চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটস্থ আরাকান রোডে ওয়াহিদ ইলেকট্রিশিয়ান’স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন এর প্রধান কার্যালয়ের সামনে সচেতন নাগরিক সমাজ ও ছাত্র জনতার ব্যানারে আজ সোমবার (৩০ জুন) বিকেল ৪টায় এক মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম এ. এম. ওয়াহিদ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত এতিমখানা বন্ধ করে সেখানে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ, ট্রেনিং সেন্টার গুঁড়িয়ে দিয়ে সিডিএ এর অনুমোদন ছাড়া অবৈধ দোকান স্থাপনের প্রতিবাদে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ আহমেদ কবির। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সোসাল একশান ফর সাস্টেইনেবল ডেভেলপমেন্ট বাংলাদেশের চিফ ডিরেক্টর মোহাম্মদ ইউসুফ, মহানগর যুবদলের শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আরিফ, চান্দগাঁও থানা ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক রায়হান ছিদ্দিকী, ছাত্রনেতা তাওহিদুল ইসলাম তুহিন , শ্রমিকদল নেতা মো সাহাবউদ্দীন, মানবাধিকার সংগঠক মোহাম্মদ ফরহাদ ও ইলেকট্রিশিয়ান জাহাঙ্গীর।
সচেতন নাগরিক সমাজ ও ছাত্র জনতার মানববন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে আহমেদ কবির বলেন,‘‘আব্দুল বাতেনের ধর্মীয় লেবাস দেখে প্রথমে তার উপর আমিও বিশ্বাস রেখেছিলাম। সে যাদের বিরুদ্ধে আমাকে বিচার দিয়েছিলো তারা আসলেও আব্দুল বাতেন কে একাধিক বার ডেকে হাজির করতে পারিনি। সে আমার নাম ব্যবহার করে এই প্রতিষ্ঠানকে বাপ দাদার সম্পত্তিতে পরিণত করতে চেয়েছিল। পরে স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানতে পারি আব্দুল বাতেন একজন দুর্ধর্ষ প্রতারক। দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে তিনি প্রতিষ্ঠানের নামফলক পর্যন্ত মুছে ফেলেছেন। নিজের কন্যা ও আত্মীয়স্বজন নিয়ে একটি পকেট কমিটি গঠন করে প্রায় ৩০ কোটি টাকার সম্পদ আত্মসাৎ এর ষড়যন্ত্র করছেন। এমনকি এতিমখানা পর্যন্ত গুঁড়িয়ে দিয়েছেন। আমি দেশ ও দশের কল্যানে কাজ করি আমি বেঁচে থাকতে একটা জনহিতকর প্রতিষ্ঠানকে ব্যক্তি স্বার্থের পরিচালিত হতে দেব না। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান, অবিলম্বে এই অপকর্মকারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে প্রতিষ্ঠানটি রক্ষা করুন।”
ফাউন্ডেশনের ভুক্তভোগী সদস্য এম আওলাদ বলেন, “আব্দুল বাতেন বিগত ২৮ মাস ধরে প্রতিষ্ঠানটির কোনো কার্যক্রম চালাননি। ব্যাংকে সংরক্ষিত গরিব-দুস্থদের জন্য বরাদ্দ অর্থ একক স্বাক্ষরে তুলে আত্মসাৎ করেছেন। তিনি গরীব দুস্থ ও এতিমদের ঠকিয়েছেন, সমাজের সাথে প্রতারণা করেছেন।”
মানববন্ধন থেকে বক্তারা পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করেন:
১. প্রতারক আব্দুল বাতেন ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে বিচার বিভাগীয় তদন্ত শুরু করতে হবে।
২. ফাউন্ডেশনের পরিচালনার জন্য একটি নিরপেক্ষ প্রশাসক নিয়োগ দিতে হবে।
৩. বাতিল করতে হবে বাতেন কর্তৃক গঠিত পকেট কমিটি এবং পুনরায় জনসেবামূলক কার্যক্রম চালু করতে হবে।
৪. বিগত ২৮ মাসের আয়-ব্যয়ের পূর্ণাঙ্গ হিসাব প্রকাশ করতে হবে। আত্মসাৎকৃত সকল টাকা ফেরত নিয়ে জনসেবামূলক কার্যক্রম ব্যয় করতে হবে ।
৫. আব্দুল বাতেনকে দ্রুত তদন্তসাপেক্ষে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
বক্তারা আরও বলেন, ওয়াহিদ ইলেকট্রিশিয়ান’স ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশন চট্টগ্রামের একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে আন্দোলন আরও বৃহত্তর আকার ধারণ করবে। একটি জনহিতকর প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎ যাতে একজন প্রতারকের হাতে ধ্বংস না হয়, সে লক্ষ্যে প্রশাসন ও সরকারের জরুরি পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
Leave a Reply