নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম :
চট্টগ্রামের কর্ণফুলীর মইজ্জার টেক কুরবানির পশুর হাট এবার যেন একটু বেশিই বিশেষ। গরু-ছাগলের সঙ্গেই এবার ক্রেতা ও কৌতূহলী দর্শনার্থীদের নজর কেড়েছে মরুপ্রাণী উট। মরুর এই বিশালদেহী প্রাণীগুলো প্রথম দেখাতেই সবার দৃষ্টি কেড়ে নিচ্ছে।
হাটে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি উটকে সুন্দরভাবে ধোয়া-মুছা করে প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে। বিক্রেতারা নিয়মিত পরিচর্যা করছেন তাদের। কেউ দিচ্ছেন পানি, কেউ আবার তেল মালিশ করে নিচ্ছেন উটের পরিচর্যায় মনোযোগ। এরই মধ্যে হাটের প্রতিটি কোনায় দর্শনার্থীদের মধ্যে উটকে ঘিরে চলছে সেলফি তোলার ধুম। শিশু, তরুণ, বৃদ্ধ—সব বয়সী মানুষই বিস্ময়ভরা চোখে দেখছেন এই অনন্য প্রাণীগুলোর আচরণ ও চালচলন।
প্রতিবছর কুরবানির মৌসুমে চট্টগ্রামের কিছু হাটে এক-দুটি উট আনা হলেও, এবার মইজ্জার টেক হাটে উটের সংখ্যা বেশি। হাট কর্তৃপক্ষ জানান, এসব উট এসেছে সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ বেশি দেখা গেলেও বাংলাদেশ ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে হাটে অল্প সংখ্যকমানুষকে উট দেখা যায়।
উটের দাম অন্যান্য কুরবানির পশুর তুলনায় একটু বেশি হলেও, অনেকে আলাদা কিছু কুরবানি দেওয়ার ইচ্ছায় উট কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। দাম শুরু হয়েছে ১৫ লাখ টাকা থেকে, কিছু উটের দাম উঠেছে ২৫-৩০ লাখ টাকায় পর্যন্ত।
হাটে কথা হয় নগরীর আগ্রাবাদ থেকে আসা ক্রেতার রায়হান সঙ্গে। তিনি বলেন,
“উটের কুরবানি একদম আলাদা একটা অনুভূতি। গত বছর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, এবার যদি সুযোগ হয় তাহলে উটই কিনব। এখন দেখে মনে হচ্ছে সিদ্ধান্তটা সঠিক ছিল।”
হাট কর্তৃপক্ষ জানালেন, উট কেনার পাশাপাশি অনেকেই শুধু দেখতেই হাটে আসছেন, ফলে সাধারণ গরুর হাটের চেয়েও অনেক বেশি উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে। নিরাপত্তার বিষয়েও সতর্ক রয়েছে প্রশাসন ও আয়োজকরা—হাটে রয়েছে সিসি ক্যামেরা, নিরাপত্তাকর্মী, এবং পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার জন্য আলাদা মেডিকেল টিম।
বিশেষজ্ঞদের মতে, উটের মাংস খেতে যেমন সুস্বাদু, তেমনি পুষ্টিগুণেও ভরপুর। তবে উট জবাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন, যেটি পালন করতে হবে ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী।
Leave a Reply