মোঃ শহিদুল ইসলাম
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চট্টগ্রাম নগরীর ইপিজেড থানাধীন ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নিউমুরিং সাংগঠনিক ওয়ার্ডে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত উঠান বৈঠক শুক্রবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় অনুষ্ঠিত হয়। উঠান বৈঠক ঘিরে স্থানীয় মানুষের ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায়। গণ্যমান্য ব্যক্তি, পাড়া-মহল্লার তরুণ-যুবকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ এতে যোগ দেন।
প্রধান অতিথি জনাব মোঃ শফিউল আলম বলেন—“এই দেশকে দুর্নীতিমুক্ত কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে হলে একজন ন্যায়পরায়ণ শাসক দরকার। ইসলাম যে ইনসাফ ভিত্তিক শাসনের কথা বলে, আজ তা অকার্যকর করে রাখা হয়েছে। বিচারহীনতার সংস্কৃতি, প্রশাসনের দুর্নীতি, নির্বাচনী কারচুপি—সব মিলিয়ে দেশ অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।”
তিনি জোর দিয়ে আরও বলেন—“নারীর অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে ইসলামই প্রকৃত সমাধান দিয়েছে। অথচ বর্তমান শাসকগোষ্ঠী নারীর সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ। প্রতিদিন নারীর উপর নির্যাতন, ধর্ষণ ও হত্যার খবর প্রকাশিত হচ্ছে। এই শাসনব্যবস্থা মানুষকে শুধু ভয়ের মধ্যে রেখে টিকিয়ে রাখা হয়েছে। তাই সময় এসেছে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই শাসকগোষ্ঠী থাকা অবস্থায় জুলাই সনদ পিয়ার পদ্ধতি নির্বাচন সহ দেশের শান্তি শৃঙ্খলা পরিবেশে মানুষের ভোট অধিকার নিশ্চিত করা।
চট্টগ্রাম মহানগর মজলিসের শূরা সদস্য ও ইপিজেড থানা আমীর জনাব আবুল মোকাররম বলেন— “ভোটাধিকার হরণ করে গড়ে তোলা রাষ্ট্র কখনো জনগণের কল্যাণ করতে পারে না। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, দমননীতি, দুর্নীতি—এসবই প্রমাণ করে বর্তমান শাসনব্যবস্থা ব্যর্থ।”
থানা শূরা সদস্য মোঃ ফখরুল ইসলাম বলেন—“জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে সরকার ক্ষমতায় টিকে আছে। অথচ জনগণই রাষ্ট্রের মালিক। এখন সময় এসেছে জনগণকে রাস্তায় নেমে নিজেদের অধিকার আদায় করতে।”
৩৯ নং ওয়ার্ড জামায়াত মনোনীত কাউন্সিলর পদপ্রার্থী মোঃ শাহেদ বলেন—“স্থানীয় সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রমেও দুর্নীতি চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। রাস্তা-ঘাট মেরামত, ড্রেনেজ ব্যবস্থা কিংবা জনসেবামূলক কাজে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত। কিন্তু জনগণের করের টাকায় সুবিধা পাচ্ছে কেবল ক্ষমতাসীনদের গোষ্ঠী।”
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন—আবদুর রহিম বিশ্বাস, আবুল কালাম, গাজী ওমর ফারুক, জি এম রাসেল, মোঃ আনিসুর রহমান, মাষ্টার আলী নেওয়াজ ও মোঃ মোনাব। বক্তারা একযোগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার এবং জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার আহ্বান জানান।
বৈঠকের মূল আলোচনা ছিলঃ ১/ দুর্নীতিমুক্ত ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের অঙ্গীকার,২/ নারীর অধিকার সুরক্ষা ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠার কঠোর হুঁশিয়ারি ৩/ বর্তমান শাসন ব্যবস্থার ব্যর্থতার তীব্র সমালোচনা ৪/ জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক,,৫/ ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার দৃঢ় প্রতিজ্ঞা,
এই উঠান বৈঠকে বক্তাদের কণ্ঠে স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে জনগণের দীর্ঘদিনের ক্ষোভ ও বঞ্চনা। তারা একযোগে বলেছেন, বর্তমান শাসনব্যবস্থা জনগণকে শুধু হতাশা উপহার দিয়েছে। ন্যায়ভিত্তিক শাসন, ইনসাফ, জনগণের অধিকার, নারীর মর্যাদা—সবই ধ্বংস হয়ে গেছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের উঠান বৈঠক শুধু একটি ওয়ার্ডে সীমাবদ্ধ থাকছে না; বরং জনগণের মধ্যে ধীরে ধীরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর চেতনা তৈরি করছে। বক্তাদের ভাষণে যে কঠোর সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে, তা আগামী দিনের রাজনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে।
নিউমুরিং উঠান বৈঠক শেষ হয় দোয়া ও শপথের মাধ্যমে। বক্তা ও অংশগ্রহণকারীরা প্রতিজ্ঞা করেন— এই শাসকগোষ্ঠী থাকা অবস্থায় জুলাই সনদ পিয়ার পদ্ধতি নির্বাচন সহ দেশের শান্তি শৃঙ্খলা পরিবেশে মানুষের ভোট অধিকার নিশ্চিত করা“ন্যায়ভিত্তিক নেতৃত্ব ছাড়া জাতির মুক্তি নেই। দুর্নীতিগ্রস্ত শাসন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণকেই রাস্তায় নামতে হবে।”
Leave a Reply