1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪, ১২:৪৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
ওষখাইনীরি নূরীয়া বিষু দরবার শরীফেখাজা শাহ নূর দরবেশ মাওলা (রহ.) এর বার্ষিক উরস শরীফ উদযাপন আল্লাহু আল্লাহু যিকিরের ধ্বনিতে মুখরিত মাইজভাণ্ডার শরিফ এলাকা সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.)’র ৩৬তম উরস্ শরিফের আনুষ্ঠানিকতা শুরু মুহাম্মদ লিয়াকত আলী পটিয়া উপজেলা ক্রীড়া সংস্থার বিশেষ প্রতিনিধি সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় সংবর্ধনা ও বৃক্ষরোপন কর্মসূচি উদ্বোধন পটিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি নুরুল ইসলাম আর নেই  বিশ্ব শিশু দিবস ও শিশু অধিকার সপ্তাহ উপলক্ষ্যে দুই টাকায় স্কুলের আলোচনা সভা আমিরাতে যে ৪৩টি দেশের জন্য কোনো ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার প্রয়োজন নেই পাহাড়তলীতে রাস্তার পাশে মিলল হাত বাধা অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ পেকুয়ায় অপহৃত স্কুল শিক্ষকের নিথর দেহ মিললো নিজ পুকুরে শাহানশাহ মাইজভান্ডারি (ক:) এর কন্যা শাহজাদী সৈয়দা জেবুন নাহার বেগমের ইন্তেকাল জেএমসেন হলে শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত ও গোলমাল সৃষ্টির ঘটনায় দুইজন গ্রেফতার।

যশোরের বাঘুটিয়া ঘোষ বংশের “রাজ রাজেশ্বর” মন্দির।

  • সময় রবিবার, ৩১ জুলাই, ২০২২
  • ১৬২ পঠিত

প্রণব মন্ডল:
কয়েক বছর আগের কথা।শ্রাবনের শেষ বিকেলের বর্ষার জল ভিজিয়ে দিয়েছে মন্দিরের পিছনে নারকেল গাছকে৷ সামনের চত্বরে জমে থাকা বড়বড় ঘাস৷সেদিনও রোদ নেভা বিকেলে অল্পবয়সি দু’পাঁচজন খেলা জমায়৷ একটা দুটো গরু জাবর কাটে মস্ত আমগাছটার ছায়ায়৷ সন্ধ্যা ঘন হয়ে আসার আগেই আলো নেভা মন্দিরের আনাচ কানাচে ফিসফিসে বাতাসে ঝাঁক বাঁধা মশার আলাপ জমে উঠেছে।

বাড়ীর কাছেই মন্দির।সেদিন আমার আলাপ হয়েছিল মন্দিরের বৃদ্ধ পুরোহিত আর তাঁর স্ত্রীর সাথে।লম্বা- ফর্সা ধুতি পড়া বৃদ্ধ। শুনেছিলাম তাঁর গল্প-

যশোরের বাঘুটিয়া ঘোষ জমিদার বংশের
“রাজ রাজেশ্বর” মন্দিরের কুলো পুরোহিত তাঁরা। দেশভাগের পর জমিদার বাড়িতে কেউ তেমন ছিলেন না,কিন্তু রাধামাধবের সেবাইত হয়ে তাঁরা সেখানে ছিলেন। ১৯৭১সালের পরে তাঁরা চলে আসেন। সব ফেলে আসলেও সাথে নিয়ে আসেন পঞ্চ- বিগ্রহ।

ঘোষ বংশের মানুষদের সাথে যোগাযোগ হলে তাঁরা বারাসাতের বরিশাল কলোনী অঞ্চলে এই জায়গা কিনে নতুন মন্দির বানান। নাম রাখেন “যশোর বাগুটিয়া রাধা গোবিন্দ” মন্দির। সেও অনেক দিন হয়ে গেল।

বৃদ্ধ পুরোহিত সেদিন পাঠশালার বন্ধু গফুরের গল্প বলেছিলেন।পাঠশালার পুরানো দিন- দুহাতের করগুনেও হিসাব মেলাতে কষ্ট৷ শুধু তাঁর মনে পড়ে যায় গফুরের নৌকায় দুই বালক, যাদের পড়নে খাটো ধুতি। গুরুমশায় ছিলেন তাঁর দাদু। তর্করত্ন- সাত্ত্বিক দ্বিজ, যিনি সপাকেই আহার করতেন- নিরামিষ৷ কারো প্রতি তাঁর বিদৃষ্ট মনোভাব ছিল না৷ তাঁর মৃত্যুতে গ্রাম এবং ভিনগাঁয়ের মানুষও কষ্ট পেয়েছিল স্বজাততো বটেই, অন্য সম্প্রদায়ের কতশত মানুষ৷তারপরেই সব পাল্টে যায়….।
সেদিন সন্ধ্যা আরতী দেবার সময় হয়ে আসে। ছেলের দেওয়া মুঠোফোনে সময় দেখেন তিনি৷ সময় তো কতই চলে গেল৷ একের পর এক রাজনৈতিক পরিবর্তন তাঁর জীবনেও এনেছে আর এক জীবন৷

একরাতে গফুর অন্ধকারে বলল, চল ঠাউর৷ ওপার থেকে অন্ধকারে নৌকায় করে, পায়ে হেঁটে চলে আসলেন একদিন এপারে।দুই বন্ধু দু’জনের হাত ধরে অনেক সময় চুপচাপ দাঁড়িয়ে ছিলেন৷ তারপর গফুরই প্রথম বলল, সাবধানে বাকীপথ যাস ঠাউর৷
তার গলার স্বর কেমন ধরে এসেছিল।

গল্প শেষের দিকে – তিনি বলেন
কতদিন হয়ে গেছে – খুব ইচ্ছে করে
একবার দেশগাঁয়ে যেতে৷ শীতের সকালে রসের গন্ধ কবে মুছে গেছে৷ দূর সম্পর্কের একভাই এসেছিল একবার বেড়াতে৷ তার সাথে গল্পের সময় গন্ধটা শেষবার পেয়েছিলেন৷ সঙ্গে তার মেয়ে ছিল ৷ হেসে বলেছিল এখানের কথা সবাই বলে, বেড়াতে এলে বলা হয় “খেয়ে এলেন, না যেয়ে খাবেন”?
তীব্র একটা ব্যথা অনুভব করেছিলেন বুকে৷ ভাইকে ঢাকা থেকে একবার যশোরে গিয়ে গফুরের খোঁজ দিতে বলেছিলেন৷

পুরোহিত মশাইয়ের স্ত্রী শূন্য চাএর কাপ তুলে নিয়ে যাবার সময় বলেন – কোনকোন দিন শরীর ভালো থাকেনা৷ মন্দিরের ঘন্টা বাজাতে ভুল হয়৷ শঙ্খ দু’বার বেজে ওঠে৷ প্রসাদ গুছিয়ে দেবতার সামনে দিতে গিয়ে মন বশে রেখে আবার পূজা শুরু হয়৷
ওনার কথায় শুদ্ধ যশুরে টান। কিছুদিন পর ওনার স্ত্রী মারা গেছেন শুনেছিলাম।

তার পর চলে গেছে অনেক শ্রাবন। নানা কারণে যাওয়া হয় নি ওখানে।এবার গিয়েছিলাম একদিন।
শ্রাবনের শেষ বিকেলের বর্ষার জল আগের মতো ভিজিয়ে দিয়েছে মন্দিরের পিছনে নারকেল গাছকে৷ সামনের চত্বরে জমে থাকা বড়বড় ঘাস৷রোদ নেভা বিকেলে অল্পবয়সি দু’পাঁচজন খেলছে।একটা দুটো গরু জাবর কাটে মস্ত আমগাছটার ছায়ায়৷ সন্ধ্যা ঘন হয়ে আসা মন্দিরে
কাউকে দেখতে পাই নি।

নতুন কোনো লেখক গফরা আর পুরোহিতের গল্প লেখে না। আসলে তেমনটা লেখার মতন আর কোনো অবশিষ্ট নেই।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট