এম,আনিসুর রহমান
ঢাকার অপরাধজগতের ত্রাস শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনকে আটক করেছে সেনাবাহিনী। আজ মঙ্গলবার সকালে কুষ্টিয়া শহরের কালীশংকরপুর এলাকায় তিন ঘণ্টার এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে সহযোগীসহ তাকে আটক করা হয়। সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
সূত্র বলছে, আজ যেকোনো সময় সংবাদ সম্মেলন করে অভিযানের বিস্তারিত জানানো হতে পারে।
কুষ্টিয়া জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) ফয়সাল মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, এখানে আমাদের কোনো অভিযান ছিল না। অন্য কোনো বাহিনী করেছে কি না জানি না। জানার চেষ্টা করছি। শহরের বাসিন্দারা জানান, আজ ভোর পাঁচটা থেকে সকাল আটটা পর্যন্ত কালীশংকরপুর এলাকার সোনার বাংলা মসজিদের পাশের একটি তিনতলা বাড়ি ঘিরে রাখে সেনাবাহিনীর সদস্যরা। কমপক্ষে পাঁচটি সেনাবাহিনীর গাড়ি অভিযানে অংশ নেয় এবং বাড়ির নিচতলা ও আশপাশের এলাকায় দীর্ঘ সময় ধরে তল্লাশি চালানো হয়। অভিযান চালানো বাড়িটি স্থানীয় মীর মহিউদ্দিনের মালিকানাধীন। বাড়ির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলায় কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা মেস হিসেবে থাকেন। সেই মেসের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, কয়েকদিন ধরে নিচতলায় এক দাড়িওয়ালা অপরিচিত ব্যক্তি থাকতে দেখা যাচ্ছিল। তিনি দিনে একবার শুধু খাবার সময় বাইরে বের হতেন। অভিযানের সময় সেনাসদস্যরা শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট দুটি কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং বারবার বলেন, তোমাদের কোনো ভয় নেই। এক শিক্ষার্থী বলেন, সকাল আটটার দিকে একটি কালো মাইক্রোবাস আসে। তখন সেনাসদস্যরা একজন দাড়িওয়ালা ব্যক্তিকে হাতকড়া পরিয়ে এবং অন্য এক যুবককে হাত বেঁধে গাড়িতে তোলেন। অভিযান শেষে একজন সেনা কর্মকর্তা শিক্ষার্থীদের বলেন, এখন বললে ভয় পাবে। পরে মিডিয়ার মাধ্যমে সব জানতে পারবে। ঘটনাস্থলের পাশের বাসিন্দা রবিউল আলম বলেন, সকালবেলা দেখি সেনাবাহিনীর গাড়ি। পরে দেখি দুইজনকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আরেকজন জানান, জানালা দিয়ে দেখতে পান, ভেতরে তল্লাশি চলছে এবং কিছুক্ষণ পর সেনাবাহিনীর সদস্যরা দুইজনকে নিয়ে চলে যান। এদের একজনের মুখে দাড়ি আছে। সরকারি একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলেছে, সুব্রত বাইনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর ঢাকায় নেওয়া হবে। এরপর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে। সুব্রত বাইনকে আটকের বিষয়টি প্রশাসনে ব্যাপক গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ধারণা, রাজধানীতে সাম্প্রতিক যেসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটেছে, তার পেছনে পলাতক শীর্ষ সন্ত্রাসীদের হাত রয়েছে।
ভারত থেকে ফিরে আসা ‘ছায়াসন্ত্রাসীরা’ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভারত আশ্রয় দেওয়া কয়েকজন বাংলাদেশি সন্ত্রাসীকে ছেড়ে দেয়। তারা এখন দেশে ফিরে এসে জোটবদ্ধ হয়ে রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় নৈরাজ্য চালাচ্ছে। এদের অনুগত চক্র রাজধানীতে চাঁদাবাজি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধে যুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার হলে এসব অপরাধ কমে আসবে, বলেন ওই কর্মকর্তা।
Leave a Reply