
মোঃ কায়সার. চট্টগ্রাম প্রতিনিধি।
চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন স্থানে প্রতিনিয়ত চাঁদাবাজি চলছে এবং প্রতিদিন সেখানে প্রায় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা অবৈধভাবে আদায় করা হয় বলে মন্তব্য করেছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা ড. এম সাখাওয়াত হোসেন। সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক বছরের অর্জন ও সাফল্য তুলে ধরতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বন্দর–ইস্যুতে রিট ও হাইকোর্টের বিভক্ত রায় প্রসঙ্গেঃ চট্টগ্রাম বন্দরের নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) বিদেশি কোম্পানিকে পরিচালনার জন্য চুক্তি–সম্পর্কিত প্রক্রিয়া নিয়ে দায়ের করা রিটের সাম্প্রতিক বিভক্ত রায় প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন—“আমার মনে হয়, যারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করছেন তারা নতুন বেঞ্চে যাবেন অথবা প্রধান বিচারপতির শরণাপন্ন হবেন। আমি রায়ের বিরুদ্ধে বা পক্ষে কিছু বলছি না।”
তিনি জানান, বিশ্বের অনেক বড় বন্দরে ট্রিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে এবং বাংলাদেশের বন্দরেও ব্যাপক বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে।
বন্দরের প্রতিটি জায়গায় চাঁদাবাজি চলছেঃ চট্টগ্রাম বন্দরে অবৈধ অর্থ উঠার প্রসঙ্গে ড. সাখাওয়াত বলেন—“আপনারা পত্রিকায় অনেক কিছু লেখেন, কিন্তু কখনো জানতে চান না—চট্টগ্রাম বন্দর থেকে প্রতিদিন কত অবৈধ টাকা ওঠে। ন্যূনতম দুই থেকে আড়াই কোটি টাকা প্রতিদিন ওঠে। ভেতরে ট্রাক দিনের পর দিন দাঁড়িয়ে থাকে, যেখানে তা থাকার কথা নয়—কারণ কেউ না কেউ চাঁদা নিচ্ছে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, বন্দর এলাকার ভেতরে যেমন চাঁদা নেওয়া হয়, বাইরে বের হওয়ার পরও ট্রাক–চালকদের চাঁদা দিতে হয়।
চাঁদাবাজি বন্ধ হয়েছে কি? অবৈধ অর্থ আদায় কমাতে পেরেছেন কি না—এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বলেন, “অনেক কমেছে।”
তবে পুরোপুরি বন্ধ হয়েছে কি না জানতে চাইলে পাল্টা জবাবে বলেন—“বাংলাদেশে পুরোটা কমানো কি সম্ভব?”
বন্দর পরিচালনায় গতি বেড়েছেঃ চট্টগ্রাম বন্দরের পূর্ববর্তী পরিস্থিতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অতীতে চট্টগ্রামের যিনি মেয়র ছিলেন তিনি ‘মেয়র কম, বন্দর রক্ষক বেশি-এমন মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দরটা সোনার ডিম পাড়া মুরগির মতো। তাড়াতাড়ি জবাই করে সব ডিম বের করে ফেলো! “আগে বলা হয়েছিল, অমুক ব্যক্তি থাকলে বন্দর বন্ধ হয়ে যাবে। পরে আলোচনা করে ৫% কমাতে হলেও রাজি হয়েছিলাম। এখন দেখুন—আগে যেখানে দিনের পর দিন লাগত, এখন এক দিন বা দেড় দিনের মধ্যেই কাজ শেষ হচ্ছে।”
ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন,
“আমার সঙ্গে দেখা হওয়া শতভাগ ব্যবসায়ীই বলেছেন—স্যার, ভালো কাজ করেছেন।”
এনসিটি চুক্তি রিটে বিভক্ত রায়ঃ উল্লেখ্য, এনসিটি পরিচালনার চুক্তিকে ঘিরে করা রিট আবেদনে গত ৪ ডিসেম্বর হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বিভক্ত রায় দেয়। জ্যেষ্ঠ বিচারপতি ফাতেমা নজীব চুক্তি–সম্পর্কিত প্রক্রিয়াকে অবৈধ ঘোষণা করেন। অপর বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ার রিট আবেদন খারিজ করে দেন।
Leave a Reply