আনোয়ার হোসেন , বাঘাইছড়ি প্রতিনিধি:
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়িতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নাবী (সা.) উপলক্ষে বটতলী দরবার শরীফের উদ্যোগে জশনে জুলুছে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টায় বটতলী দরবার শরীফ প্রাঙ্গণ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বের হয়ে বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ শেষে চৌমুহনী মুক্তমঞ্চে জমায়েত হয় এবং উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকেও মিছিল এসে এতে যোগ দেয়।
চৌমুহনী মুক্তমঞ্চে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বটতলী দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন শাহজাদা সৈয়দ মোঃ আব্দুন নূর। অনুষ্ঠান উদ্বোধন ও সঞ্চালনা করেন শাহজাদা আব্দুল বারী, সুপার, সিঙ্গীনালা দাখিল মাদ্রাসা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মাওলানা আবু হানিফ নঈমী, সভাপতি, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত, বাঘাইছড়ি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আবুল কালাম আজাদ, সাধারণ সম্পাদক, আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত; উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল আলম; পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ রহমতুল্লাহ খাজা; ইঞ্জিনিয়ার মোঃ সরোয়ার; গাউছিয়া কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুর শুক্কুর মিয়া এবং বিভিন্ন এলাকার আগত ওলামায়ে কেরাম।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, ১২ই রবিউল আউয়াল বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর জন্য এক মহিমান্বিত দিন। কারণ এ দিনেই বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সা.) পৃথিবীতে আগমন করেন এবং একই দিনে ইন্তেকালও করেন। ফলে দিনটি আনন্দ ও শোক—দুই অনুভূতির সমন্বয়ে স্মরণীয় হয়ে আছে। তাঁরা আরো বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আগমনের পূর্বে আরব সমাজ ছিল অরাজকতা, নৈতিক অবক্ষয় ও অন্ধকারে নিমজ্জিত। নারী ছিল অবমানিত, এতিম ছিল অবহেলিত, সমাজজীবন ছিল বিশৃঙ্খল। এমন সময় আল্লাহ তাআলা মানবতার মুক্তির দূত হিসেবে তাঁকে পাঠান। তিনি তাওহীদের আলো প্রদর্শন করে মানুষকে ন্যায়, ভ্রাতৃত্ব, দয়া, মানবিকতা ও সত্যের পথে পরিচালিত করেন।
বক্তারা বলেন, ১২ই রবিউল আউয়াল শুধু উৎসবের দিন নয়; বরং নবীর শিক্ষা অনুসরণের অঙ্গীকারের দিন। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জীবন মানবজাতির জন্য সর্বোত্তম আদর্শ। আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, মানুষের প্রতি দয়া, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও সত্যের পথে অবিচল থাকা তাঁর মিশনের মূল শিক্ষা।
তাঁরা আরো উল্লেখ করেন, বাংলাদেশসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্বে এ দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালিত হয়। সরকারি ছুটির পাশাপাশি মসজিদ, মাদ্রাসা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে মিলাদ মাহফিল, দোয়া অনুষ্ঠান ও সীরাতুন্নবী (সা.) মাহফিলের আয়োজন করা হয়। সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগেও নেয়া হয় বিশেষ কর্মসূচি।
বক্তারা আহ্বান জানান, বাহ্যিক আয়োজনে সীমাবদ্ধ না থেকে নবীর শিক্ষা ও আদর্শকে জীবনে বাস্তবায়নের মাধ্যমেই ১২ই রবিউল আউয়ালের প্রকৃত তাৎপর্য রক্ষা করা সম্ভব।
শেষে বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে বটতলী মোহাম্মাদীয়া হেফজখানায় আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে কর্মসূচি সমাপ্ত হয়।
Leave a Reply