এম,আনিসুর রহমান
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে পরিচালিত শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শিক্ষা খাতের অংশীদার ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন মঙ্গলবার এক যৌথ বিজ্ঞপ্তিতে এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছে।
দুপুরে সংস্থা দুটির তরফ থেকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের কাছে এক চিঠিতে এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়। চিঠিতে জানানো হয়, অনিবার্য পরিস্থিতির কারণে কক্সবাজারে ক্যাম্পভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে। চিঠিতে স্বাক্ষর করেন ইউনিসেফের কক্সবাজার ফিল্ড অফিসের প্রধান অ্যাঞ্জেলা কার্নে ও সেভ দ্য চিলড্রেনের প্রতিনিধি মো. গোলাম মোস্তফা। এর আগে গত সোমবার ইউনিসেফ কক্সবাজার কার্যালয়ের প্রধান অ্যাঞ্জেলা কার্নে এক সংবাদ সম্মেলনে তহবিল সংকটের কারণে ইউনিসেফের সহায়তায় পরিচালিত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার শিক্ষাকেন্দ্র আপাতত জুন মাসের পরে বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিলেন। এরপর সেগুলো আবার খোলা হবে কি না, তা নির্ভর করবে নতুন করে তহবিল পাওয়ার ওপর। শিক্ষা কার্যক্রম চালু হলেও গ্রেড-১ ও ২ শ্রেণিভুক্ত স্থানীয় পর্যায়ের শিক্ষকেরা আর চাকরিতে থাকবেন না। ফলে চাকরি হারাবেন স্থানীয় ১ হাজার ১৭৯ জন শিক্ষক। কার্নে আরও বলেন এতে ইংরেজি, বিজ্ঞান ও সামাজিক শিক্ষা শেখানো বন্ধ হয়ে যাবে। অগ্রাধিকার পাবে বার্মিজ ভাষা, গণিত, জীবন দক্ষতা ও সামাজিক-মানসিক শিক্ষা। এসব পাঠদানে যুক্ত থাকবেন রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের শিক্ষকেরা।
ফলে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম হুমকির মুখে পড়েছে বলেও জানায় জাতিসংঘের শিশু তহবিল ইউনিসেফ। গতকাল সোমবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে সতর্ক করে জানায়, অবিলম্বে টেকসই অর্থনৈতিক সহযোগিতা না এলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শরণার্থীশিবিরে শিশুদের মৌলিক শিক্ষার সুযোগও ঝুঁকিতে পড়বে। এদিকে ইউনিসেফের এই সিদ্ধান্তে ক্ষুদ্ধ হন চাকরিরত স্থানীয় ১ হাজার ২৫০ জন শিক্ষক। তাঁরা আজ সকাল ৭টার দিকে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। এতে প্রায় সাত ঘণ্টা যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে।
স্থানীয় প্রশাসনের জরুরি পদক্ষেপের আশ্বাস পেয়ে আন্দোলনকারীরা অবরোধ তুলে নেন। এরপর দুপুরে ইউনিসেফ ও সেভ দ্য চিলড্রেন রোহিঙ্গা শিবিরে শিক্ষা কার্যক্রম সাময়িক বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত জানায়।
ইউনিসেফ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, শরণার্থীশিবিরে অবস্থিত শিক্ষাকেন্দ্রগুলো পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি অনুকূল হলে আবার শিক্ষা কার্যক্রম চালুর ঘোষণা দেওয়া হবে।
Leave a Reply