ইসমাইল ইমন, চট্টগ্রাম মহানগর প্রতিনিধিঃ
বন্দরনগরী চট্টগ্রামের দক্ষিণ কাট্টলীর ১১ নং ওয়ার্ড এলাকায় ফুফু শাশুড়ি কর্তৃক নিজের আপন প্রবাসী ভাইপোর স্ত্রীর উপর হামলা করে মারাত্মক জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
ঘটনার বিবরণ আহত ভিকটিম অঞ্জলি দাস, স্বামী কুয়েত প্রবাসী সন্জয় দাশ ও তাহার বড় বোন বিথী দাসের বক্তব্যে সুত্রে জানা যায় গত ২০শে জুলাই রাত আনুমানিক নয়টার সময় ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্ব অঞ্জলি দাসের সাথে শাশুড়ির পারিবারিক বিষয় নিয়ে সকাল বেলার কথা কাটাকাটির জের ধরে পুনরায় তর্কাতর্কি হলে এই সময় ঘরে অবস্থানকারী ফুফু শাশুড়ি পিরুদাশ(জোৎস্না) ও বড় জা মামনি দাশ মারমুখী হয়ে অঞ্জলী দাশের দিকে তেড়ে আসলে তিনি দ্রুত নিরাপত্তার খাতিরে নিজরুমে প্রবেশ করে দরজা বন্ধ করে দেন। এবং বিষয়টি ফোন কলের মাধ্যমে তাহার বড় বোন বিথী দাস কে অবহিত করেন, বড় বোন বিথী দাস ছোট বোন অন্তঃসত্ত্বা অঞ্জলি দাসের কান্না জড়িত কন্ঠ শুনে আতংকিত হয়ে বিষয়টি অন্জলী দাসের স্বামীকে কুয়েতে ফোন করে জানান এবং এগারো বছর ধরে তার বোনের উপর নির্যাতনের কোন সূরাহা না করায় বর্তমানে পুনরায় নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। এই বিষয়ে অঞ্জলি দাসের স্বামী পরিবারের সাথে কথাবলে দেখবেন বলে ফোন কেটে দেন।বিথী দাশ পরবর্তীতে বোন ও বোনের পেটের ৮ মাসের বাচ্চার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে স্থানীয় পাহাড়তলী থানা কে বিষয়টি অবহিত করেন। এ সময় পাহাড়তলী থানার ডিউটি অফিসার এস আই রাশেদ সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে বৌ-শ্বাশুড়ীকে যার যার সন্মান নিয়ে শান্ত থাকতে বলেন এবং ফুফু শ্বাশুড়িকে ওদের পারিবারিক বিষয়ে নাক গলাতে নিষেধ করেন।
পুলিশ ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরপরই অঞ্জলি দাসের শ্বাশুড়ি ঘরের বাহিরে এসে বাড়িতে পুলিশ আনার কারণে ছেলের বৌকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকেন। এক পর্যায়ে ফুফু শ্বাশুড়ি ও বড় জা তেড়ে এসে অঞ্জলি দাস কে এলোপাতাড়ি কিল ঘুসি মেরে মাটিতে ফেলে দে এবং ফুফু শ্বাশুড়ি ধারালো বটি দিয়ে অঞ্জলী দাশের মাথায় আঘাত করলে সে রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়ে অজ্ঞান হয়ে যায়,এই সময় আহত ভিকটিমের বড় বোন বিথী দাস পুনরায় পুলিশকে বিষয়টি জানালে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আহত ভিকটিমকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। এবং ভিকটিম সুস্থ হয়ে ওঠার পর মামলার বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
এদিকে গুরুতর আহত অন্তঃসত্ত্বা অঞ্জলি দাস চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন এই সংবাদ জানতে পেরে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা (আসক) ফাউন্ডেশনের চট্রগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিথিলা চৌধুরী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে আহত রোগীর খোঁজ খবর নেন এবং সার্বিক আইনী সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দেন।
চিকিৎসাধীন অঞ্জলি দাসের শারীরিক অবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে কর্তব্যরত ডাক্তার মাইনুদ্দিন জাহেদ জানান মাথায় ইনজুরি হয়েছে, সেলাই দেয়া হয়েছে, যেহেতু ভিকটিম অন্তঃসত্ত্বা শারীরিক চেক আপ রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত কিছু বলা যাচ্ছে না।
হামলার বিষয়ে জানার জন্য ভিকটিমের ফুফু শ্বাশুড়ির সাথে সাংবাদিক পরিচয়ে কথা বলতে চায়লে তিনি উত্তেজিত হয়ে ফোন কেটে দেন।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভিকটিম পেটের ৮ মাসের বাচ্চার কথা চিন্তা করে বারবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। এই বিষয়ে পাহাড়তলী থানার এসআই রাশেদ এর সাথে কথা বললে তিনি জানান বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষ কে শান্ত থাকতে বলা হয়েছিল, আমরা ঘটনাস্থল ত্যাগ করার পরপরই এই অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে, ভিকটিম সুস্থ হয়ে থানায় আসলে মামলার বিষয়ে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Leave a Reply