1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
সোমবার, ১১ অগাস্ট ২০২৫, ০১:৫৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
চট্টগ্রামে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা: অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও কিশোর গ্যাং দমনে কড়া পদক্ষেপ এশিয়ান নারী ও শিশু অধিকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে স্বাধীন বাংলা মডেল স্কুলে পরিবেশ সচেতনতা বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত ফাদার্স এইড জুনিয়র ইসলামিক স্কলারস ট্যালেন্ট সার্চ ২৪-বৃত্তি হস্তান্তর তুহিন হত্যায় জবাবদিহি চায় সাংবাদিক সমাজ কর্নফুলীর মোহনায় নৌকাডুবে নিখোঁজ ৩ জেলের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে কোস্ট গার্ড রাজধানীতে সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণে দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার। খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধারের পর হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে দুইজনকে গ্রেপ্তার বর্ণাঢ্য আয়োজনে এরাবিয়ান লিডারশীপ মাদ্রাসায় এ+ সংবর্ধনা ও পুরস্কার বিতরণ যারা আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্য কাজ করেন তাদের মৃত্যু নেই – মুহাম্মদ শাহ আলম বাঘাইছড়ি মিনি স্টেডিয়াম শুভ উদ্বোধন

অধ্যাপক ড. কাজী মোতাহার হোসেন — এক অসাধারণ মেধা ও মননের প্রতিভা: সোহেল মোহাম্মদ ফখরুদ-দীন

  • সময় শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫
  • ১১০ পঠিত

অধ্যাপক ড.কাজী মোতাহার হোসেন একজন বিজ্ঞানী, পরিসংখ্যানবিদ, সাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ এবং বাংলাদেশের জাতীয় ছিলেন । একজন চৌকস দাবারু হিসেবেও তাঁর যথেষ্ট খ্যাতি ছিল। তিনি ছিলেন কবি কাজী নজরুল ইসলামের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু; নজরুল তাঁকে আদর করে ‘মতিহার’ বলে সম্বোধন করতেন।
বিখ্যাত এই মনীষীর জন্ম ১৮৯৭ সালের ৩০ জুলাই কুষ্টিয়ার কুমারখালি উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাতুলালয়ে। তাঁর পৈতৃক নিবাস রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার বাগমারা গ্রামে। তাঁর বড় কন্যা জোবায়দা মির্জা ছিলেন ঢাকা কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল। আরেক কন্যা ওবায়দা সাদ ময়মনসিংহ ক্যাডেট কলেজের ভাইস প্রিন্সিপাল ছিলেন। দেশের খ্যাতিমান রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী ড. সনজীদা খাতুন, ফাহমিদা খাতুন, মাহমুদা খাতুন এবং জনপ্রিয় লেখক কাজী আনোয়ার হোসেন তাঁরই সুযোগ্য সন্তান।
অধ্যাপক ড. কাজী মোতাহার হোসেনের শিক্ষাজীবন শুরু হয় কুষ্টিয়াতেই। ১৯০৭ সালে নিম্ন প্রাইমারি ও ১৯০৯ সালে উচ্চ প্রাইমারি পাস করেন মেধার স্বাক্ষর রেখে। ১৯১৫ সালে কুষ্টিয়া মুসলিম হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ভর্তি হন কলকাতা প্রেসিডেন্সি কলেজে, যেখানে তাঁর শিক্ষক ছিলেন প্রখ্যাত বিজ্ঞানী আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়। ১৯১৭ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক এবং ১৯১৯ সালে ঢাকা কলেজ থেকে পদার্থবিজ্ঞানে অনার্সসহ বিএ পরীক্ষায় বাংলা ও আসাম অঞ্চলে প্রথম স্থান অর্জন করেন। ১৯২১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ঢাকা কলেজ থেকে এমএ পাস করেন পদার্থবিজ্ঞানে দ্বিতীয় শ্রেণিতে প্রথম স্থান পেয়ে। এরপর ১৯৩৮ সালে ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিস্টিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে পরিসংখ্যান বিষয়ে ডিপ্লোমা লাভ করেন এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
পেশাজীবনে ড. মোতাহের হোসেন ১৯২১ সালে ঢাকা কলেজে ছাত্র থাকাকালীন সময়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে ডেমনেস্ট্রেটর হিসেবে কাজ শুরু করেন। ১৯২৩ সালে সহকারী প্রভাষক হন। ১৯৪৮ সালে তাঁরই উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিসংখ্যানে এমএ কোর্স চালু হয় এবং তিনি সেই নতুন বিভাগে যোগ দেন। ১৯৫১ সালে তিনি রিডার এবং ১৯৫৪ সালে অধ্যাপক হন। তিনি গণিত বিভাগেও ১৯৪৯ থেকে ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত শিক্ষকতা করেন। ১৯৬১ সালে অবসর গ্রহণ করলেও ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত সংখ্যাতিরিক্ত অধ্যাপক হিসেবে যুক্ত ছিলেন। পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট (ISRT)–এর তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক। ১৯৬৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ১৯২৬ সালে তিনি কাজী আব্দুল ওদুদ, সৈয়দ আবুল হোসেন ও আবুল ফজলের সঙ্গে ‘মুসলিম সাহিত্য সমাজ’ প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের মুখপত্র ‘শিখা’ পত্রিকা তিনি সম্পাদনা করেন। তিনি বাংলা একাডেমির একজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এবং বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সমাজবিষয়ক বহু বই ও প্রবন্ধ রচনা করেছেন। সুবিখ্যাত এই জ্ঞানতাপস ও বিজ্ঞানী ১৯৮১ সালের ৯ অক্টোবর মৃত্যুবরণ করেন।
অধ্যাপক ড.কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন এক বহুমাত্রিক একজন প্রতিভা। তিনি যেমন বিজ্ঞানের জটিল সমীকরণে পারদর্শী ছিলেন, তেমনি সাহিত্য-সংস্কৃতির মণ্ডপে ছিলেন এক আলোকবর্তিকা। তাঁর জীবন ও কর্ম আগামী প্রজন্মের জন্য এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। ২০২৫ সালে ৩০ জুলাই আজকের দিনে তাঁকে বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।

লেখক : সোহেল মোহাম্মদ ফখরুদ-দীন, সভাপতি, মুসলিম হিস্ট্রি এসোসিয়েশন, বাংলাদেশ।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট