মোঃ আলাউদ্দীন,সীতাকুন্ড চট্টগ্রামঃ
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। উপজেলার প্রায় ঘরে ঘরেই এখন এ ধরনের রোগী। তাঁদের মধ্যে জ্বর নিয়ে ভীতি থাকলেও করোনা পরীক্ষায় তেমন আগ্রহ নেই। এদিকে উপজেলায় বেশ কয়েক দিন ধরে দিনে প্রচণ্ড গরম ও রাতে ঠান্ডা পড়ছে। তাপমাত্রার এ তারতম্যের কারণেই সর্দি-জ্বর বেড়ে গেছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। তবে করোনা মহামারির এই সময়ে যে কারণেই সর্দি-কাশি-জ্বর দেখা দিক না কেন, অবহেলা না করে সাবধানতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
প্রায় এক বছর পর আবারও সীতাকুন্ডের প্রায় প্রতি ঘরেই এ জ্বর দেখা দিয়েছে। পরিবারে একজন জ্বরে আক্রান্ত হলে ধীরে ধীরে অন্য সদস্যদেরও আক্রান্ত হতে দেখা যাচ্ছে। তবে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন, এবারের জ্বরে অন্যবারের তুলনায় ভিন্ন লক্ষণ দেখা দিয়েছে। অন্যান্য সময় জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি ছিল। এবার সেসব লক্ষণের পাশাপাশি আক্রান্তদের শরীর ম্যাজম্যাজের সঙ্গে ব্যথাও অনুভব করছেন। একবার শুরু হলে দীর্ঘসময় ধরে জ্বর থাকছে। অধিকাংশই ছয় দিনের আগে সুস্থ হচ্ছেন না। আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাও। অনেকের তাপমাত্রা কম দেখালেও দ্রত অক্সিজেন লেভেল নিচে নামছে। আক্রান্তদের সিংহভাগই পল্লী চিকিৎসকদের কাছে চিকিৎসা নিলেও করোনা পরীক্ষা করাতে আগ্রহী নন। তাই কতজন করোনায় আর কতজন মৌসুমি জ্বরে আক্রান্ত তা নিশ্চিত বলতে পারছে না উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট, নাকের ঘ্রাণ নষ্ট, স্বাদ না পেলে কিংবা ডায়রিয়া হলে প্রাথমিকভাবে তাদের করোনা সংক্রমিত বলে ধরে নেওয়া হয়। ফলে দেরি না করে প্রথমদিনই তাদের অ্যান্টিজেন টেস্ট করতে হবে। অ্যান্টিজেন টেস্টে নেগেটিভ আসলেও আরটিপিসিআর ল্যাবে পরীক্ষা করাতে হয়। এ লক্ষণের বাইরে রোগীদের তৃতীয় দিন থেকে করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। তবে শরীরে ব্যথা থাকলে ডেঙ্গুও হতে পারে। যে জ্বরই হোক না কেন, প্রথমেই রোগীকে আইসোলেশনে চলে যেতে হবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন উপজেলার বেশির ভাগ বাড়িতেই কেউ না কেউ জ্বর-কাশিতে আক্রান্ত। তাঁদের বেশির ভাগই বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে উপসর্গের কথা বলে ওষুধ কিনে সেবন করছেন। এভাবে ইতিমধ্যে অনেকে সুস্থ হয়েও উঠছেন। আবার কেউ কেউ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে গিয়েও চিকিৎসা নিচ্ছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, উপজেলায় সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপক বেড়েছে। বহির্বিভাগে প্রতিদিন রোগী আসছেন। এসব রোগীর মধ্যে প্রায় অর্ধেকই সর্দি-কাশি-জ্বরে আক্রান্ত। কিন্তু সাধারণ ওষুধে তিন থেকে চার দিনে তাঁরা সুস্থ হয়ে উঠছেন। বেড়েছে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রফিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকসাস ডিজিজের করোনা ইউনিটের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মামুনুর রশীদ বলেন, এখন জ্বর হলেই আইসোলেশনে চলে যেতে হবে। অক্সিজেন লেভেল কমতে থাকলে অবশ্যই হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে।
Leave a Reply