চট্টগ্রাম আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য মতে, বৃহস্পতিবার দুপুর (১ জুলাই) দুপুর ১২ টা পর্যন্ত চট্টগ্রামে বৃষ্টি পাতের পরিমাণ ছিল প্রায় ১৯৫ মিলিমিটার। যা অতিভারী বৃষ্টিপাত।
এমন বৃষ্টিপাতের জেরে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই ঘরবন্দি হয়ে পড়েন মেয়র রেজাউল। এবারের বর্ষায় যা হরহামেশাই হচ্ছে। দুপুরের পর মেয়রের বাড়ি থেকে পানি নেমে গেলেও তিনি নিজ বাড়িতে বসেই দাপ্তরিক কাজ করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন মেয়রের একান্ত সচিব আবুল হাশেম।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যাচ্ছে দুই নাম্বার গেট থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত সড়ক। বদ্ধ নালা-খালের কারণে বৃষ্টির পানি নামতে পারছে না। পানি ঢুকে পড়ছে বাসা বাড়িতে।
চসিকের এক কর্মকর্তা জানান, বহদ্দারহাট পুলিশ বক্স সংলগ্ন খাল, শিক্ষা বোর্ডের সামনে চলমান আছে জলবদ্ধতা নিরসনের কাজ। সেই সাথে মেয়রের বাড়ির পাশে বসুন্ধরা কমিউনিটি সেন্টার (ফ্লাইওভারের নিচের অংশে) ঘেঁষে নালার উপর একটি গ্যাস লাইন স্থাপন করা হয়েছে। তাছাড়া বহদ্দারহাট থেকে এক কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত কাঠের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয় দোকানিরা আবর্জনা সরাসরি নালায় ফেলে দিচ্ছে। এসব কারণে বৃষ্টির পানি নামতে বাঁধা পাচ্ছে সেই এলাকায়। সহজেই ডুবে যাচ্ছে মেয়রের বাসভবনসহ আশপাশের এলাকা।
স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর এম আশরাফুল আলম সিভয়েসকে বলেন, ‘গত রাত থেকে টানা বৃষ্টিতে মেয়র মহোদয়ের বাড়িতে পানি উঠে গেছে। চাক্তাইখালসহ বিভিন্ন খালের মুখে স্লুইসগেট নির্মাণের কাজ চলছে তাই পানি নামতে পারছে না।’
ওই এলাকার পানি নামতে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে আমরা নিয়মিত পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান পরিচালনা করছি। ১৫ দিন আগেও অভিযান পরিচালনা করেছি। সব ক্লিয়ার আছে।’
নালায় গ্যাস লাইনের স্থাপনের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘গত বছর রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে রিদম স্কয়ার ক্লাব থেকে যমুনা ক্লাবের পর্যন্ত একটা ড্রেন তৈরী করেছে। সেখানে ভেতরে একটি ৫-৬ ইঞ্চির একটি গ্যাস লাইন আছে। বিভিন্ন জায়গায় ওয়াসার লাইনও আছে। অথচ গত বছর ড্রেনটি করার সময় আমি নিজে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলাম। কিন্তু ১৫-২০ দিন পরে সবার অগোচরে কাজ করেছিল ওই ঠিকাদার। সেখানে তারা ড্রেন করেছে কিন্তু পানি যাওয়ার রাস্তা রাখেনি। ড্রেনজুড়ে গ্যাসলাইন ও ওয়াসার লাইন।’
মেয়রের একান্ত সচিব মো. আবুল হাশেম সিভয়েসকে জানান, সকালের দিকে নগরের জলাবদ্ধতায় নগরবাসীর খোঁজ নিতে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন মেয়র রেজাউল। কিন্তু নিজেই পানি বন্দি হয়ে পড়ায় বাসা থেকে বেরই হতে পারেন নি তিনি।
ওই এলাকার নালার উপর গ্যাস লাইন এবং বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘যেখানে যেখানে এ ধরণের প্রতিবন্ধকতা আছে সেগুলো অপসারণ করা হবে। এগুলো উচ্ছেদে আমরা চেষ্টা করছি। স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরও চেষ্টা করছেন।’
এদিকে চট্টগ্রাম প্রধান আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর ১২ টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় ১৯৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘন্টায় ঘন্টায়ও চট্টগ্রামের কিছু কিছু এলাকায় মাঝারি থেকে ভারী কিংবা অতিভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে বৃষ্টিপাতের তীব্রতা কমে যেতে পারে।’
Leave a Reply