সুমন চৌধুরী
পুরান ঢাকার স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ (মিটফোর্ড) হাসপাতালের ৩ নম্বর গেট সংলগ্ন এলাকায় প্রকাশ্যে পাথর ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে ব্যবসায়ী মো. সোহাগকে (বয়স ৩৯)। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে। হত্যাকাণ্ডের নৃশংস ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোহাগ হাসপাতাল এলাকা দিয়ে হাঁটার সময় একদল দুর্বৃত্ত তার পথরোধ করে। একপর্যায়ে তাকে ধাওয়া করে ফেলে দিয়ে পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। আশপাশের লোকজন ভিডিও ধারণ করলেও কেউ সাহস করে এগিয়ে আসেনি।
হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে যুবদল নেতা মাহমুদুল হাসান মহিন ও তারেক রহমান রবিন অন্যতম। পুলিশ জানায়, মাহমুদুল হাসানকে পাঁচ দিন ও রবিনকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তলও উদ্ধার হয়েছে।
লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ব্যবসায়িক বিরোধ ও পুর্ব শত্রুতার জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। সোহাগের বড় বোন বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
এ ঘটনায় বিএনপির অঙ্গসংগঠন যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের মোট ছয়জন নেতাকে দলীয় পদ থেকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, “যে বা যারাই এই বর্বর হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকুক, তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি চাই।
ভিডিও ফুটেজে হত্যার বর্বর দৃশ্য প্রকাশ্যে আসার পর দেশজুড়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই এ ঘটনাকে ‘মধ্যযুগীয় বর্বরতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিচার দাবিতে সরব সাধারণ মানুষ।
তদন্ত ও পরবর্তী পদক্ষেপ পুলিশ ও র্যাব যৌথভাবে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। তদন্ত কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে যেসব পরিকল্পনাকারী রয়েছে, তাদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply