1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০১:২২ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
চমেক হাসপাতালের নতুন পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ তসলিম উদ্দীন চট্টগ্রাম নগরীর সিএমপির ইপিজেড থানা পুলিশের অভিযানে (১০) জন, জুয়াড়ি গ্রেফতার। মোরেলগঞ্জের নিশানবাড়িয়ায় ইউপি সদস্যর জমি গভীর রাতে দখল ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলো ১৪২ দেশ, সর্বশেষ জ্যামাইকা পটিয়ার সংসদ সদস্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব মোতাহেরুল ইসলাম চৌধুরী এমপির জন্মদিন উদযাপন করলেন পটিয়া উপজেলা কৃষকলীগ। বঙ্গবন্ধু মানব কল্যাণ পরিষদ এর চট্টগ্রাম বিভাগের কমিটি ঘোষণা মাদকের ভয়াল থাবায় গ্রাস তরুন প্রজন্ম, সর্বোচ্চ ঝুঁকিতে পথশিশুরা-মোহাম্মদ আলী ইপিজেড থানা কমিউনিটি পুলিশিং এর উদ্যোগে আইন শৃঙ্খলা ও কিশোর গ্যাং প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত চট্টগ্রামে র‍্যাবের নামে চাঁদা আদায়, গ্রেপ্তার ৪ বেলখাইন স্পোটিং ক্লাবের অলনাইট অলিম্পিক ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ সম্পন্ন

ফকির থেকে পরিবহনের চাঁদাবাজ, অতপর কোটিপতি অলি

  • সময় রবিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২২
  • ৪৯৮ পঠিত

পলাশ সেন, চট্টগ্রাম মহানগর প্রতিনিধি:

দুঃখ-কষ্টে অলির দিন কেটেছে একসময়। কোনো চাকরি পাবেন- এমন লেখাপড়া ছিল না। তাই পেটের তাগিদে বন্দরনগরী চট্টগ্রাম ছুটে আসেন অলি। চট্টগ্রামে আসেন ছেঁড়া প্যান্ট-শার্ট ও মাত্র দশ টাকা পুঁজি নিয়ে। এখন তিনি হঠাৎ কোটিপতি। মাত্র কয়েক বছরে চট্টগ্রামে গড়েছেন প্রায় ৮০/৯০ লক্ষ টাকার সম্পদ। অলির রয়েছে একাধিক টেম্পু,ট্রাক, মাইক্রোবাস, নিবন্ধনহীন একটি মোটরসাইকেল ও একাউন্ট ভর্তি টাকা।

জানা গেছে, গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে অলি নোয়াখালী জেলার ১নং চরজব্বর ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করেন। এছাড়া তার গ্রামের বাড়িতে একাধিক মাছের বিশাল প্রজেক্ট ও পুকুর থাকার খোঁজ পাওয়া গেছে। তার এখন অনেক সম্মান। তার এই সম্মানার্থে তার সাথে প্রতিদিন দেখা করতে আসেন কিছু নামধারী কথিত সাংবাদিক। যারা তাকে অলি সাহেব বলেই সম্বোধন করেন। বলছি,চট্টগ্রাম হালকা মোটরযান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক মোঃ অলি উদ্দীনের কথা। যার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম নগরীর আকবর শাহ ও চকবাজার থানার নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন স্থানে পরিবহনে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এবিষয়ে দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার প্রতিনিধি ড্রাইভার সেজে অলি উদ্দীনকে মুঠো ফোনে কল দিলে তিনি পরিচয় জানতে চান। সাংবাদিক জুবাইর তাকে ট্রাকের ড্রাইভার পরিচয় দিলে তিনি বলেন, হে’দিনও তো আমি বক্করের গাড়ি ধইরা কট লইছি। শহরের পুলিশগুলো কেমন জানতে চাইলে তিনি আরও বলেন, “আর থানাগুলা ভালা, ঐ বায়েজিদ-মাইজিদগুলা ঐ দেহেন না আপনারারে ধইরা টেহা-পইসা লইয়া লায়। আই এগিন পুন্দাই ন।” পরে পুনরায় সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহন নেতা বলেন, “অলি উদ্দিনকে আমি খুব ভাল করেই চিনি। তিনি মাত্র দশ টাকা নিয়ে প্রথম চট্টগ্রাম আসেন। এসেই পুরাতন রেলওয়ে স্টেশনে থাকতো এবং সেখানে প্রায় এক সপ্তাহের মতো ভিক্ষাবৃত্তির কাজ করেছিল। এরপর ভিক্ষাবৃত্তি ছেড়ে কুলির কাজ শুরু করে। তারপর চোরা মার্কেটের বিচরণ। তারপরই পুলিশের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে চকবাজার ও আকবর শাহ থানাসহ বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি শুরু করেন। এখান থেকেই উত্থান আজকের এই অলির। সব মিলে এখন সে প্রায় কোটি টাকার মালিক।”
আরও জানা যায়, রেজিস্ট্রেশন বিহীন মোটরসাইকেলটি তার নয়। অলি নিজেই বলে বেড়ায় মোটরসাইকেলটি তাকে আকবর শাহ থানার ওসি উপহার দিয়েছেন। তাই এই নাম্বার বিহীন মোটরসাইকেলটি ট্রাফিকদের চোখে পড়ে না। এই মোটর সাইকেলটি ব্যবহার করেই তিনি চাঁদার টাকা তোলেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়। চাঁদার টাকা তুলতে আকবর শাহ থানা এলাকায় তার ব্যক্তিগত অফিস ও নিজস্ব জনবল রয়েছে যারা তার নেতৃত্বে অর্থ কালেকশন করেন। তার চাঁদার খাতে মূল টার্গেট গাছের পরিবহণ। তবে,চকবাজারে তার কোন নিজস্ব অফিস নেই বলে খবর পাওয়া যায়। ঐ অফিস (আকবর শাহ) থেকেই তিনি চকবাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। সপ্তাহখানেক আগে তার চাঁদাবাজি নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে একাধিক নিউজ প্রকাশিত হয়। যদিও আশানুরূপ কোন ফল পাওয়া যায়নি। কৌশল পরিবর্তন করে তিনি এখনো তার কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে যাচ্ছেন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এখন তিনি কোন স্পটে সরাসরি জান না। কর্মী দিয়েই অর্থ আদায় করে নেন তিনি।

অলি উদ্দিন কোন সূত্রে দুই থানার ক্যাশিয়ার মুঠোফোনে জানতে চাইলে চকবাজার থানার ওসি, দৈনিক আলোকিত প্রতিদিন পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মো.জুবাইরকে তার সাংবাদিক পরিচয়পত্র হোয়াটসঅ্যাপে দিতে বলেন এবং চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সদস্য কিনা তা জানতে চান। পুনরায় কল দিয়ে ক্যাশিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রশ্নটি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

আকবর শাহ থানার অফিসার ইনচার্জ বলেন, “থানার ক্যাশিয়ার বলতে কিছু নেই। আর আমি বা আমরা অলি উদ্দীন নামের কাউকেই চিনি না।”

খোলস পাল্টানো পটু এই অলি উদ্দীন সম্পর্কে বিভিন্ন সূত্রে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পরিবহন খাতে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলতে চট্টগ্রাম হালকা মোটর যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠনে যোগ দেন তিনি। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম হালকা মোটরযান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের পদও পান অর্থ সম্পাদক। আর এতে তার ভালোই হয়েছে। থানার ক্যাশিয়ার পরিচয়ে যখন চাঁদাবাজি করতে যান তখন কেউ চাপ প্রয়োগ করলে বলতে পারেন আপনি ভুল শুনেছেন, আমি চট্টগ্রাম হালকা মোটর যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের ক্যাশিয়ার।পরিবহন সেক্টরে সে যেন মধুর হাঁড়িই পেয়েছেন।

দুই থানার ক্যাশিয়ার ও সংগঠনের অর্থ সম্পাদক পদ ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা চাঁদা আদায় করছেন তিনি। চাঁদাবাজির মাধ্যমে কোটিপতি বনে গেলেও বেশভূষায় বোঝার মত উপায় নেই। গরিবি হাল বোঝাতে, সব সময় তার গায়ে থাকে গরিবি পোশাক। বর্তমানে নগরীর মাদার বাড়ি এলাকায় একটি বিলাসবহুল বহুতল ভবনে থাকেন তিনি।

সকল তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে অলির বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করলে বিভিন্ন থানার সোর্স ও অপ-সাংবাদিকদের দ্বারা সমঝোতার চেষ্টা করেন। সমঝোতা না করলে মাইর-ধর করার লক্ষ্যে একই দিনে অলি উদ্দিন ছেলেপুলে নিয়ে সাংবাদিক জুবাইরকে শেরশাহ বাংলা বাজারে খুঁজতে যান। যার একটি অডিও ক্লিপ আমাদের পত্রিকা অফিসে রয়েছে। তাই জীবনের নিরাপত্তার স্বার্থে দৈনিক আলোকিত প্রতিদিনের বিশেষ প্রতিনিধি আদালতের শরণাপন্ন হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি দায়ের করেন।

শ্রমিকদের পক্ষেও তার বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ। শ্রমিকরা জানান, ২০২০ সালে কোভিড-১৯ চলাকালে পাহাড়তলীতে
আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ দেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তখন অলি উদ্দিন আমাদের নামের তালিকা দিয়ে ত্রাণের প্যাকেটগুলো আত্মসাৎ করেন। এই বিষয়ে আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাই। তার বিরুদ্ধে এখন নিরীহ শ্রমিকদের অভিযোগই নয়, অভিযোগ আছে স্বয়ং সংবাদকর্মীদেও। তার অপকর্মের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সাংবাদিকগণ তার মতামত জানতে চান। তখন তিনি সংবাদকর্মীদের হুমকি প্রদান করেন। যেই নিউজ করবে তার বিরুদ্ধেই মামলা করবেন তিনি। কথায় কথায় দেশের প্রতিটি সংবাদকর্মীর যোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তিনি বলেন, “দেশের প্রায় সাংবাদিকই অপসাংবাদিক। টাকা দিয়ে প্রায় সাংবাদিককেই কেনা সম্ভব।

তার অপকর্মের বিষয়ে আরো জানতে চাইলে,চট্টগ্রাম হালকা মোটর যান চালক শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি (রেজিঃ নং ২২৬০) মোঃ সেলিম মিয়া বলেন, “অলি উদ্দিন যদি আমাদের সংগঠনের নাম ভাঙ্গিয়ে কোথাও চাঁদাবাজি করেন কিংবা অপকর্ম করেন তার দায়ভার সংগঠন নিবে না এবং অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে আমরা তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট