আনোয়ার হোছাইন,(নাইক্ষ্যংছড়ি) প্রতিনিধিঃ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড কাগজিখোলা এবং পাশের লামা উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মানুষের জন্য চরম দুর্ভোগের নাম ‘খোটাখালী ছড়া’। এই ছড়ায় একটি সেতু না থাকায় বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়েন দুই ইউনিয়নের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পার হতে হয় শিশু, নারী ও শিক্ষার্থীদের।
বুধবার (২ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ছড়ার উপর কাঠ বা বাঁশের অস্থায়ী কোন সাঁকোও নেই। ফলে প্রবল পাহাড়ি ঢলের মধ্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পার হন এলাকাবাসী।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রাসেল বলেন, “বর্ষা এলেই আমাদের ভয় শুরু হয়। এই ছড়ার পানি এমনভাবে বেড়ে যায় যে, পারাপার প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। বিশেষ করে বাচ্চারা স্কুলে যেতে পারে না। এরই মধ্যে কয়েকজন স্রোতে তলিয়ে নিখোঁজ হয়েছে, এখনো খোঁজ মেলেনি।”
মোঃ জিয়াবুল হক বলেন, “অনেকবার শুনেছি সরকার এখানে ব্রিজ দেবে। সড়ক বিভাগের লোকজন এসে পরিমাপ করে গেছে। কিন্তু বছর গেল, ব্রিজ আর হলো না। প্রতিদিন ভোগান্তির যেন শেষ নেই।”
মোঃ ছৈয়দ বাবর বলেন, “ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা খালে পড়ে যায়, অনেকে আহত হয়। আমাদের জীবন একপ্রকার হুমকির মুখে। ব্রিজ না থাকায় স্থানীয় মানুষ দিন দিন অসহায় হয়ে পড়ছে।”
মোঃ হোছাইন বলেন, “এই সড়কটি দুই ইউনিয়নের মানুষের প্রধান চলাচলের পথ। একটিমাত্র সেতু না থাকায় সব যোগাযোগ কার্যত বন্ধ হয়ে যায় বর্ষায়। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, মানবিক দিক বিবেচনা করে দ্রুত সেতু নির্মাণের ব্যবস্থা নিন।”
মোঃ বেদার মিয়া বলেন, “সড়ক বিভাগের লোকেরা আশ্বাস দিয়ে চলে যায়। কিন্তু আমাদের দুর্ভোগ কাটে না। আমরা ভোট দিই, কিন্তু আমাদের এলাকার এই ন্যূনতম চাহিদা পূরণ হয় না।”
মোঃ রিদুয়ানুল হক বলেন, “স্কুলের শিশুরা ঝুঁকি নিয়ে পার হয়। অনেক সময় কেউ পড়ে গেলে উদ্ধার করাও সম্ভব হয় না। এই এলাকায় ব্রিজ অতি প্রয়োজনীয়। এখনই ব্যবস্থা না নিলে ভবিষ্যতে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।”
এ বিষয়ে বাইশারী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আনোয়ার হোছাইন বলেন, “সেতু না থাকায় দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী অন্তত ৩০ হাজার মানুষের চরম দুর্ভোগ হচ্ছে। আমি স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার জানিয়েছি। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে খোটাখালী ছড়ায় একটি সেতু নির্মাণের দাবি জানাই।”
এদিকে স্থানীয়দের দাবি, সেতু নির্মাণে দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হলে আগামী বর্ষায় পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। সংশ্লিষ্টদের প্রতি দ্রুত হস্তক্ষেপের জোর আহ্বান জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
Leave a Reply