
মোঃ মনিরুল ইসলাম রিয়াদ
স্টাফ রিপোর্টার
খাগড়াছড়ির পানছড়িতে তিন ভারতীয় নাগরিককে আটক করেছে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা। বুধবার ১০ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পানছড়ি উপজেলার মোহাম্মদপুর গ্রাম থেকে তাদের আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা নিজেদের ভারতীয় নাগরিক বলে স্বীকার করেন।
পানছড়ি থানার উপপরিদর্শক সেন্ট মিয়া বাদী হয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে আধার কার্ড, মোবাইল ফোন এবং নগদ অর্থ জব্দ করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আটক তিনজন ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গোমতি জেলার নতুন বাজার থানার গ্রুইনাং পাড়া এলাকার বাসিন্দা। তারা হলেন দইচন্দ্র রিয়াং এর ছেলে জেমস কুমার রিয়াং বয়স ৩৩, জেষ্ট মহন রিয়াং এর ছেলে তরসেন রিয়াং বয়স ৩০ এবং লাল মান জুয়ালার ছেলে লাল থাকমা রিয়াং বয়স ৩২।
গত শনিবার ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের ধলাই জেলার রইশ্যাবাড়ি থানার চপলিং ছড়ার চোরাপথ ব্যবহার করে তারা খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলার রুপসেন পাড়া দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। তিনজন দীর্ঘ কয়েকদিন ওই এলাকায় অবস্থান করেন। পরে গতকাল তারা পানছড়ি সীমান্ত দিয়ে ভারত ফেরার চেষ্টা করছিলেন। এসময় সীমান্ত এলাকায় স্থাপিত যৌথবাহিনীর চেকপোস্ট দেখে তারা পালানোর চেষ্টা করে। যৌথবাহিনীর সদস্যরা তৎক্ষণাত ধাওয়া দিয়ে তিনজনকেই আটক করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে আটক ব্যক্তিরা বিনা পাসপোর্টে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সত্যতা স্বীকার করেন। তারা কী উদ্দেশ্যে দেশে প্রবেশ করেছিলেন তা জানতে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
পানছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস ওয়াহিদ জানান, আটক তিনজনের বিরুদ্ধে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল হাজতে প্রেরণের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় টহল জোরদার করা হয়েছে এবং অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধে যৌথবাহিনী সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই চোরাপথ ব্যবহার করে সীমান্ত অতিক্রমের ঘটনা ঘটে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে কঠোর নজরদারির কারণে এসব ঘটনার সংখ্যা কমে এসেছে। তবুও চোরাপথের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ না হওয়ায় নিরাপত্তা ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকার মানুষের মাঝে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
অবৈধ অনুপ্রবেশের এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করছে সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি অব্যাহত রাখা কতটা প্রয়োজন। স্থানীয় প্রশাসন বলছে, সীমান্তের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতে তারা নিয়মিতভাবে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করবে।
Leave a Reply