আদর্শিক রাজনীতির বটবৃক্ষ জননেতা আতাউর রহমান খান ছিলেন চট্রগ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারের সন্তান।জননেতা আতাউর রহমান খান কায়সার ছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ,
মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,কুটনৈতিক, আদর্শিক,সততার মুর্ত প্রতীক,মুক্ত চিন্তার অধিকারী,প্রগতিশীল,সাংস্কৃতিক,
ক্রীড়াবিদ,বিদ্যোৎসাহী,পরোপকারী,বিশ্বস্থ,নিরংকার,
নির্লোভ,প্রচারবিমুখ,আধুনিক চিন্তা চেতনার ব্যক্তি।
চট্রগ্রাম আনোয়ারা উপজেলা বারখাইন তৈলারদ্বীপ গ্রামে সরকার বাড়ি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে ১৯৪০ সালে ৭সেপ্টেম্বর জননেতা আতাউর রহমান খান কায়সার জন্ম গ্রহণ করেন।তার পিতা ছিলেন আলহাজ্ব ইয়ার আলী খান ছিলেন বঙ্গীয় আইন পরিষদ ও পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য। তার মাতা মরহুমা গুলশান আরা বেগম গৃহিনী চিলেন।চট্রগ্রামের বিখ্যাত খান বাহাদুর আব্দুস সাত্তার ছিলেন তার নানা।আনোয়ারায় প্রথম শিক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তার দাদার অবদান অতুলনীয়। তিনিই একমাত্র ব্যক্তি শিক্ষা বিস্তারে আনোয়ারা কলেজ সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে অগ্রনী ভুমিকা রাখেন।
১৯৪৬ সালে সরকারি এমই স্কুল,১৯৫১ সালে সেন্ট প্লাসির্ড স্কুলে ভর্তি হন।১৯৫৫ সালে ক্যাম্ব্রিজ সার্টিফিকেট ও মেট্রিক্স পরিক্ষায় কৃতিত্বের সাথে পাশ করেন।১৯৫৬ সালে মেট্রিক্স পাশ করে চট্রগ্রাম কলেজে ভর্তি হন ও সংসদ নির্বাচনে বিপুল ভোটে সদস্য নির্বাচিত হন।১৯৫৯ সালে আই এ পাশ করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এস এম হলে বসবাস করেন এসময় তিনি প্রগতিশীল মুক্ত চিন্তায় বিশ্বাসী এক ছাত্র সংগঠনে যোগদান করেন।
১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম এ ডিগ্রি লাভ করেন।তিনি চট্রগ্রামের রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ এম এ আজিজের হাত ধরে ১৯৬৯ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন।
১৯৭০ সালে সালে চট্টগ্রাম আনোয়ারা-বাশখালী- কুতুবদিয়া থেকে এমএনএ নির্বাচিত হন।১৯৭১ সালে ববঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে মুজিব নগর সরকার কর্তৃক ১ নং সেক্টরে রাজনৈতিক সমন্বয়কারী ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরে ১৯৭২ সালে জাতীয় পরিষদের সদস্য ছিলেন ও সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করেন।
তিনি বহু সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন। চট্রগ্রাম ক্রীড়া সংস্থা,চট্রগ্রাম ক্লাব,চট্রগ্রাম সিনিয়র ক্লাবস,আনোয়ারা কলেজ,বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট, বঙ্গবন্ধু লেখক শিল্পী সম্মিলন পরিষদ,চট্রগ্রাম কলেজ প্রাক্তন ছাত্র -ছাত্রী পরিষদ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠায় জড়িত ছিলেন।আনোয়ারা উপজেলায় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় তার অবদান রয়েছে। শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক বিস্তারে তার ভুমিকা অতুলনীয়।এছাড়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চ্যান্সেলর কর্তৃক সিন্ডিকেট সদস্য ছিলেন।
তার স্ত্রী জনাবা নিলুফার কায়সার একজন জ্ঞান বিদ্যুষী ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও চট্রগ্রাম মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান ছিলেন।জনাবা নিলুফার কায়সার আওয়ামী রাজনীতির দুঃসময়ের কান্ডারী ও আদর্শিক নেত্রী।চট্টগ্রাম মহিলাদেরকে শিক্ষা,সাংস্কৃতিক ও দলে সুসংগঠিত করার জন্য তার অবদান অতুলনীয়।
তার তিন কন্যা সন্তান রয়েছে। প্রথম কন্যা জাতীয় সংসদের সদস্য,বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী কমিটির সভাপতি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক জনাবা ওয়াসিকা আয়শা খান এমপি।দ্বিতীয় কন্যা বিদেশি বহুজাতীক কোম্পানির কনসালটেন্ট ও তৃতীয় কন্যা ব্যবসায়ী হিসাবে প্রতিষ্ঠিত।
অসাম্প্রদায়িক ও গনতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামের পুরোধা ছিলেন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ জাতীয় নেতা আতাউর রহমান খান কায়সার।তিনি মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক, সফল কুটনৈতিক,বাংলাদেশের আওয়ামী রাজনীতির কঠিন দুঃসময়ের ৭৫ এর পরবর্তী,৯০ স্বৈরচ্চার, ৯৬ স্বৈরচ্চারিনী ও ১/১১ এর আন্দোলন সংগ্রামের অন্যতম পুরোধা ছিলেন। ১/১১ জননেত্রী শেখ হাসিনার বিশ্বস্থ সিপাহাশালা হিসেবে ততকালীন সময়ে সব ষড়যন্ত্রের নক্সা ধূলিসাৎ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিশ্বস্থতার সহিত কাজ করে যান।তিনি একমাত্র জাতীয় নেতা সব কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়ে দুঃসময়ে নেত্রীর ছায়াসঙ্গী ছিলেন ও বিশ্বস্ততার সঙ্গে আন্দোলন সংগ্রামে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন যার জন্য ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার মুখ দেখে। তার মেধ্য,বুদ্ধি,সততা, আদর্শিক,অদুরদর্শিতা দিয়ে কাজ করেছে বলে ১/১১ মঈনুদ্দিন -ফখরুদ্দীনের সকল ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বাধ্য করে।যা আওয়ামী লীগের রাজনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসাবে তিনি আজও সমাদৃত।সেদিন অনেক জাতীয় নেতারা দল ও নেত্রীর সাথে বেঈমানী করেছিল যা ইতিহাস সাক্ষী দেয়। অনেক নেতা নেত্রীকে মাইনাস টু ফর্মুলা ফেলতে চেয়েছিলেন কিন্তু বীর চট্রলার আদর্শিক,মেধাবী,
সততার মুর্ত প্রতীক আতাউর রহমান খান কায়সার সাহেবের অদুরদর্শিতায় সফল হয়নি।সেদিন কায়সার সাহেবের অবদানের কথা ইতিহাসের স্বর্নাক্ষরে লেখা আছে।বিদেশি কুটনৈতিক থেকে শুরু করে সরকারের সকল উচ্চ পদস্থ মহলের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে কারাগারে আটক জননেত্রী শেখ হাসিনাকে মুক্তি দিতে বাধ্য করেন।
২০০২ সালের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তাকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য করেন।সেই কঠিন দুঃসময়ে বিএনপি -জামাতের বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে তিনি অনেক হামলার শিকার হন।দলের আলোকবর্তিকা হিসাবে কাজ করে যাওয়া হল তার বৈশিষ্ট।তিনি অসম সাহসী যোদ্ধা হিসেবে জাতীয় নেতা হিসেবে দলের জন্য কাজ করে ।রাজনীতির মাঠের নেতা হিসেবে সেদিন খালেদা জিয়া – জামাতের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে পতন ঘটায় কিন্তু ১/১১ মঈনুদ্দিন -ফখরুদ্দীন সরকার ৩ মাসের ক্ষমতা নিয়ে যে টালবাহানা শুরু করে দেয় তার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাওয়া বীরের নাম জননেতা আতাউর রহমান খান কায়সার। তিনি সেদিন সভানেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসাবে এক চুল ছাড় না দিয়ে নেত্রীর নির্দেশে আন্দোলন সংগ্রামে নেতত্ব দেন।সবাই যখন রাজনীতির মাইনাস টু ফর্মুলা ব্যস্ত তখন কায়সার সাহেবে নেত্রীর পাশে ছিলেন। নেত্রীর নির্দেশে সব জায়গায় সরব উপস্থিতি থেকে সবাইকে নিয়ে নেত্রীর পক্ষে কাজ করেন।কোন লোভ লালসা তাকে আদর্শ থেকে বিচ্যুতি করতে পারিনি।জীবনের মায়া ত্যাগ করে তিনি নেত্রীর জন্য কাজ করে যায়।নেত্রী ছাড়া অন্য কোন ফর্মুলাতে তিনি যাননি শেষ পর্যন্ত জয়ী হলেন।নেত্রী কারাগারে থাকা অবস্থায় জননেতা জিল্লুর রহমান, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সাথে জননেতা কায়সার সাহেবে একসাথে লড়াই সংগ্রাম করে নেত্রীকে মুক্ত করে আনতে সচেষ্ট হন।সেদিন তিনি অসম সাহসীকতার পরিচয় বহন করেছে বলে আজ আওয়ামী লীগ অধিষ্ঠিত।আজীবন দল তার নিকট দায়বদ্ধ।তিনি আজীবন মানুষের কাছে আদর্শ ও সততার মুর্ত প্রতীক রুপে প্রতীয়মান।
পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিদের প্রতিনিধি জনসংহতি সমিতির সঙ্গে বাংলাদেশ সরকার ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দের ২ ডিসেম্বর এই চুক্তি স্বাক্ষর করেছিল। এতে স্বাক্ষর করেন বাংলাদেশ সরকারের এবং শান্তি বাহিনীর পক্ষে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির নেতার সাথে। এ চুক্তিতে জননেতা আতাউর রহমান খান কায়সার সদস্য হিসেবে কাজ করেছেন ও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন।তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে চুক্তির বিষয়ে বিশ্লেষণ করে শান্তির পক্ষে কাজ করেন যা দেশের জন্য গৌরবের।
ছাত্রজীবন থেকেই তিনি ক্রীড়া,সাংস্কৃতিক,সামাজিক কাজের মাধ্যমে নিজের দক্ষতা প্রমাণ করে।তিনি শিক্ষা আন্দোলন,গন আন্দোলন,মুক্তিযুদ্ধ,জেল,জাতীয় নির্বাচন, সংসদ নির্বাচন, সফল কুটনৈতিক,
রাজনীতিবিদ,আদর্শিক,সফল স্বামী,সফল পিতা,দেশপ্রেমিক হিসাবে প্রতিষ্ঠিত পেয়েছে। মুলত কায়সার সাহেবে ছিলেন আওয়ামী লীগের বটবৃক্ষ।তিনি একজন পরিচ্ছন্ন ও সজ্জন রাজনীতিবিদ পরিচিত। তার বিশাল দেহের মত হৃদয় ছিল উদার। ১৯৭১ সালে এর মুক্তিযুদ্ধেরর সময় যে নীতি ও আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলেন তেমনি আজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শের রাজনীতি করে জননেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসাবে আমৃত্যু আদর্শিক ও মেধাবী সংগঠক রাজনীতি করে যান।বঙ্গবন্ধু ও নেত্রীর প্রতি তার অবিচল বিশ্বাস থেকে এক চুল পরিমাণ সরে দাঁড়ায়নি। তার মত এমন আদর্শিক,মেধাবী ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ বিরল।তিনি সৎ,মেধাবী,মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক,বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা, নির্লোভ,নিরহংকার, মার্জিত,দেশপ্রেমিক লোক হিসাবে সমাজে আজও চির অম্লান হয়ে বেচে আছে। তার অবদানের কথা জাতি আজীবন স্মরণ করে।তার মৃত্যুতে দল ও জাতির যে অফুরনীয় ক্ষতি হয়েছে যা পুরণের সুযোগ নাই।
৭৫ পরবর্তী কঠিন দুঃসময়ে চট্রগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন।দলের নিবেদিত ও আদর্শিক যোদ্ধা হিসেবে প্রতিটি লড়াই সংগ্রামে তার অবদান অতুলনীয়। খন্দকার মোস্তাকক,জিয়া,এরশাদের সামরিক শাসনের সময় তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে দলের জন্য কাজ করে যান।প্রতিটি আন্দোলন সংগ্রামে তার বিচরণ ছিল লক্ষ্যণীয়।নেতাকর্মীদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রেখে দলকে সুসংগঠিত করতে তার ভুমিকা অতুলনীয়। দলের কঠিন দুঃসময়ে রাজনীতির নেতা ধীরে ধীরে জননেতা হয়েছিলেন।দলের প্রতি অগাধ আস্হা রেখে মাননীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন ছায়াসঙ্গী ছিলেন বীর চট্রলার গর্বিত সন্তান আতাউর রহমান খান কায়সার।
১৯৯২ সালের দিকে আওয়ামী লীগের সম্মেলনে জননেতা আতাউর রহমান খান কায়সার সাহেবেকে দলের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক নির্বাচিত করেন।জাতীয় রাজনীতির ক্যারিম্যাটিক নেতা হিসাবে প্রবেশের মাধ্যমে বীর চট্রলার মর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করতে অগ্রনি ভুমিকা পালন করেন।তাকে সবাই সততার মুর্ত প্রতীক,আদর্শিক,প্রগতিশীল,মুক্তচিন্তার ধারাক,নির্লোভ নেতা হিসাবে চিনে।মানুষের কল্যাণে রাজনীতি করা হল তার বৈশিষ্ট।কখনো অন্যায় ও দুর্নীতির সাথে আপোষ করেনি।১৯৯৬ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব হিসাবে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন।সারাদেশে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করে জাতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়।মাননীয় নেত্রী শেখ হাসিনা তাকে প্রথমে দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রদুত পরে রাশিয়ার রাষ্ট্রদুত করেন।তিনি সফল কুটনৈতিক হিসাবে বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরু দায়িত্ব পালন করেন।তার দক্ষতার জন্য দেশের বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা রাখেন।
২০০২ সালের আওয়ামী লীগের সম্মেলনে তাকে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য করেন।সেই কঠিন দুঃসময়ে বিএনপি -জামাতের বিরুদ্ধে কাজ করতে গিয়ে তিনি অনেক হামলার শিকার হন।দলের আলোকবর্তিকা হিসাবে কাজ করে যাওয়া হল তার বৈশিষ্ট।তিনি অসম সাহসী যোদ্ধা হিসেবে জাতীয় নেতা হিসেবে দলের জন্য কাজ করে ।রাজনীতির মাঠের নেতা হিসেবে সেদিন খালেদা জিয়া – জামাতের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে পতন ঘটায় কিন্তু ১/১১ মঈনুদ্দিন -ফখরুদ্দীন সরকার ৩ মাসের ক্ষমতা নিয়ে যে টালবাহানা শুরু করে দেয় তার বিরুদ্ধে লড়াই করে যাওয়া বীরের নাম জননেতা আতাউর রহমান খান কায়সার। তিনি সেদিন সভানেত্রী শেখ হাসিনার আস্থাভাজন হিসাবে এক চুল ছাড় না দিয়ে নেত্রীর নির্দেশে আন্দোলন সংগ্রামে নেতত্ব দেন।সবাই যখন রাজনীতির মাইনাস টু ফর্মুলা ব্যস্ত তখন কায়সার সাহেবে নেত্রীর পাশে ছিলেন। নেত্রীর নির্দেশে সব জায়গায় সরব উপস্থিতি থেকে সবাইকে নিয়ে নেত্রীর পক্ষে কাজ করেন।কোন লোভ লালসা তাকে আদর্শ থেকে বিচ্যুতি করতে পারিনি।জীবনের মায়া ত্যাগ করে তিনি নেত্রীর জন্য কাজ করে যায়।নেত্রী ছাড়া অন্য কোন ফর্মুলাতে তিনি যাননি শেষ পর্যন্ত জয়ী হলেন।নেত্রী কারাগারে থাকা অবস্থায় জননেতা জিল্লুর রহমান, সৈয়দ আশরাফুল ইসলামের সাথে জননেতা কায়সার সাহেবে একসাথে লড়াই সংগ্রাম করে নেত্রীকে মুক্ত করে আনতে সচেষ্ট হন।সেদিন তিনি অসম সাহসীকতার পরিচয় বহন করেছে বলে আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত।আজীবন দল তার নিকট দায়বদ্ধ।তিনি আজীবন মানুষের কাছে আদর্শ ও সততার মুর্ত প্রতীক রুপে প্রতীয়মান।
মিষ্টভাষী,সজ্জনশীল,প্রজ্ঞাবান,মেধাবী,নির্লোভ জননেতা কায়সার সাহেব আমৃত্যু আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।আওয়ামী লীগের কঠিন দুঃসময়ে তিনি ছিলেন বিশ্বস্থ ও আদর্শিক নেতা।তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি অত্যন্ত দক্ষতা ও কলাকৌশলের মাধ্যমে
নেত্রীর প্রতি আস্থাশীল হয়ে তার নির্দেশেনা পালন করেন যা ইতিহাসে সাক্ষ্য দেয়।তার প্রজ্ঞা ও কলাকৌশলের জন্য আওয়ামী লীগ এক মহাদুর্যোগ হতে রক্ষা পায়।নেত্রীর নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে আওয়ামী লীগকে রাষ্টীয় ক্ষমতায় আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখেন।চারদিকে অস্থির পরিবেশে মোকাবিলায় তার অবদান অতুলনীয়।
২০১০ সালের ২৮ আগস্ট কক্সবাজারে জননেতা ওসমান সরোয়ার আলম চৌধুরীর অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিয়ে চট্টগ্রাম ফেরার পথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি।কয়েকদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।এরপর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তাকে ঢাকায় এনে অ্যাপোলো হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয় ও পরে ৩ অক্টোবর তাকে আবারও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ২০১০ সালের ৯ অক্টোবর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জননেতা আতাউর রহমান খান কায়সার সাহেবের জীবনের পরিসমাপ্তি হয়।দলের দুর্দিনের নেতা,গণমানুষের নেতা ও দলের আস্থাশীল মানুষকে হারিয়ে আমরা এক মহান আদর্শিক মানুষকে হারালাম যা পুরণের সুযোগ নাই।মানুষ ও দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা আজও তার অভাববোধ করেন।তার আদর্শ বাস্তবায়নে আমাদেরকে এগিয়ে যেতে হবে।দল ও মানুষের জন্য তার অবদান অতুলনীয়। মানুষ আজীবন তার প্রতি অজস্র শ্রদ্ধার মানুষ হিসাবে মনের কোঠায় স্থান করে রেখেছে।জননেতা কায়সার সাহেবের স্বপ্ন সুখী, সমৃদ্ধ,সুন্দর ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ।তার আদর্শ ধারণ করে জননেত্রী শেখ হাসিনার আধুনিক বাংলা বির্নিমাণে কাজ করলে তার আত্ত্বা শান্তি পাবে।
জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখকঃ
কলামিস্ট ও সাবেক ছাত্রনেতা।
সদস্য, অর্থ ও পরিকল্পনা বিষয়ক উপকমিটি,
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
Leave a Reply