1. news@dainikchattogramerkhabor.com : Admin Admin : Admin Admin
  2. info@dainikchattogramerkhabor.com : admin :
বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০৪:১৮ অপরাহ্ন
শিরোনামঃ
সড়ক পরিবহন শ্রমিক দলের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপদেষ্টাকে চিঠি প্রদান করা হয়। “আজকের শিক্ষার্থীরাই গড়বে আগামীর নেতৃত্ববান বাংলাদেশ”— চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ডা.শাহাদাত হোসেন সিএমপি’র ‘ওপেন হাউজ ডে’-তে জনতার ঢল: অভিযোগ শুনেই ব্যবস্থা নিলেন পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ চট্টগ্রাম-১৩ আসনে মনোনয়ন পেলেন সরওয়ার জামাল সীতাকুণ্ডে জনপ্রিয় নেতার মনোনয়ন প্রদানের দাবীতে বিএনপির জরুরি সভা সুকণ্ঠ সংগীত বিদ্যার্থী পরিষদ বাংলাদেশ এর নবগঠিত কমিটির অভিষেক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে বিএনপির প্রার্থী মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী (পাপ্পা)। গণ অধিকার পরিষদের ২১ দফা কর্মসূচি নিয়ে পটিয়ায় ডাঃ এমদাদুল হাসানের গণসংযোগ এপেক্স ক্লাব অব সাতকানিয়ার ডিনার মিটিং ও সেলাই মেশিন বিতরণ চট্টগ্রাম বিজয়ের ৩৫৯ বছর পূর্তি : বুজুর্গ উমেদ খাঁর স্মরণে চট্টগ্রাম ইতিহাস উৎসব সম্পন্ন

খোট্টা ভাষার জনপদ -লায়ন মোঃ আবু ছালেহ্

  • সময় শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫
  • ২৮৬ পঠিত

সম্পাদকীয়ঃ

চট্টগ্রামের পতেঙ্গা এলাকার ১৫ নম্বর ঘাট। নদী পারাপারের জন্য এখানে দিন-রাত ভিড় লেগেই থাকে। নগরের সবচেয়ে কাছের দুই উপজেলা আনোয়ারা ও কর্ণফুলীর বাসিন্দারা এই ঘাট ব্যবহার করেন। ঠিক বাংলা বা স্থানীয় চট্টগ্রামের ভাষা নয়। তাঁদের নিজস্ব ভাষা। সংলাপগুলো এমন, ‘এহোন কিসকা নাম্বার?’, ‘আজ পাসিন্দার কম’, ‘আমরাবি ইনকাম কম উয়াঁই’, ‘সাইনকো পাসিন্দার বারেগা।’
এটা তাঁদের মাতৃভাষা, খোট্টা। অনুবাদ হলো এই কথোপকথনের। ‘এখন কার সিরিয়াল’, ‘আমার ইনকাম কম হয়েছে’, ‘সন্ধ্যায় যাত্রী বাড়বে’।
১৫ নম্বর ঘাটের অনেক মাঝির বাড়িই আনোয়ারা উপজেলার উত্তর বন্দর গ্রামে। ওই গ্রামের ১০ হাজার বাসিন্দা খোট্টা ভাষায় কথা বলেন। ৪০০ বছর ধরে ভাষাটি টিকে আছে। মূলত হিন্দি, উর্দু আর স্থানীয় ভাষার সংমিশ্রণে গড়ে উঠেছে খোট্টা ভাষা। চট্টগ্রাম ছাড়াও ভারতের কলকাতায় এই ভাষার লোকজন রয়েছেন বলে জানা যায়।
আনোয়ারা সদর থেকে আট কিলোমিটার দূরে উত্তর বন্দর গ্রাম বা খোট্টাপাড়ার অবস্থান। গ্রামের পশ্চিমে চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানা (সিইউএফএল) আর বঙ্গোপসাগর, উত্তরে মেরিন একাডেমি ও কর্ণফুলী নদী এবং পূর্বে দেয়াঙ পাহাড়। ঘনবসতিপূর্ণ ওই গ্রামে তাঁদের আগমন, ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে এলাকায় নানান তর্কবিতর্ক থাকলেও লোকজন এসব নিয়ে মাথা ঘামান না। তবে ভাষা ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্যের কারণে তাঁদের পরিচয় ‘খোট্টাভাষী’ কিংবা ‘খোট্টা সম্প্রদায়’ হিসেবে।
তাঁদের আদি বাসস্থান ছিল ভারতের বারানসিতে। মোগল শাসনামলে এখানে মগ আর পর্তুগিজ দস্যুদের দমন করতে তাঁদের পাঠানো হয়েছিল। ১৮৫৭ সালে মোগলদের শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফরের পতনের পর ভারতবর্ষ শাসনের জন্য ১৮৬০ সালে ইংরেজরা পেনাল কোড জারি করে। এর ফলে পেশা হারান খোট্টারা। অনেকেই তখন চট্টগ্রামে বসবাস শুরু করেন। এভাবে বন্দর গ্রামে তাঁদের নিবাস গড়ে ওঠে। সে সময় থেকে এখনো তাঁরা নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি ধরে রেখেছেন।
খোট্টা ভাষার উল্লেখ পাওয়া যায় গবেষক জামাল উদ্দিনের ‘দেয়াঙ পরগণার ইতিহাস’ বইয়ে। এর বাইরে মুহাম্মদ তসলিম উদ্দীনের ‘খোট্টা উপভাষা ধ্বনিতত্ত্ব’ ও ‘বাংলাদেশের খোট্টা উপভাষা’ নামে দুটি বই রয়েছে। এই দুজনের মতে, খোট্টা ভাষা কোনো স্বতন্ত্র ভাষা নয়। এটি হিন্দি, ফারসি, উর্দু আর বাংলার সংমিশ্রণে তৈরি একটি উপভাষা। তবে একটি জনগোষ্ঠীর পরিচয় বহন করে বলে এর ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে।
ইতিহাস–গবেষক জামাল উদ্দিন বলেন, খোট্টারা মূলত উত্তর ভারত থেকে এসেছিলেন। তাঁদের ভাষা হিন্দি। আবার মোগলদের রাষ্ট্রীয় ভাষা ছিল ফারসি। এখানে বসবাস করতে গিয়ে তাঁদের ভাষায় মিশ্রণ ঘটে। ফারসি, হিন্দি, উর্দু, বাংলা এবং চট্টগ্রামের ভাষা মিলে একটি উপভাষা তৈরি হয়। এর সঙ্গে উত্তর ভারতের ভাষার তেমন একটা মিল নেই। পরে সেটিই খোট্টা ভাষা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। আর ওই ভাষাভাষী খোট্টা সম্প্রদায় হিসেবে পরিচিত।
খোট্টা ভাষার জন্য তারা আলাদা পরিচিতি লাভ করেছে, তারা বলেন ‘এ ভাষা আমাদের ইতিহাস ও সংস্কৃতি। এ ভাষা নিয়ে আমরা গর্বিত। আমরা আমাদের এ ভাষা ও সংস্কৃতি টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি।’ উত্তর বন্দর গ্রামে রাস্তার পাশে ঝুপড়ি দোকানে সনাতন ধর্মী চা বিক্রেতা। তিনি বলেন, ‘হিন্দু-মুসলমান আলাদা পরিচয় বহন করলেও আমরা খোট্টাভাষী। আর এ নিয়েই বাঁচতে চাই।’ এলাকার বাসিন্দারা বলেন, ‘আমরা বাইরে চাটগাঁইয়া ভাষা ব্যবহার করলেও গ্রামে এসে খোট্টা ভাষায় কথা বলি। আর এ ভাষায় কথা বলতে ভালো লাগে।’

 

খবরটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..
কপিরাইট © ২০২০ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট