প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
গফুর হালী আঞ্চলিক ও আধ্যাত্ত্বিক গানের কিংবদন্তীতুল্য কালজয়ী শিল্পী
পটিয়াতে প্রত্যয়ের উদ্যোগে আয়োজিত আবদুল গফুর হালী’র ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণানুষ্ঠনে বক্তারা
আলোচনা, স্মৃতিচারণ ও গানে গানে গফুর হালীকে স্মরণ
২৩ ডিসেম্বর শুক্রবার, বিকাল ৪ টায় প্রত্যয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক একাডেমির উদ্যোগে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক, মাইজভান্ডারী ও মরমি গানের কিংবদন্তী শিল্পী আবদুল গফুর হালীর ৬ষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্মরণানুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। পটিয়া মুন্সেফ বাজারস্থ একাডেমির প্রাঙ্গণে অনুষ্টিত এই স্মরণানুষ্ঠানে আয়োজনের মধ্যে ছিল আলোচনা, স্মৃতিচারণ, সংগীত সন্ধ্যা। একাডেরি উপদেষ্টা অধ্যক্ষ আবু তৈয়বের সভাপতিত্বে ও প্রত্যয় একাডেমির সিনিয়র সদস্য শিবু মল্লিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত স্মরণানুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগীত শিল্পী ও পরিচালক সনজীত আর্চায্য। তিনি বলেন, আবদুল গফুর হালী আঞ্চলিক, মাইজভান্ডারী ও মরমি সংগীত ¯্রষ্টা। তিনি শুধু গান ও সুরের সৃষ্টি করেননি, করে গেছেন আধ্যাত্তিক চর্চাও। গুণী এই শিল্পীর সৃষ্টি আমাদের সবার কাছে তুলে ধরতে হবে। তাঁর গানের চর্চা ও প্রসারে সবাইকে আরো উদ্দ্যোগ নিতে হবে। প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বরেণ্য সংগীত শিল্পী কল্যাণী ঘোষ। তিনি বলেন, গফুর হালী নিজে আমাকে তাঁর রচিত গান আমাকে শিখিয়ে দিতেন। তাঁর নতুন গান আমাকে দিয়ে গান গাওয়ার ব্যবস্থা করতেন। তিনি চট্টগ্রামের গান নিয়ে এতটাই কাজ করেছেন যে, তাঁর কাজের মাধ্যমে চট্টগ্রামের গানের ভান্ডার কত ঋদ্ধ হয়েছে তিনি তা ইতিমধ্যেই প্রমাণ করে গেছেন। এমন গুণগ্রাহী মানুষ আমাদের বর্তমান সমাজে সচরাচর পাওয়া যায় না। তাঁর মত বিরল প্রতিভার মানুষের কোন আদর-কদর আমাদের সমাজে নেই। সারাজীবন নিরীহ নিভৃতচারী প্রচারবিমুখ এই সাধক নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন। অধ্যক্ষ আবু তৈয়ব বলেন, মননশীল চর্চার অন্যন্য নজির স্থাপন করলো প্রত্যয়। আবদুল গফুর হালীর মত গুণীদের সম্মান করে ও তার শিল্পকর্ম চর্চা করে তা বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে প্রত্যয়। একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আবদুল্লাহ ফারুক রবি বলেন, গফুর হালী পটিয়া তথা সারা বাংলাদেশের রতœ। প্রত্যয় একাডেমি তাঁর সৃিষ্টকর্ম সবার মাঝে তুলে ধরার জন্য সব সময় কাজ করে যাবে। সে জন্য প্রতিবছর আমরা তাঁর স্মরণানুষ্ঠান এবং তাঁর স্মরণে শিক্ষা, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক স্বর্ণপদক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। তিনি প্রত্যয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক একাডেমির মিলনায়তন আবদুল গফুর হালীর নামে করার ঘোষনা দেন। স্মরণানুষ্ঠানে আবদূল গফুর হালীকে নিয়ে আরো স্মৃতিচারণ ও বক্তব্য রাখেন, সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক, টিআইবি) সভাপতি অধ্যাপক অজিত কুমার মিত্র, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল মান্নান, জনতা ব্যংক ব্যবস্থাপক রোকন উদ্দিন, মাইজভান্ডারী গাউছিয়া হক কমিটি পটিয়া উপজেলার সমন্বয়কারী মো. সাইফুল ইসলাম সোহেল, শিল্পী গীতা আচার্য্য, শিশু সংগঠক আলমগীর আলম, চিত্র শিল্পী হামেদ হাসান, ম্যাজিক বাউলিয়ানা-২০১৯ চ্যাম্পিয়ন শিল্পী নয়ন শীল, শিল্পী আলাউদ্দীন কাওয়াল, একাডেমির সমন্বয়ক এমরান হোসেন রাসেল, সিনিয়র সদস্য আবদুল আল মোমেন, মোহাম্মদ সাকিব প্রমুখ। বক্তারা আরো বলেন, গফুর হালী একজন গুণী ও কালজয়ী সংগীত শিল্পী। কিন্তু তাঁর অবদানের উপযুক্ত সম্মান তাঁকে দেওয়া হয়নি। রাষ্ট্রীয় ভাবেও তাঁকে কোন সম্মানিত করা হয়নি। বক্তারা তাঁকে রাষ্ট্রীয়ভাবে মরণোত্তর সম্মাননা দেওয়ার জন্য জোর দাবি জানান। কথামালার ফাঁকে গফুর হালীর কালজয়ী গান “চলরে জিয়ারতে আউলিয়া দরবার, সোনা বন্ধু তুই আমারে, রসিক দিল কাজলা, দেখে যারে মাইজভান্ডারে, ওরে প্রেম করিলে কাঁদিতে হয়, ঢোল বাজে আর মাইক বাজে, মনেরো বাগানে ফুটিলো ফুলরে, রিক্সা চালাও রসিক ড্রাইভার, মনের কথা না বুঝিলে তাঁর লাগিয়া কাঁদো না” সহ আরো বিভিন্ন কালজয়ী গান পরিবেশন করেন সংগীত শিল্পী কল্যাণী ঘোষ, সনজীত আর্চায্য, গীতা আচার্য্য, নয়ন শীল, আলাউদ্দিন কাওয়াল, সিফাত আমিরী, মোহাম্মদ মহিউদ্দীন, শাবনুর আকতার, আলী হায়দার টিপু ও প্রত্যয় শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক একাডেমির সদস্যরা। গানের ফাঁকে অতিথিরা শিল্পীদের শুভেচ্ছা স্মারক প্রদান করেন।
Leave a Reply