
মোঃ কায়সার চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।
চারজন কৃষককে ব্যবসায়ী সাজিয়ে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) থেকে ঋণ নিয়ে বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে চারটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (১১ নভেম্বর) দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাগুলো দায়ের করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-১ এর উপ-পরিচালক সুবেল আহমেদ।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, চারজন কৃষককে ব্যবসায়ী হিসেবে দেখিয়ে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর পরিবারের মালিকানাধীন ইউসিবি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় ভুয়া হিসাব খোলা হয় এবং বিপুল অঙ্কের ঋণ অনুমোদন করে অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।
চারটি মামলার মধ্যে দুটি মামলায় সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ও তার স্ত্রী ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান রুকমিলা জামানকে আসামি করা হয়েছে। চারটি মামলার প্রতিটিতেই জাবেদের ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি, আসিফুজ্জামান চৌধুরী এবং ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বশির আহমেদকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া তার বোন রোকসানা জামান চৌধুরীকে দুটি মামলায় আসামি করা হয়।
একটি মামলায় অভিযোগ আনা হয়, ইউনুস নামে এক কৃষককে ব্যবসায়ী সাজিয়ে ‘ইউনাইটেড ট্রেডিং’ নামে একটি প্রতিষ্ঠানের নামে সইবিহীন ও ভুয়া মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। ওই হিসাব থেকে ৯ কোটি ৯৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা ঋণ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করা হয়। এ মামলায় ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বশির আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়েছে।
আরেক মামলায় নুরুল বশর নামে এক কৃষককে ‘বশর ইন্টারন্যাশনাল’ নামে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ৮ কোটি টাকা ঋণ উত্তোলন ও আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ, তার স্ত্রী, ভাই ও বোনসহ মোট ১৭ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তৃতীয় মামলায় ফরিদুল আলম নামে এক কৃষককে ‘ইউনিক এন্টারপ্রাইজ’ নামে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে জাবেদ, তার স্ত্রী ও ভাইদেরসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে।
চতুর্থ মামলায় আইয়ুব নামে এক কৃষককে ‘মোহাম্মদীয়া এন্টারপ্রাইজ’ নামে প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে ৫ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ উত্তোলন ও আত্মসাতের অভিযোগে আনিসুজ্জামান, রোকসানা জামান, আসিফুজ্জামানসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। চারটি মামলার প্রতিটিতেই প্রধান আসামি ইউসিবি ব্যাংকের সাবেক পরিচালক বশির আহমেদ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সবগুলো হিসাব খোলা হয়েছে সই ছাড়া এবং ভুয়া মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে।
দুদক কর্মকর্তা সুবেল আহমেদ জানান, মামলাগুলো দণ্ডবিধির ৪০৬/৪০৯/৪২০/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর ৪(২) ও (৩) ধারায় করা হয়েছে।
Leave a Reply