1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০১:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনামঃ
টরন্টোর বাংলাদেশি মাহিন শাহরিয়ার এখন মার্কিন ICE হেফাজতে হালিশহর মুন্সীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ,কৃতি শিক্ষার্থী সংবর্ধনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-২০২৫ ভৈরবে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উদযাপন: বিতর্ক প্রতিযোগিতা, র‍্যালি ও সমাবেশ সীতাকুণ্ডে দুই পৃথক ঘটনায় কৃষক দল নেতাসহ আহত ৩ বাঘাইছড়িতে সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত ও বৈষম্যের প্রতিবাদে মানববন্ধন খ্যাতি পাড়া মানিক বিহারে অনুষ্ঠিত হলো দানরাজা, দান শ্রেষ্ঠ ও দানোত্তম শুভ কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠান । পটিয়া ই- কমার্স জোনের ৫ম বর্ষপূর্তিতে ব্যবসায়ী নুরুল আলম সংবর্ধিত। চট্টগ্রাম মহানগর জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর সংবাদ সম্মেলন। সিএমপির চার থানার ওসি পদে রদবদল ফুলপুরে দাদীকে হত্যা ও নাতনিকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষক খুনি

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা, খড়গ ঝুলছে সংবাদকর্মীদের উপর

  • সময় বৃহস্পতিবার, ২১ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৯৯ পঠিত

অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা, খড়গ ঝুলছে সংবাদকর্মীদের উপর

আনিছুর রহমান (চট্টগ্রাম):
সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের হেনস্তা করার একাধিক ঘটনা ঘটেছে। ডবলমুরিং থানায় সাংবাদিক হেনস্তা, তথ্য সংগ্রহের জন্য চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানায় গেলে যায়য়ায়দিন পত্রিকায় সাংবাদিককে হেনস্তা করে পুলিশ। এ সময় ওই সাংবাদিককে থানায় কিছুক্ষণ আটক, অন্যজনকে হেনস্তার খবর সোশ্যাল মিডিয়া এবং অনলাইন পত্রিকায় ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় নিন্দার ঝড়।  সাংবাদিকের দাবি, পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় তাকে হেনস্তা ও হয়রানি করা হয়েছে। এই ঘটনা পেশাগত দায়িত্ব পালনে সাংবাদিকদের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ বলে মনে করছেন অনেকে।

এর আগে পুলিশের সিএমপি ট্রাফিক বিভাগের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল২৪ সংবাদ প্রচার করে

ওই সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়ে সিএনপি কমিশনার হাসিব আজিজ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে হুমকিস্বরূপ বার্তা দেন। প্রতিবাদও হুমকি স্বরুপ বার্তা প্রদানের কয়েক ঘন্টার মধ্যে ডাবলমুরিং থানায় পেশাগত দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় যায়যায়দিন পত্রিকার সাংবাদিককে বিশ মিনিট থানা হাজতের লকাবে আটক রেখে অপর জনকে হেনস্থা করা হয়।

ঘটনা গুলোর মধ্য দিয়ে চট্টগ্রামে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার পরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন তৈরি করেছে। সাংবাদিক সংগঠনগুলো এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে বিষয়ে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তারা অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।

সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত দপ্তরগুলোতে দুর্নীতি, অনিয়ম ও ঘুষ লেনদেনের মতো সংবেদনশীল বিষয়গুলো জনসম্মুখে আনার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা প্রায়শই এক দুরূহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। ২০০০ সাল থেকে শুরু করে গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে, অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা এক ধরনের অদৃশ্য খড়গের নিচে কাজ করে যাচ্ছে। তথ্য অধিকার আইন ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো বিভিন্ন আইনি কাঠামো ব্যবহারের মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মুক্ত সাংবাদিকতার ওপর এক মারাত্মক চাপ সৃষ্টি করেছে।

গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্নীতি নিয়ে সংবাদ প্রকাশের কারণে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মানহানি, রাষ্ট্রদ্রোহিতা, এবং তথ্যপ্রযুক্তি আইনে মামলার সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। এসব মামলার অধিকাংশই হয়রানি ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের উদ্দেশ্যে করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে, স্থানীয় পর্যায়ের সাংবাদিকরা বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকেন, কারণ তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত মামলা দায়ের করা এবং শারীরিকভাবে হেনস্তা করার ঘটনাও ঘটে।

২০১৮ সাল থেকে কার্যকর হওয়া ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন (ডিএসএ) সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের অন্যতম প্রধান হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। আইনটির বিভিন্ন ধারার অপব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর প্রকাশকারী সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে শত শত মামলা হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে, এসব মামলায় সাংবাদিকদের মাসের পর মাস কারাবাস করতে হয়েছে, যা তাদের পেশাগত জীবনে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৯ সালে একটি জাতীয় দৈনিকের এক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশের জেরে একাধিক মামলা করা হয়েছিল। পরবর্তীতে তিনি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মুক্তি পেলেও, তার পেশাগত জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছিল।

শুধুমাত্র ডিএসএ নয়, এর আগে তথ্যপ্রযুক্তি আইন (আইসিটি) এবং দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারাও সাংবাদিকদের দমাতে ব্যবহৃত হয়েছে।  বিভিন্ন সময়ে সংবাদকর্মীরা দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে তাদের উপর হামলার ঘটনাও ঘটেছে।

এই আইনি হয়রানি ও শারীরিক নির্যাতনের কারণে অনেক সাংবাদিক আত্মনিয়ন্ত্রণ (self-censorship) করতে বাধ্য হচ্ছেন। তারা সংবেদনশীল বিষয়গুলো এড়িয়ে চলছেন, যা সমাজে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে, যখন দুর্নীতি ও অনিয়মের খবর প্রকাশিত হয়, তখন সংশ্লিষ্ট সরকারি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইনি পদক্ষেপ নেয়, যা প্রমাণ করে যে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সত্যকে দমিয়ে রাখার প্রবণতা এখনও বিদ্যমান।

সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো বহু বছর ধরে এই হয়রানির বিরুদ্ধে সোচ্চার। তারা বারবার আইন সংশোধন এবং সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য একটি শক্তিশালী আইনি কাঠামো তৈরির দাবি জানিয়ে আসছে। মুক্ত গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের জন্য সাংবাদিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অপরিহার্য।
গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দুর্নীতি আরও গভীর হবে এবং সাধারণ মানুষের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে। দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার কোনো বিকল্প নেই, আর তাই সাংবাদিকদের সুরক্ষায় রাষ্ট্রকে আরও আন্তরিক হতে হবে।

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট