মোঃ শেখ ফরিদ, মিরসরাই প্রতিনিধি:
মিরসরাইয়ের বিভিন্ন সড়কে বেপরোয়া কিশোর গ্যাং চক্র। তাদের তৎপরতায় অতিষ্ঠ এলাকার সাধারণ মানুষ। অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হলেও ভয়ে অনেকে প্রতিবাদ করতে সাহস করেন না।
এরা বেশিরভাগই বারইয়ারহাট খিল মুরালির ছেলে বলে পরিচিত।অনেকে ওই জাগায় বাসা ভাড়া থাকে। আবার কেউ বিভিন্ন এলাকা থেকে আসে। এর আগে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে,ইয়াবাসহ খিল মুরালি ও সোনা পড়া থেকে অনেক ইয়াবা ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করে। এই এলাকা গুলো মাদকের আনাগোনা হিসেবে পরিচিত ছিল। এর আগে ওই এলাকায় এক বাসায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ফেনসিডিল সহ ৩ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ কিশোরগ্যাংরা এখনো মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।
এলাকাবাসীর মতে, মিরসরাই জগতের নতুন আতঙ্ক কিশোর গ্যাং। অনেকটাই সামাজিক ব্যাধিতে রূপ নিয়েছে। অপ্রতিরোধ্য তারা, বাজারে গ্রামে দল বেঁধে অবাধে চলাফেরা করে। খুন, ধর্ষণ, হাঙ্গামা, দোকানে ফাও খাওয়া, মাদক সেবন, যৌন হয়রানি থেকে শুরু করে এমন কোন অপরাধ নেই যা তারা করে না। বয়স দেখলে বুঝার কোনও উপায় নেই যে, এদের সংঘটিত অপরাধ কী ভয়ঙ্কর হতে পারে।
এরা অনেকটা যেকোনো তুচ্ছ ঘটনায় চড়াও হচ্ছে যে কারো ওপর। অনেকের কাছে এরা এখন মূর্তিমান আতঙ্ক। এদের শাসন করতে গিয়ে এলাকার সম্মানিত মানুষও লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন। পুলিশের খাতায় তালিকা না থাকায় কিংবা বয়সে কম হওয়ায় এরা গ্রেফতারের বাইরে থেকে যাচ্ছে।
মিরসরাইয়, ঢাকা মহাসড়ক, মিঠাছরা বাজার , বারইয়ারহাট, পৌরসভা সড়ক শান্তির হাট , অলিনগর, মেহেদী নগর, এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রাম গঞ্জের বাজার, সোনা পাহাড়, খিল মুরালি বিভিন্ন সড়ক,চিনকী আস্তানা স্টেশন ও আশপাশ এলাকায় রয়েছে এদের অবাধ বিচরণ। এদের বিরুদ্ধে কেউ প্রতিবাদ বা নির্যাতিত হয়ে মুখ খুললে বা আইনী সাহায্য নিলে ওই ভুক্তভোগিকে আরও বেশি নির্যাতনের শিকার হতে হয়।
সূত্রে জানা যায়, এসকল মাদকাসক্ত কিশোর গ্যাংয়ের যন্ত্রণায় আশপাশের চাকরীজীবী মানুষ ও
শ্রমিকরা ঠিক মতন বেতন নিয়ে বাসায় ফিরতে পারে না।এরা ঢাকা সড়কে অবস্থিত চিনকী আস্তানা,বিএস আরএম গেট, ও বারইয়ারহাট, পৌর সভা রোড়, বারইয়ারহাট কলেজ ও জোরারগঞ্জ বালিকা বিদ্যানিকেতন ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের স্কুলগামী ছেলেমেয়েরা এমনকি ভাই-বোনও একসাথে রাস্তা দিয়ে চলতে পারে না।অনেক স্কুলের মেয়েকে যৌন হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে, অভিভাবকেরা লোকলজ্জায় মুখ খুলতে রাজি হচ্ছে না, অনেক অভিভাবক জানান, এখন যদি প্রতিবাদ করি আমার মেয়ের স্কুলে যাওয়া হবে না।স্কুলের ছাত্রীরা স্কুলে যাওয়ার সময় ও স্কুল ছুটি দেওয়ার সময় মেয়েদের ইভটিজিং এর শিকার হতে হয়, এ কিশোর গ্যাংয়ের দৃষ্টিগোচর হলে মিথ্যে অপবাদ দিয়ে মারধর করে ছিনিয়ে নিয়ে যায় সাথে থাকা অর্থকড়ি, মোবাইল ফোন সহ মূল্যবান সামগ্রী। এলাকায় হাঁটতে পারেনা, নির্জনে নিয়ে খারাপ অপবাদ দিয়ে টাকা দাবী করা হয়। মাদকের টাকা জোগাড় করতে এরা অনেক নিরীহ মানুষের পকেটে মাদক দিয়ে নির্যাতন করে এবং পরবর্তীতে গ্রামের আত্নীয়-স্বজনদের কাছ থেকে বিকাশ যোগে টাকা নিয়ে আসে। অভিযোগ রয়েছে, তাদের অপকর্ম চলমান থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন উদাসীন। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিক নেতাদের প্রশ্রয়ে মূলত নিম্নবিত্ত পরিবারের বখে যাওয়া সন্তানদের নিয়ে গড়ে উঠেছে এ সব গ্যাং। রয়েছে প্রভাবশালীদের বখে যাওয়া কিশোর সন্তান। তারা আরও অভিযোগ করেন, একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের প্রাথমিকভাবে বড় অপকর্ম করার সাহস থাকে না। কিন্তু প্রভাবশালী নেতারা যখন তাদের কাজকর্ম করার জন্য প্রশ্রয় দিয়ে থাকে তখন সে সব গ্যাংয়ের সদস্যরা ধীরে ধীরে বেপরোয়া হয়ে ওঠে। আর এ ভাবে গ্যাংগুলো মারাত্মক অপকর্ম করে থাকে।
তবে সচেতন মহল মনে করেন, কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যদের এখনই নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে ভবিষ্যতে তাদের মাধ্যমে আরো বড় ধরনের অপরাধমূলক ঘটনা সংঘটিত হতে পারে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কিশোর গ্যাংগুলোকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেছেন।
এ ব্যাপারে জোরারগঞ্জ থানা পুলিশ জানান, কিশোর গ্যাং ধরতে পুলিশ মাঠে কাজ করছে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
খিল মুরালি গ্রামের জৈনক প্রবাসী জানান আমি গ্রামের মধ্যে ঘুরে বেড়াই, সব জায়গায় বলা আছে কিশোর গ্যাং যেখানে থাকবে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিশোর গ্যাং এর জায়গা হবে না।
কিশোর গ্যাং এর বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে
আর কিশোর অপরাধীদের প্রতিরোধ করতে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যারাই এসব অপরাধমূলক কার্যকলাপ করে তাদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।
Leave a Reply