নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে কুয়েত প্রবাসী সাংবাদিক সাদেক রিপনের জায়গা দখল নিতে ভাংচুর ও মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ভূমিদুস্য ফখরুল ইসলাম খান সিআইপির বিরুদ্ধে। ২টি ফৌজদারী আইনে মামলা, একটি আইসিটি মামলা সহ ৩টি মামলা দেওয়ার পর আরও মামলা দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ওই প্রবাসী পরিবারকে।
মৌজা পূর্ব হিঙ্গুলী বিএস খতিয়ান ২৬৯ বিএস দাগ নং ১৪২৩ সাড়ে ৬ শতক জায়গার বিরুদ্ধে মিছ মামলা নং-৬৪২/২০২০, ধারা-ফৌজদারী কার্যবিধির ১৪৫ ধারার মামলা দায়ের করে। উল্লেখিত মিছ মামলার কাগজপত্র যাছাই বাছাই করে দেখা যায় ওই মামলার বিবাদী রসুল আহম্মদ ও হেদায়েত উল্লাহ এবং ভিন্ন জায়গা, ভিন্ন দাগ, ভিন্ন খতিয়ান। মামলায় উল্লেখিত জায়গা ও খতিয়ান নামের সঙ্গে কোন মিল নেই। মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য দিয়েছে মামলা দায়ের করে হয়রানি করা উদ্দেশ্যে।
প্রবাসী আবুল বশর পূর্ব হিঙ্গুলী মৌজার ক্রয়কৃত জায়গা পাশের জমির মালিক জসিম উদ্দিনের নামে নামজারি বিএস খতিয়ান করে পেলেন। পরবর্তীতে নামজারির বিষয়টা আবুল বশরের দৃষ্টিগোচর হলে ঐ বিএস খতিয়ানের বিরুদ্ধে উপজেলা ভূমি অফিসে ১৭.০৫.২০১৫ সালে বিবিধ মোকদ্দমা নং-৮০/১৫ আবেদন করলে উভয় পক্ষের কাগজপত্র পর্যালোচনা করে উপজেলা ভূমি অফিস হতে আমাদের পক্ষে রায় দেওয়া হয়। সেই রায় অনুসারে ১৫.০৭.২০১৭ সালে বিএস খতিয়ান নং- ৬৩৮৫, সম্পন্ন হয়। এরপর খাজনা রশিদ নং-ট ৬৭২৬৭১, উপজেলার মৌজা পূর্ব হিঙ্গুলী ১৪২৩ দাগের ০.০৬৫০ শতক জমির মালিক।
জানা গেছে, উপজেলার ধুম ইউনিয়নের কুয়েত প্রবাসী আবুল বশর দীর্ঘ ২৮ বছর প্রবাসে থাকতেন। প্রবাসী আবুল বশর শারীরিক অসুস্থতার কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে দেশে আসলে করোনার কারণে ফ্লাইট বন্ধ থাকায় আর ফিরতে পারেন নাই। প্রবাসে যেতে না পেরে দুঃখ দূর্দশা দূর করার জন্য হিঙ্গুলী ইউনিয়নের চিনকিরহাট এলাকায় নিজ জমির উপর মুরগির খামার দেওয়ার জন্য প্রায় ২ মাস যাবৎ একটি খামার তৈরি করেন।
যা গত ৩০ এপ্রিল সকালে ফখরুল ইসলাম খান সিআইপির প্রতিষ্ঠান এফ.আই.কে ডেভেলপমেন্ট প্রপার্টিজ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপক জিয়া উদ্দিন বাবলু, কর্মকর্তা মো. আজিজুল হক, মো. ফাহাদ, জিয়াউর রহমান, মো. আক্কাস, দ্বীন মোহাম্মদ, সিরাজুল ইসলাম সহ ১০/১২ জনের একটি গ্রুপ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে খামার ভাংচুর করে। ভাংচুরের দৃশ্যটি ভিডিও করতে গেলে প্রবাসীর ছেলে কলি ও রাহাত কে মারধর করে কলির মোবাইল ফোনটি ছিনিয়ে নিয়ে যায় হামলাকারীরা। পরবর্তীতে বিষয়টি তারা বারইয়ারহাট পৌর মেরর রেজাউল করিম খোকনকে জানালে, তিনি বিষয়টি মীমাংস করে দিলে তারা চলে যায়।
পরবর্তীতে কুয়েত প্রবাসী আবুল বশর ও তার দুই ছেলের নামে হামলাকারী মো. আজিকজুল হক বাদী হয়ে চট্টগ্রাম কোর্টে সিআর-মামলা নং ৭০/২০২১ দায়ের করে অপর এক ভাংচুর হামলা জড়িত মো. ফাহাদ (৩৩) বাদী হয়ে সিআর-মামলা নং-৬৫/২০২১ ফৌজদারী মামলা দায়ের করেন জোরারগঞ্জ থানায়।
আবুল বশরের বড় ছেলে গত ৫বছর যাবৎ কুয়েত প্রবাসে রয়েছেন। দেশে পরিবারের উপর হামলা ও মামলার বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে বিদেশ হতে বিভিন্ন জনের সাথে যোগাযোগ করতে চেষ্টা করলে ভাংচুরকারী জিয়া উদ্দিন বাবলু বাদী হয়ে কুয়েত প্রবাসী একাত্তর টিভির রিপোর্টার সাদেক রিপনের নামে তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে নং (১৯/২০২১) আইসিটি আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা ৩টি বর্তমানে জোরারগঞ্জ থানায় তদন্ততাধীন আছে।
কুয়েত প্রবাসী সাংবাদিক সাদেক রিপন জানান, ভূমিদস্যু ফখরুল ইসলাম খান সিআইপি ও তার সিন্ডিকেটের সদস্যরা টাকার প্রভাব ও জোর খাটিয়ে বিভিন্ন জনের জমি জবর দখল করে আসছে। তাদের হামলা মামলা ও হুমকি দমকিতে আমার পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কগ্রস্থ ও নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে। আমার প্রবাস ফেরত বাবা ও পরিবারের সদস্যরা মিথ্যা ৩টি মামলার বিবাদী হয়ে এর থেকে রেহাই পেতে বিভিন্ন মহলের ধারে ধারে ঘুরছে।
মামলার বাদী ফখরুল ইসলাম খান সিআইপির প্রতিষ্ঠান এফ.আই.কে ডেভেলপমেন্ট প্রপার্টিজ লিমিটেড এর ব্যবস্থাপক জিয়া উদ্দিন বাবলু বলেন, জায়গাটি নিয়ে খরিদা সূত্রে ফখরুল ইসলাম খান সিআইপি মালিক। এটার নামজারি নিয়ে আদালতে মিছ মামলা চলছে। যা এখনো বিচারাধীন। এটি অবৈধভাবে দখল করতে চায় আবুল বশর ও তার পরিবার। আবুল বশর সন্ত্রাসী নিয়ে আমাদের লোকজনের উপর হামলা করেছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সুফল চন্দ্র সিংহ বলেন, উক্ত জমিটি নিয়ে আদালতে মামলা চলতেছে। আদালতের রায়ে জমির মালিকানা নির্ধারিত হবে। মামলা শেষ না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তথ্য প্রযুক্তি আইনে দায়ের হওয়া মামলাটিও তদন্তাদীন রয়েছে বলে জানান তিনি।
Leave a Reply