মোঃ আলাউদ্দীন,সীতাকুণ্ড চট্টগ্রামঃ
৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে গত ২৩ জুলাই মধ্যরাত থেকে সাগরে ইলিশ আহরণ শুরু করেছেন জেলেরা। তবে এখন পর্যন্ত হতাশ তারা। জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে জাটকা, বড় সাইজের ইলিশ খুব কম। যে কারণে ইলিশের প্রকৃত মূল্য পাচ্ছেন না তারা।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, অক্টোবর মাস ইলিশ প্রজননের ভরা মৌসুম। এ সময় ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখে সরকার। এ ছাড়া সারা বছরই ইলিশ কম-বেশি ডিম ছাড়ে। তবে ইলিশ বড় হওয়ার মৌসুমের কারণে সরকার ১ নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত জাটকা ধরা নিষিদ্ধ করেছে। এ ছাড়াও বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধির স্বার্থে প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সব ধরনের নৌযানে সব প্রকারের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকে। এরপরই শুরু হয় সাগরে মৎস্য আহরণ। অথচ এ বছর নির্দিষ্ট মেয়াদ শেষে সাগরে মৎস্য আহরণ করতে গেলে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে জাটকা ইলিশ। এতে হতাশ ব্যবসায়ী ও জেলে।
লতিফপুরের আড়তদার রাইসুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু জেলেদের জালে মিলছে না বড় ইলিশ। ধরা পড়ছে ছোট সাইজের ইলিশ, বিশেষ করে ৩শ থেকে ৩৫০ গ্রামের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত জেলেদের জালে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ জাটকা ধরা পড়ে। তা ছাড়া এবার ছোট সাইজের ইলিশ মিলছে বেশি।
এ প্রসঙ্গে সামুদ্রিক মৎস্য দফতর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন বলেন, অন্যান্য বছর এ সময়ে ইলিশের সাইজ তুলনামূলক বড় ছিল। এবার আহরণের শুরুতে ছোট ইলিশ মিলছে। তবে এ মুহূর্তে সমস্যা বলা যাবে না এটি। আরও কয়েকদিন দেখতে হবে। এরপর প্রকৃত তথ্য জানা যাবে। ইলিশ নিয়ে এখনও ব্যাপক গবেষণা চলছে। বর্তমান প্রজননকাল যথার্থ কিনা সেটা গবেষণায় আরও দেখতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা কাজ করছে।
অন্যদিকে সোনালি যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বাবুল সরকার জাটকা নিয়ে ভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি বলেন, মৎস্য আহরণ শুরু হলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে জেলেরা গভীর সাগরে যেতে পারছে না। সীতাকুণ্ডের ভাটিয়ারী, কুমিরাসহ বিভিন্ন এলাকার জেলেরা উপকূলীয় এলাকার কাছাকাছি আহরণের কারণে ছোট সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। গভীর সাগরে বড় সাইজের ইলিশের আবাস। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে গভীর সাগরে মাছ আহরণ করতে যাবে জেলেরা। এরপর সাগরে বড় সাইজের ইলিশ ধরা পড়বে।
জেলা মৎস্য অফিসার ফারহানা লাভলী বলেন, সরকার একটা নির্দিষ্ট সময়ে সমুদ্রে সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণার বিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুতরাং বর্তমানে জেলেদের জালে কিছু জাটকা ধরা পড়লেও আশা করি কয়েকদিন পর এ সমস্যা আর থাকবে না।
Leave a Reply