মোঃ মনিরুল ইসলাম রিয়াদ
স্টাফ রিপোর্টার
চট্টগ্রামে তরুণদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো এক ব্যতিক্রমধর্মী নির্বাচনী ইস্তেহার আলোচনা সভা— “তারুণ্যের স্বপ্নে: Our Manifesto, Our Future”। ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরাম ও অ্যাক্টিভিস্টা বাংলাদেশ-এর যৌথ উদ্যোগে এবং একশনএইড বাংলাদেশ-এর সহযোগিতায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে একই মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী প্রার্থীরা, যা তরুণ প্রজন্মের মধ্যে গণতান্ত্রিক চেতনা, অংশগ্রহণ ও আশার সঞ্চার ঘটায়।
আলোচনায় অংশ নেন চট্টগ্রাম-৯ ও ৪ আসনের মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপি নেতা আহামেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, চট্টগ্রাম-১০ আসনের প্রার্থী বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী-এর অধ্যাপক শামসুজ্জামান হেলালী, নাগরিক ঐক্য-এর ফয়সাল বিন নাসির, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অশোক সাহা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ও অ্যাক্টিভিস্ট মুনমুন নেসা চৌধুরী, সংসপ্তক-এর নির্বাহী পরিচালক লিটন চৌধুরী, স্বপ্নীল ব্রাইট ফাউন্ডেশন-এর নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আলী শিকদার, ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক)-এর সভাপতি দেলোয়ার মজুমদারসহ সিভিল সোসাইটি, এনজিও প্রতিনিধি ও বিভিন্ন যুব সংগঠনের সদস্যরা।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্রাইট বাংলাদেশ ফোরামের প্রধান নির্বাহী উৎপল বড়ুয়া এবং সঞ্চালনা করেন লোকাল রাইটস প্রোগ্রামের ম্যানেজার রিদুয়ানুল হাকীম রিয়াদ। শুরুতে অতিথিরা “আমাদের চট্টগ্রাম আমরা কেমন দেখতে চাই” শীর্ষক তরুণদের ডেমো প্রজেক্ট পরিদর্শন করেন এবং পরে যুব প্রতিনিধি সাকিবুল হাসান প্রজেক্ট উপস্থাপন করেন।
বক্তারা নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি, সামাজিক ন্যায়বিচার, নারী-পুরুষ সমতা, যুব কর্মসংস্থান, এবং সহনশীল রাজনীতি নিয়ে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন। অধ্যাপক মুনমুন নেসা চৌধুরী বলেন, “নির্বাচিত প্রার্থীরা নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করবেন— এটাই আমাদের প্রত্যাশা।”
বিএনপি নেতা আহামেদুল আলম চৌধুরী রাসেল বলেন, “আমরা জবাবদিহিমূলক রাজনীতিতে বিশ্বাসী, তরুণদের প্রস্তাবিত ইস্তেহারের দাবিগুলো আমাদের নিজস্ব ইস্তেহারেও প্রতিফলিত হবে।”
অধ্যাপক শামসুজ্জামান হেলালী বলেন, “চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য ও ট্রাফিক ব্যবস্থার উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেব। তৃণমূল থেকেই পরিবর্তন আনতে হবে।”
সিপিবি সভাপতি অশোক সাহা বলেন, “যোগ্য নেতৃত্বই পারে দেশের তরুণদের অনিশ্চয়তা দূর করে সম্ভাবনাময় বাংলাদেশ গড়ে তুলতে।”
সমাপনী বক্তব্যে উৎপল বড়ুয়া বলেন, “তরুণদের উপস্থাপিত প্রস্তাবনাগুলো ইতিমধ্যেই মনোনয়নপ্রত্যাশীরা তাঁদের ইস্তেহারে যুক্ত করার আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচিত হয়ে তাঁরা দেশের ও জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন।”
এ আয়োজনে চট্টগ্রামের বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশগ্রহণ তরুণ ও নেতৃত্বের মধ্যে গঠনমূলক সংলাপের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ সেপ্টেম্বর থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় যুব সদস্যরা ফোকাস গ্রুপ ডিসকাশন (FGD) ও কি ইনফরম্যান্ট ইন্টারভিউ (KII) পরিচালনা করেন এবং দুটি ওয়ার্ড লেভেল কনসালটেশনের মাধ্যমে নাগরিক দাবিগুলো চূড়ান্ত করেন। আজকের অনুষ্ঠানে সেই দাবিগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনৈতিক প্রতিনিধিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
Leave a Reply