রকল্পে আমাদের সাথে যোগ দিতে।”
রুয়ান্ডা ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের সিইও জঁ-গি আফ্রিকা তার বক্তব্যে রুয়ান্ডার সংরক্ষণ সাফল্য ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন: “এটি রুয়ান্ডার সংরক্ষণ যাত্রায় একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত, যা আমরা বিশ্বের বন্ধু ও অংশীদারদের সাথে ভাগ করে নিতে গর্বিত। আজ কুইটা ইজিনা রুয়ান্ডার প্রাকৃতিক ঐতিহ্য রক্ষা, কমিউনিটি উন্নয়ন এবং জীববৈচিত্র্য বিশ্বের সাথে ভাগ করে নেওয়ার প্রতীক। আসুন আমরা সংরক্ষণে অর্জিত সাফল্য উদযাপন করি এবং আগামী ২০ বছরের জন্য যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্নবীকরণ করি।”
২০০৫ সালে সূচিত কুইটা ইজিনা, রুয়ান্ডার ঐতিহ্যবাহী নবজাতকের নামকরণের সংস্কৃতি থেকে অনুপ্রাণিত। এটি এখন একটি জাতীয় উৎসবে পরিণত হয়েছে, যেখানে স্থানীয় জনগণ, আন্তর্জাতিক অতিথি ও আঞ্চলিক অংশীদাররা মিলিত হয়। গত দুই দশকে কুইটা ইজিনা ৪৩৮টি শিশু পর্বত গরিলার নামকরণ করেছে।
এই অনুষ্ঠান আরও একটি অসাধারণ সাফল্যের প্রতিফলন ঘটায় – পর্বত গরিলাই একমাত্র বৃহৎ প্রাইমেট প্রজাতি, যাদের সংখ্যা বর্তমানে বাড়ছে। কুইটা ইজিনা আজ আফ্রিকার সংরক্ষণ ও পর্যটন সংলাপের প্রধান প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে।
Leave a Reply