1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
দীঘিনালায় বন্ধ হওয়া মসজিদ নির্মাণ কাজ পুনরায় চালু করতে মানববন্ধন সমাজসেবক মরহুম নুরুল আলম সওদাগরের ৭ম মৃত্যু বার্ষিকী “হযরত বায়েজিদ বোস্তামী (রহ:)” রচনায়ঃ মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম (খাজা হাবীব ) “হযরত ওসমান (রাঃ)” রচনায়ঃ মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম (খাজা হাবীব ) অর্থ প্রতিমন্ত্রী ওয়াসিকা খানের সাথে আসফ নেতৃবৃন্দের ঈদ শুভেচ্ছা বিনিময় “নববর্ষের চেতনা” রচনায়ঃ মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম (খাজা হাবীব ) সিলেটে ঈদ উপহার দিলেন মনচন্দ্র সুশীলা, বিমান পটু ও রেনুপ্রভা প্রিয়রঞ্জন ফাউন্ডেশন বটতল ফাউন্ডেশন এর উপদেষ্টা ও কার্যকরী কমিটির পক্ষ থেকে ঈদের শুভেচ্ছা মাইজভান্ডারি সূর্যগিরি আশ্রম শাখার উদ্যোগে ঈদ বস্ত্র-সামগ্রী প্রদান “বাঁকা চাঁদের হাসি” রচনায়ঃ মোহাম্মদ আব্দুল হাকিম (খাজা হাবীব )

তারাবিহ নামাজ -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

  • সময় রবিবার, ২ এপ্রিল, ২০২৩
  • ১৯১ পঠিত

তারাবির রাকাত সংখ্যা শরিয়তের বিশুদ্ধ দলিল-প্রমাণ দ্বারা প্রমাণিত। গ্রহণযোগ্য সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) সাহাবায়ে কেরামকে নিয়ে বিশ রাকাত তারাবি পড়েছেন।

মাহে রমজানে রাত্রিকালে এশার নামাজের চার রাকাত ফরজ ও দুই রাকাত সুন্নতের পর এবং বিতর নামাজের আগে দুই রাকাত করে ১০ সালামে যে ২০ রাকাত নামাজ আদায় করা হয়, একে ‘তারাবি নামাজ’ বলা হয়।

আরবি ‘তারাবিহ’ শব্দটির মূল ধাতু ‘রাহাতুন’ অর্থ আরাম বা বিশ্রাম করা। তারাবি নামাজ পড়াকালে প্রতি দুই রাকাত বা চার রাকাত পরপর বিশ্রাম করার জন্য একটু বসার নামই ‘তারাবি’। দীর্ঘ নামাজের কঠোর পরিশ্রম লাঘবের জন্য প্রতি দুই রাকাত, বিশেষ করে প্রতি চার রাকাত পর একটু বসে বিশ্রাম করে দোয়া ও তসবিহ পাঠ করতে হয় বলে এ নামাজকে ‘সালাতুত তারাবিহ’ বা তারাবি নামাজ বলা হয়।

রমজান মাসের জন্য নির্দিষ্ট তারাবি নামাজ জামাতে পড়া ও সম্পূর্ণ কোরআন শরিফ একবার খতম করা সুন্নতে মুয়াক্কাদা।

তারাবি নামাজ আট নয়, বিশ রাকাত হিসেবেই প্রমাণিত। কেউ কেউ হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর ২০ রাকাত তারাবি বিষয়ক হাদিসটিকে সূত্রের বিচারে অনির্ভরযোগ্য প্রমাণ করলেও; বিশুদ্ধ সূত্রে সাহাবায়ে কেরামের আমলই প্রমাণ করে যে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) থেকে সাহাবায়ে কেরাম বিশ রাকাতের শিক্ষা পেয়েছেন। আমিরুল মুমিনীন হজরত উমর ফারুক (রা.)-এর খেলাফতকাল থেকে অবিচ্ছিন্ন কর্মধারায় এখন পর্যন্ত মক্কা শরিফের মসজিদুল হারাম ও মদিনা শরিফের মসজিদে নববীসহ সকল মসজিদে বিশ রাকাত তারাবি পড়া হয়। এ দীর্ঘ সময়ে কোথাও আট রাকাত তারাবির প্রচলন ছিল না।

সর্বপ্রথম ১২৮৪ সালে ভারতবর্ষের আহলে হাদিস আলেম আট রাকাতের ফতোয়া দিয়ে উম্মাহের ঐক্যমত্যপূর্ণ মাসয়ালায় বিভক্তি সৃষ্টি করেন। তখন অন্যান্য আহলে হাদিসরাও তার বিরোধিতা করেছে। অতঃপর আরবের কতিপয় বিচ্ছিন্ন আলেমও তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন। কিন্তু আরববিশ্বের আলেমদের বেশিরভাগই বিশ রাকাত তারাবির আদায় করেন।

হজরত উমর (রা.)-এর যুগে সাহাবিদের আমল

ইয়াজিদ ইবনে খুসাইফা (রহ.) বলেন, সাহাবি সায়েব ইবনে ইয়াজিদ (রা.) বলেছেন, সাহাবায়ে কেরাম হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর যুগে রমজান মাসে বিশ রাকাত তারাবি পড়তেন। তিনি আরও বলেন, তারা নামাজে শতাধিক আয়াতবিশিষ্ট সূরাসমূহ পড়তেন এবং হজরত উসমান ইবনে আফফান (রা.)-এর যুগে দীর্ঘ নামাজের কারণে তাদের (কেউ কেউ) লাঠিসমূহে ভর দিয়ে দাঁড়াতেন। -আস সুনানুল কুবরা ও বাইহাকি, ২/৪৯৬/৪২৮৮

অপর সূত্রে সাহাবি সায়েব ইবনে ইয়াজিদ (রা.) বলেন, আমরা হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর যুগে বিশ রাকাত এবং বিতর পড়তাম। -আস সুনানুল কুবরা, বাইহাকি- ১/২৬৭-২৬৮

তাবেঈ ইবনে আবি যুবাব (রহ.) বলেন, হজরত উমর (রা.)-এর যুগে রমজানের কিয়াম তথা তারাবি ছিল ২৩ রাকাত। -মুসান্নাফে আবদুর রাজ্জাক, হাদিস: ৭৭৩৩

হাদিসটির সূত্র বিশুদ্ধ। এতে ২৩ রাকাত দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ২০ রাকাত তারাবি ও তিন রাকাত বিতর।

তাবেঈ আবদুল আজিজ ইবনে রুফাই (রহ.) বলেন, উবাই ইবনে কাব (রা.) রমজানে মদিনায় লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত তারাবি এবং তিন রাকাত বিতর পড়তেন। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২/২৮৫/৭৭৬৬

তাবেঈ ইয়াহইয়া ইবনে সাঈদ আনসারি (রহ.) বলেন, উমর (রা.) এক ব্যক্তিকে আদেশ করেন, তিনি যেন লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত পড়েন। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২/২৮৫/৭৭৬৪

তাবেঈ ইয়াজিদ ইবনে রুমান (রহ.) বলেন, হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর যুগে লোকেরা রমজানে তেইশ রাকাত পড়তেন। -মুয়াত্তা মালিক, হাদিস: ৩৮০

হজরত আলী (রা.)-এর যুগে সাহাবিদের আমল

বিখ্যাত তাবেঈ ইমাম আবু আবদুর রহমান সুলামি (রহ.) বলেন, আলী (রা.) রমজানে হাফেজদের ডাকেন এবং তাদের একজনকে লোকদেরকে নিয়ে বিশ রাকাত পড়ার নির্দেশ দিলেন। তিনি বলেন, আলী (রা.) তাদের নিয়ে বিতর পড়তেন। -সুনানুল বাইহাকি: ২/৪৯৬-৪৯৭/৪২৯১

তাবেঈ আবুল হাসনা (রহ.) বলেন, আলী (রা.) এক ব্যক্তিকে আদেশ করেন, তিনি যেন লোকদের নিয়ে বিশ রাকাত তারাবি পড়েন। -মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা: ২/২৮৫/৭৭৬৩

আরও পড়ুন: জুমার নামাজ না পেলে কী করবেন?

উপরোক্ত বর্ণনাগুলোসহ আরও অন্যান্য বর্ণনাসমূহ এবং সাহাবি-তাবেঈনের সর্বসম্মতিক্রমে আমলের ভিত্তিতে এবং যুগ যুগ ধরে চলে আসা সম্মিলিত অবিচ্ছিন্ন কর্মের ভিত্তিতে আলেমদের অভিমত হলো বিশ রাকাত তারাবি সুন্নতে মোয়াক্কাদা। বিনা ওজরে এর কম পড়লে সুন্নতে মোয়াক্কাদা ছেড়ে দেওয়ার গোনাহ হবে।

যারা বর্তমানে আট রাকাত তারাবির প্রচার করছে, তাদের সবচেয়ে শক্তিশালী দলিল হলো বোখারি শরিফের একটি হাদিস, যা আসলে তারাবি সম্বন্ধে নয়, বরং ওই হাদিসটি হলো তাহাজ্জুদ সংক্রান্ত একটি হাদিস। তাতে বর্ণিত হয়েছে, রমজানে ও রমজানের বাইরে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) চার রাকাত করে আট রাকাত পড়তেন। অথচ আমরা জানি, রমজানের বাইরে কোনো তারাবি নেই এবং তারাবির নামাজ হলো দুরাকাত করে।

তারাবির মাসায়ালা

মাসয়ালা: বিশ রাকাত তারাবির নামাজ বালেগ পুরষ-মহিলা সবার ওপর সুন্নতে মোয়াক্কাদা। অসুস্থ ও রুগী ব্যক্তির ওপর তারাবি জরুরি নয়, তবে কোনো কষ্ট না হলে তাদেরও পড়া মুস্তাহাব। -রদ্দুল মুহতার: ১/৭৪২

মাসয়ালা: তারাবির নামাজ জামাতে আদায় করা মুস্তাহাব, একাকি আদায় করলেও আদায় হয়ে যাবে। -বাদায়েউস সানায়ে: ১/২৯০

মাসয়ালা: কারো যদি তারাবির জামাত থেকে কিছু রাকাত ছুটে যায় তাহলে বেতরের নামাজের পর তা পড়ে নিবে। -রদ্দুল মুহতার: ২/৪৪

মাসয়ালা: নাবালেগ হাফেজের পিছনে বালেগ পুরুষ মহিলা কারো জন্যই ইক্তিদা করা বৈধ নয়। -মাজমাউল আনহুর: ১/১৬৭, হেদায়া: ১/২৩৮, আল বাহরুর রায়েক: ১/৩৫৯

মাহে রমজানের রাতে তারাবি নামাজ জামাতে আদায়ের জন্য ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা প্রতিদিন মসজিদে সমবেত হন।

লেখকঃ কলামিস্ট ও প্রাবন্ধিক

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট