
এম,আনিসুর রহমান
এবার দূর্বৃত্তের গুলিতে মো. আলমগীর প্রকাশ আলম (৪৬) নামে এক যুবদল কর্মীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেল সোয়া ৪টার দিকে পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের চারাবটতল এলাকার কায়কোবাদ চৌধুরী জামে মসজিদের সম্মুখে এই ঘটনা ঘটেছে। এতে মুহাম্মদ রিয়াজ নামে তার এক সহযোগীও গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আলমগীর মোটরসাইকেলে পাশের গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন। তার স্ত্রী ও সন্তান মোটরসাইকেলের পেছনে একটি অটোরিকশাতে ছিলেন। এসময় কায়কোবাদ জামে মসজিদের কবরস্থানে লুকিয়ে থাকা আটজন অস্ত্রধারী আলমগীরকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়লে, ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
পরে অস্ত্রধারীরা রাঙামাটি সড়ক দিয়ে অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল করে পালিয়ে যায়। পুলিশ তাদের পরিচয় জানাতে পারেনি। নিহত আলমগীরের শরীরে ৫ টি গুলির চিহ্ন পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় আলমগীরের আত্মীয় মুহাম্মদ রিয়াজও (২৫) গুলিবিদ্ধ হন। তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া। তিনি বলেন, আমরা এখন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করছি। নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আহত একজনকেও চমেকের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি আরো জানান, আলমগীর আগে অপরাধজগতে থাকলেও এবার জেল থেকে এসে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছিলেন। পূর্বশত্রুতা কিংবা আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। আমরা সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি। এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের পর আলমগীরকে নিজ কর্মী দাবি করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক গোলাম আকবর খোন্দকার একটি বিবৃতি দিয়েছেন। আলমগীরকে যুবদল কর্মী দাবি করে তার হত্যার নিন্দা জানিয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের পর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, নিহত আলমগীর আওয়ামী শাসনামলে দীর্ঘ ১২ বছর কারাভোগের পর সম্প্রতি কারামুক্ত হয়েছিলেন। রাউজানের বিরাজমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নির্মমভাবে খুন হলেন তিনি। বিবৃতিতে তিনি অবিলম্বে এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের এবং খুনের নির্দেশদাতাদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। এর আগে গত ৭ অক্টোবর হাটহাজারীর মদুনাঘাটে মোটরসাইকেলে করে আসা অস্ত্রধারীদের ছোড়া গুলিতে মুহাম্মদ আবদুল হাকিম (৫২) নামে রাউজানের এক বিএনপি কর্মী নিহত হন।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব, আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন কারণে রাউজানে অন্তত ১৭ জন খুনের শিকার হয়েছেন। যাদের অধিকাংশ বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন। বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয় অন্তত শতাধিকবার। এতে ৩৫০ জনের বেশি মানুষ গুলিবিদ্ধ হন।
Leave a Reply